শুরু হলো দুই দিনের জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব

মিলনায়তনের মূল মঞ্চে ১৬২তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসবের মূল পর্ব শুরু হয় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমেসংগৃহীত

‘করিস নে লাজ, করিস নে ভয়/ আপনাকে তুই করে নে জয়’ প্রতিপাদ্যে রাজধানীতে শুরু হলো ৩৪তম জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়।

বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার উদ্যোগে আয়োজনের শুরুতে ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করা হয়। মিলনায়তনের বাইরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অংশ নেন নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা। প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা করেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। এরপর উপস্থিত সবাই রবীন্দ্রসংগীত গাইতে গাইতে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন। সূচনা পর্বে সংস্থার শিল্পীরা পরপর ‘আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার’ ও ‘দারুণ অগ্নিবাণে রে’ গান দুটি পরিবেশন করেন।
মিলনায়তনের মূল মঞ্চে ১৬২তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসবের মূল পর্ব শুরু হয় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযূষ বড়ুয়া এবং সভাপতির বক্তব্য দেন আমিনা আহমেদ।
বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা কলিম শরাফী এবং এর অগ্রজদের স্মরণ করে আমিনা আহমেদ বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের কাছে, আমাদের তরুণদের কাছে যেন বাঙালির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রবীন্দ্রচর্চা ছড়িয়ে দিতে পারি, সে জন্য আমাদের এই প্রয়াস।’

সকালের অধিবেশনে দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেয় বৈতালিক, বিশ্ববীণা, উত্তরায়ণ, সুরের ধারা, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) ও সঙ্গীত ভবন। তাদের পরিবেশনায় উঠে আসে সম্প্রীতি, প্রকৃতি, কল্যাণ ও আত্মশুদ্ধির বাণী। দলীয় পরিবেশনার শুরুতেই বৈতালিক দুটি গান পরিবেশন করেন। এই সংগঠনের শিল্পীরা পরপর গাইলেন ‘আকাশভরা সূর্য-তারা’ ও ‘বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহারো’। এরপর মঞ্চে আসেন বিশ্ববীণার শিল্পীরা। তাঁরাও পরিবেশন করেন দুটি গান। প্রথমটি ছিল ‘মধ্য বিজন বাতায়নে’ এবং দ্বিতীয় গানটি ছিল ‘ফিরে চল মাটির টানে’। এরপর উত্তরায়ণের শিল্পীরা গাইলেন ‘আনন্দেরই সাগর হতে এসেছে আজ বান’। ছিল আরও বেশ কয়েকটি দলীয় পরিবেশনা। এ ছাড়া একক গান পরিবেশন করেন বীথি বিশ্বাস, শ্রেয়া সাহা ও তাসনিতা মাহবুব। এ পর্ব উপস্থাপনা করেন সীমা সরকার।

প্রথম দিনের প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তি হয় দুপুর ১২টার দিকে। এরপর কয়েক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে বিকেল পাঁচটায়। এতে প্রধান অতিথি থাকার কথা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে। উদ্বোধন শেষে প্রদান করা হবে গুণীজন সম্মাননা। এ বছর সম্মাননা দেওয়া হবে গিটারশিল্পী এনামুল কবীর ও রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী লিলি ইসলামকে। এতে সভাপতিত্ব করবেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেবেন সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযূষ বড়ুয়া।

প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা করেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ
সংগৃহীত

সম্মাননা পর্ব শেষে সন্ধ্যা ছয়টায় রয়েছে আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠান। এই পর্বে গান শোনাবেন রফিকুল আলম, এনামুল কবীর, লিলি ইসলাম, মল্লিকা বাগচি, রমা বাড়ৈ, মমিতা মমি, স্বাতী সরকার, রিফাত জামাল, অনুশ্রী ভট্টাচার্য, তনুশ্রী ভট্টাচার্য, আঁখি হালদার, মৃদুল চক্রবর্তী, জয়ন্ত আচার্য, পারভেজ বাঁধন, শাকিল হাশমি, তমাল চক্রবর্তী, জাফর আহমেদ, সত্যম দেবনাথ, মুস্তাফিজুর রহমান, কেশব জিপসি, দেবাশীষ চৌধুরী, মহুয়া মঞ্জুরী সুনন্দা, মোকসেদুল ইসলাম, ফেরদৌসার রহমানসহ আরও অনেকে।

কাল শনিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হবে বিকেল পাঁচটায়। এদিনের পরিবেশনায় থাকছে আবৃত্তি ও সংগীত। অনুষ্ঠানের সূচনা হবে পর সংস্থার শিল্পীদের কণ্ঠে পরপর তিনটি গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এদিন একক সংগীত পরিবেশন করবেন আমিনা আহমেদ, রাইয়ান খালিদ স্যান্ড্রা, তনুশ্রী দীপক, কনক খান, শর্বাণী চক্রবর্তী, শর্মীলা চক্রবর্তী, সুস্মিতা মণ্ডল, ছন্দা রায়, সঞ্জীব সূত্রধর, সেঁজুতি বড়ুয়া, রাকিবা খান লুবা, মাহজাবিন রহিম মৈত্রী, সুমা রানী রায়, আহমাদ মায়া আখতারী, সীমা সরকার, মেরি দেবনাথ, মেহেরা মোস্তফা নিপা, তালাত সুলতানা, তানজিনা তমা, শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য, ফারমিন ইসলাম ইমা, গুলজার হোসেন উজ্জ্বল, আজিজুর রহমান তুহিন, সত্য চক্রবর্তী, আবদুর রশিদ, খন্দকার খায়রুজ্জামান কাইয়ুম, খোকন চন্দ্র দাস, নির্ঝর চৌধুরী, বিষ্ণু মণ্ডল, দীপাঞ্জন, এ টি এম জাহাঙ্গীর, অশোক সাহা, শ্রাবণী সাহা, অর্পিতা কুণ্ডু (খুলনা), ফাহমিদা হোসেন, বন্দনা রানী গোমস্তাসহ আরও অনেকে। আবৃত্তি করবেন জয়ন্ত রায়।