আমার বাংলাটা খুব একটা ইয়ে না...

ঈদে মুক্তি পাওয়া শিহাব শাহীনের ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’-এ অভিনয় ও গান, ‘দাগি’ চলচ্চিত্রে গান দিয়ে আলোচনায় সংগীতশিল্পী জেফার রহমান। গত সোমবার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে ‘বিনোদন’

প্রথম আলো:

‘দাগি’ সিনেমার ‘নিয়ে যাবে কি’ শুনে চারপাশের মানুষ কী বলছেন?

জেফার রহমান: এত দিন মানুষের ধারণা ছিল, আমি শুধু ধুমধাড়াক্কা গান করি, ফান (হালকা) গান করছি। নিজের সুরে ঠান্ডা ধরনের একটা গান করার খুব ইচ্ছা ছিল। শিহাব (শাহীন) ভাই গানটা নিয়েছেন, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। গানটি দাগি মুক্তির পর এসেছে। দর্শকেরা হলে শুনেছেন। বেশির ভাগ মানুষ হল থেকে বেরিয়ে গানটা খুঁজছিলেন। অনেকে বুঝছিলেন না, গানটা কার? কণ্ঠস্বর ও গায়কির স্টাইল আলাদা ধরনের ছিল। কেউ কেউ ইউটিউবের কমেন্ট সেকশনে (মন্তব্যের ঘরে) লিখেছেন, হল থেকে বের হয়ে গানটা এখানে শুনতে এসেছি। এটা আমার কাছে অনেক বিশেষ কিছু মনে হয়েছে। এটা আমার সুর করা প্রিয় গানের মধ্যে একটি।

জেফার রহমান
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে
প্রথম আলো:

গানটির সুরও তো আপনার।

জেফার রহমান: অনেকে জানেন না, আমি সুর করি। বিশেষ করে ‘ঝুমকা’ গানের আমার অংশটুকু আমিই সুর করেছি। আমার গাওয়া ৮০ শতাংশ গানই আমার সুর করা। তবে সুর নিয়ে খুব একটা কথা বলা হয়নি। এখন এটা নিয়ে কথা বলছি। ফলে দর্শকেরা সুরকার হিসেবে আমাকে আবিষ্কার করছেন।

প্রথম আলো:

কেউ কেউ বলেন, সুরকার জেফার পরিচয়টা গায়িকা ও নায়িকা জেফারের আড়ালে পড়ে গেছে...

জেফার রহমান: হ্যাঁ, অনেকটা তা–ই। যখন কোনো ফিমেল পর্দায় গান করেন, তখন মানুষের আইডিয়া হয়ে যায়, ‘মডেল’; খালি কণ্ঠশিল্পী। সেটা তো নয়। আমার নিজের কারণেই হয়তো আড়ালে পড়েছে। আমি জানি না। এখন ঠিক করেছি, বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলব।

প্রথম আলো:

আপনি তো গান লেখেনও...

জেফার রহমান: আমি গান লিখি। তবে কোনো গীতিকারের সঙ্গে সহলেখক হিসেবে থাকি। যেহেতু আমার বাংলাটা খুব একটা ইয়ে না, ফলে অন্য কোনো গীতিকারের সঙ্গে বসতে হয়। তবে আইডিয়াটা (ধারণা) আমার থাকে।

জেফার রহমান।
ছবি: খালেদ সরকার
প্রথম আলো:

আপনি একসময় ইংরেজি গান করতেন, পরে ‘ঝুমকা’ হয়ে ‘নিয়ে যাবে কি’। গায়কির বিবর্তনটা কীভাবে দেখেন?

জেফার রহমান: মিউজিকের বিষয়ে আমি এক্সপেরিমেন্ট (নিরীক্ষা) করতে ভালোবাসি। আমি মাঝেমধ্যে কিছু কিছু জায়গায় বোর (বিরক্ত) হয়ে যাই। সে কারণে গানে ভেরিয়েশন (বৈচিত্র্য) আনি। একটা জিনিস হিট হয়ে গেলে অনেকে ওই ফর্মুলায় থাকতে চায়। কিন্তু আমি কোনো ফর্মুলায় থাকতে চাই না। আমি এক্সপেরিমেন্ট করে দেখতে চাই। আমি নিশ্চিত, অন্যান্য জিনিসও মানুষের ভালো লাগবে।

প্রথম আলো:

আপনার গায়কিতে ওয়েস্টার্ন পপ, আরঅ্যান্ডবি ঘরানার ছায়া আছে। এসবে কীভাবে প্রভাবিত হলেন?

জেফার রহমান: ছোটবেলায় ইংরেজি গান বেশি শোনা হতো। সে কারণেই আমার শুরুটা ইংরেজি গানে। পরে আস্তে আস্তে বাংলা গান করতে থাকি। মূলত বাংলা গানে সাড়া বেশি পাই। দু-তিন বছর ধরে বাংলা গান নিয়ে আরও বেশি এক্সপেরিমেন্ট করা শুরু করি। তার আগে ইংরেজি গান করতাম।

জেফার রহমান
ছবি: খালেদ সরকার
প্রথম আলো:

ইংরেজি গানে আপনার শ্রোতা সীমিত ছিল, বাংলা গানে জনপ্রিয়তা পেলেন। জনপ্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ মনে করেন?

জেফার রহমান: আমি নিজের ইচ্ছায় দীর্ঘদিন ইংরেজি গান করেছি। আমি ওটা পছন্দও করতাম। বাণিজ্যিক গান করব, সেটা তখনো মাথায় ছিল না। তখন ছোটও ছিলাম। কোভিডের ঘরবন্দী সময়ে বাংলা গানের কথা ভেবেছিলাম। তখন মনে হয়েছিল, (বাংলা গানে) আমি কি ভয় পাচ্ছি? চ্যালেঞ্জটা নিই। ২০২১-২২ সালের দিকে বাংলা গান করা শুরু করি।

জেফার রহমান
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে
প্রথম আলো:

‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’-এ অভিনয় ও গান করেছেন। সেখানে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

জেফার রহমান: ঈদে মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২ এসেছে। অভিনয়ের সঙ্গে ‘বৈয়ম পাখি ২.০’-এর ফিমেল ভার্সনে কণ্ঠ দিয়েছি। গানটা ভালো চলছে। শিহাব (শাহীন) ভাইয়ের মতো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ভালো। যখন চিত্রনাট্য আসে, ভাবছিলাম কতটুকু করতে পারব। এখন দর্শকের হাতে চলে গেছে। সামনেও কাজ করছি।

জেফার রহমান
ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে
প্রথম আলো:

সামনে কী আসছে?

জেফার রহমান: সামনে আমার একক গান আসছে। ‘তীর’ শিরোনামে গানটা আমার সুর করা, গাওয়া।

আরও পড়ুন