আরও চমকপ্রদ কিছু আসবে: হৃদয় খান

হৃদয় খান
ছবি : সংগৃহীত
নিয়মিত নতুন গান প্রকাশ করছেন হৃদয় খান। সম্প্রতি তাঁকে উপস্থাপক হিসেবেও দেখা গেছে। অন্যদের জন্য গান তৈরি করছেন। এসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে বিনোদন।

প্রশ্ন :

নতুন করে আবার উপস্থাপনায় দেখা গেল। কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?

দারুণ। ভক্তরা নানা রকম মন্তব্য করছেন। এর মধ্যে অনেকের অভিযোগ, আমি কেন এত ইংরেজি বলি। আমি তো আসলে আর অন্য সবার মতো উপস্থাপক হতে পারব না। এটা খুব ক্যাজুয়াল একটা অনুষ্ঠান। রেডিওতে যখন করতাম, তখনো এমনটাই করতাম।

আগামী দিনে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি আরও বেশি যোগাযোগ কীভাবে করা যায়, তা–ও ভাবছি। আমি যখন রেডিওতে এই অনুষ্ঠান করতাম, বাসা থেকে যাওয়া–আসা করে সময় মেলাতে পারতাম না। বেশ কষ্ট হতো।

প্রশ্ন :

সামনে কি ভক্তদের অভিযোগ আমলে নেবেন?

এই অনুষ্ঠানের ধরনটাই অন্য রকম। নির্দিষ্ট ফরম্যাট অনুযায়ী করার মতো নয়। আমি সব সময় যেভাবে কথা বলি, সেভাবেই করব—এমনটাই পরিকল্পনা। এমনিতেই আমি ইংরেজি–বাংলা মিলিয়েই কথা বলি। এভাবেই থাকবে। আসলে অন্য উপস্থাপকদের মতো হয়ে ফরমালি অনুষ্ঠান উপস্থাপন করতে পারব না।

প্রশ্ন :

রেডিওতে আগে এই অনুষ্ঠান করেছেন। মাঝে বন্ধ ছিল। এখন এসে কেন মনে করলেন, এই অনুষ্ঠান আবার চালু করা উচিত?

প্রথমে এই অনুষ্ঠান রেডিও টুডেতে করেছিলাম। এরপর এবিসি রেডিওতেও করতাম। ভক্তরাও এই অনুষ্ঠানে দারুণ রেসপন্স করতেন। উপস্থাপনা করে বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছি। আমি যেহেতু একজন সুরকার ও সংগীত পরিচালক, আমার মনে হয়েছে, ভক্ত ও শ্রোতাদের সঙ্গে কানেক্ট করার সুন্দর একটা মাধ্যম। এইচ কে শো করার পর দেখলাম, এর মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে ডিরেক্টলি ইন্টারঅ্যাক্ট করা যায়। অনেক কিছু জানাও যায়। এমনিতে সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক কিছু পোস্ট করা হয়, কিন্তু সেভাবে গানের ফিডব্যাক পাওয়া যায় না। এই শোতে আমি এমন সব মানুষকে আমন্ত্রণ জানাতে পারি—যাঁরা আমার পছন্দের, যাঁদের সঙ্গে আমার কাজ হয়েছে এবং হয়নি, যাঁদের সঙ্গে আড্ডা দিতে আমার মজা লাগবে। আগামী দিনে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি আরও বেশি যোগাযোগ কীভাবে করা যায়, তা–ও ভাবছি। আমি যখন রেডিওতে এই অনুষ্ঠান করতাম, বাসা থেকে যাওয়া–আসা করে সময় মেলাতে পারতাম না। বেশ কষ্ট হতো। ২০১৮ সালে এইচ কে প্রোডাকশন নামে ইউটিউব চালু করি। এরপর ভাবলাম, সময় যেহেতু মেলাতে পারছি না, টেলিভিশন বা রেডিওতে এই অনুষ্ঠান আর করব না। আমার যেহেতু প্ল্যাটফর্ম আছে এবং সবার পছন্দের অনুষ্ঠান, তাই আমার এখান থেকে চালু করলাম। এই চ্যানেল থেকে আরও চমকপ্রদ কিছু আসবে।

প্রশ্ন :

কী?

আমি একটা শর্ট ফিল্ম বানিয়েছিলাম, নাম ‘ট্র্যাপড’। শিগগিরই এটা রিলিজ করব। এইচ কে প্রোডাকশন থেকে নাটক প্রযোজনাও শুরু করেছি। সামনে আমি নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করব।

হৃদয় খান
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

নাটক পরিচালনা করবেন?

হ্যাঁ। আমার ডিরেকশনের শুরুটা শর্ট ফিল্ম দিয়ে। ৩০ মিনিটের এই ফিল্ম শিগগিরই মুক্তি দেব। এই শর্ট ফিল্মে আমার সঙ্গে আছেন মোনালিসা। এই শর্ট ফিল্মের শুটিংয়ের সময় একটা মিউজিক ভিডিওর কাজও করি।

প্রশ্ন :

নির্মাণের প্রতি আগ্রহ কবে থেকে?

একদম ছোটবেলা থেকে ডিরেকশনে আগ্রহ। মিউজিকের পাশাপাশি অ্যানিমেশন, এডিটিং, ফটোগ্রাফি করতাম। মিউজিক করার আগে এসবই আমার শখ ছিল। তবে ডিরেকশনে আগ্রহ জন্মানোর যাবতীয় কৃতিত্ব আমার চাচা রিংকন খানের। তিনি অসাধারণ একজন ডিওপি। ছোটবেলায় তাঁর সঙ্গে আমার সময় বেশি কাটত। তাঁর সঙ্গে থাকতে থাকতে ক্যামেরার পেছনে কাজের ঝোঁকটা আসে। আমার বয়স হয়তো তখন চার–পাঁচ। আর আট–নয় বছর বয়সে ভিডিও মেকিং, এডিটিং, কালার গ্রেডিং, অ্যানিমেশন করতাম। অনেক ডকুমেন্টারিও বানিয়েছে। তখন থেকে নির্মাণের আগ্রহ বাড়ে। গানে যখন এলাম, তখন ছিল অ্যালবামের যুগ। সাত–আট বছর ধরে গানে আবার ভিডিওর প্রচলন বেশি। আমার মিউজিক ভিডিও সব আমি নিজেই বানানো শুরু করি। কারণ, গান তৈরির সময় একটা ভাবনা তো মাথায় আসে। সেই ভাবনা থেকে মিউজিক ভিডিও বানাতাম। মিউজিক ভিডিও বানাতে বানাতে শর্ট ফিল্মের আইডিয়া মাথায় আসে। এরপর ভাবলাম, ফিল্ম বানাব, ড্রামা বানাব। এভাবে আরকি।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, এস এ হক অলিক, মোস্তফা কামাল রাজ, মীর সাব্বিরসহ যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, শুরুতে গল্পটাই দেখেছি। গল্পের সঙ্গে কীভাবে নির্মাণ হচ্ছে—এটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ

প্রশ্ন :

গানের কী হবে তাহলে?

প্রথমত, আমি গানের মানুষ। এটাও ঠিক, শুরু থেকে আমি নিজেকে সিঙ্গার বলতে চাইতাম না। গাওয়া থেকে সংগীত পরিচালনায় বেশি আনন্দ পেতাম। নিজেকে সংগীত পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইতাম। এ কারণে এটা ছিল আমার প্রথম নেশা। এটা থাকবে। গান গাওয়ার ব্যাপারটি যদি বলি, এভাবে বলতে হয়, সংগীত পরিচালনা করতে গিয়ে আমাকে গাইতে হয়েছে। গাইতে গিয়ে যখন মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, তখন কম্পোজিশনের পাশাপাশি গাইতেও ভালো লাগত। গান আমি সব সময় গাইব। ভক্ত–শ্রোতাদের বঞ্চিত কখনোই করব না।

প্রশ্ন :

আবার উপস্থাপনা প্রসঙ্গ। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আপনার ভক্তদের কী জানাতে চান?

তারকাদের নতুন কিছু জানানো। আমি নিজেও অনেক কিছু জানছি। শো তো অনেক হয়। আমি দেখাতে চাই, একটা ক্যাজুয়াল আড্ডা, যা আমরা ঘরেও করতে পারি, সেই আড্ডার মধ্য দিয়ে ভক্তদের যদি নতুন কিছু জানাতে পারি। অনেক শোতে অতিথি হয়ে আমিও গেছি। মনে হয়েছে, ফরমালি বসে অনেক কিছু বলাও যায় না। হাবিব ভাই এই শোতে গানের ডিটেইল যেভাবে বললেন, এসবের অনেক কিছু প্রশ্নও করিনি। আমরা আড্ডা দিয়েছি বলে এসব উঠে আসছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এভাবে গানের গল্প, গানের পেছনের গল্প জানাতে চাই। সবার নতুন কাজ নিয়েও কথা বলতে চাই।

প্রশ্ন :

চলচ্চিত্রে আপনার সর্বশেষ জনপ্রিয় গান ‘লক্ষ্মীসোনা’। এরপর সেভাবে চলচ্চিত্রের গানে আপনাকে পাওয়া যায়নি?

‘যদি একদিন’ সিনেমার পর একটা চলচ্চিত্রে গান গেয়েছি—‘রাতজাগা ফুল’। পরিচালক মীর সাব্বির। আমাকে ভালো ছবির কথা বললে সব সময় করে দিই। কখনো না করিনি। ও রকম সিনেমা এলে আবার করব। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, এস এ হক অলিক, মোস্তফা কামাল রাজ, মীর সাব্বিরসহ যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, শুরুতে গল্পটাই দেখেছি। গল্পের সঙ্গে কীভাবে নির্মাণ হচ্ছে—এটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।