প্রতিবারই চোখের পানি আটকে রাখতে পারি না, হু হু করে কান্না চলে আসে: তাসরিফ খান

বৃদ্ধাশ্রমে তাসরিফ খান
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

তরুণ গায়ক তাসরিফ খানকে প্রায়ই দেখা যায় শিক্ষার্থীসহ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এ জন্য ছুটে যান এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। কখনো অসহায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচের ভার বহন করেন। কখনো সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের রিকশা, ভ্যান, দোকানসহ জীবন নির্বাহের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দেন। এবার এই গায়ক ডিপ ফ্রিজ নিয়ে বৃদ্ধাশ্রমের মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন।

ডিপ ফ্রিজ নিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে তাসরিফ
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

এক দিন আগে তাসরিফ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘কিছুদিন ধরে খুব ইচ্ছা করছে কোনো বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে সময় কাটাতে। ঢাকার আশপাশে কোনো চেনাজানা বৃদ্ধাশ্রমের সন্ধান জানলে আমায় জানান প্লিজ।’ পরে একাধিক ভক্ত তাঁকে বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানা দেন। তখন তাসরিফ মন্তব্যে জানতে চান, এসব বৃদ্ধার জন্য কী নিয়ে গেলে তাঁদের উপকারে লাগবে। নানা রকম উত্তর আসতে থাকে। তবে বেশির ভাগ ভক্তদের কাছ থেকে তাঁকে শুনতে হয়েছে, সামনে ঈদুল আজহা। ঈদের আগে এই মানুষদের জন্য একটি ড্রিপ ফ্রিজ দিলে ভালো হয়। ভক্তদের কথায় গতকাল সেই উপহার নিয়ে নারীদের আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে হাজির তাসরিফ।

বৃদ্ধাশ্রমে তাসরিফ খান
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

তাসরিফ জানান, ঈদুল আজহার সময় অনেকেই বৃদ্ধাশ্রমে গোশত পাঠান। সেগুলো রাখার প্রয়োজনীয় জায়গা থাকে না। তিনি বলেন, ‘সবাই যখন বললেন ডিপ ফ্রিজ উপহার দিলে কাজে লাগে, সেটাই করলাম। আপন নিবাসের সবার সঙ্গে কথা হলো, তাঁরা খুশি।’ এই সময় তাসরিফ আরও বলেন, ‘প্রায়ই বৃদ্ধাশ্রমে আসি। দেখা যায়, মন খারাপ থাকলেই এই মানুষদের সঙ্গে সময় কাটাই। এখানে এসেও মন খারাপ হয়। কিন্তু এর মধ্যে ভালো লাগা রয়েছে। এখানে প্রথমবার এসে দেখি, মা, দাদির বয়সী অনেকেই আছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। কেউ মানসিকভাবে অসুস্থ। কেউ হ্যালুসিনেশনে পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলেন। কয়েকজন মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরীও আছে। তাদের একজন হাতজোড় করে ভাই বলে বারবার বলল থেকে যেতে। এত আপন করে থেকে যেতে বলল যে ফিরে আসার সময়ে আমার চোখের পানি আটকে রাখতে পারলাম না। ফিরতে তো হবে। প্রতিবারই চোখের পানি আটকে রাখতে পারি না, হু হু করে কান্না চলে আসে।’

বৃদ্ধাশ্রমে তাসরিফ খান
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

বিভিন্ন সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে নেতিবাচক কোনো মন্তব্যের শিকার হন কি না, এমন প্রশ্নে এর আগে তাসরিফ প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, ‘১০ লাখ মন্তব্যের মধ্যে ১০টিও নেগেটিভ মন্তব্য দেখিনি। সবচেয়ে বড় কথা, আমার মন ফ্রেশ। যখন যা হচ্ছে, আমি ফেসবুকে শেয়ার করছি। আমাদের সব খরচ বিস্তারিত লেখা আছে। যে কেউ চাইলে সঙ্গে সঙ্গে দেখাতে পারব। সবার সঙ্গে পরিকল্পনা করেই কর্মসূচি নিই। সন্দেহের জায়গাটা রাখি না। আগামী দিনে ইচ্ছা আছে ফাউন্ডেশন করার। অনেকেই এই কথা বলেছেন। কিন্তু এখানে অনেক সময় দিতে হবে, পারব কি না, এটাই ভয়। দেখা যাক।’

বৃদ্ধাশ্রমে তাসরিফ খান
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে