কোটি দর্শক দেখল মধ্যরাতের আড্ডা

গানবাংলার প্রধান কার্যালয়ে সংগীতশিল্পীদের আড্ডা

চব্বিশ ঘণ্টার গানের চ্যানেল গানবাংলার প্রধান কার্যালয়ে সংগীতশিল্পীদের আড্ডাটা বেশ জমে ওঠে। নিয়মিত চলে নিত্যনতুন গানের রেকর্ডিং। কিংবা শুধুই আড্ডা দিতেই শিল্পীদের অনেকে ছুটে যান সেখানে। ফেসবুকে সেসব আড্ডার সঙ্গী হয়েছেন গানবাংলার দর্শকেরাও। অনানুষ্ঠানিক সেই আড্ডাগুলো গানে গানে জমে উঠলেই শুরু হয় ফেসবুকে লাইভ। গানবাংলার প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসের ফেসবুক পেজ ‘তাপস’ থেকে সেই আড্ডায় যুক্ত হন অনেকেই।

ঘটনাটি ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতের। রাত তখন একটা। ফেসবুক লাইভে আসে ‘গানবাংলা’ ও ‘তাপস’। আড্ডা দিচ্ছিলেন মাইলসের হামিন আহমেদ, শিল্পী মিজান, আরেফিন রুমি, অটমনাল মুন, পারভেজ, অদিত, ঐশী, রেশমি, লুইপা, নাদিয়া ডোরা, দোলা, তাশফি, র‍্যাপার এবিডি ও শামিম হাসান। তাঁদের গান-বাদ্য-আড্ডায় তাল মেলাচ্ছিলেন শ্রোতারাও। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক কোটি দর্শক দেখেছেন এই গানের আসর। বলা চলে, ভাইরাল হয়ে গেছে। মন্তব্য জমা হয়েছে লক্ষাধিক। শেয়ার হয়েছে ২০ হাজারের বেশি। প্রতি ঘণ্টায় সংখ্যাগুলো বড় হচ্ছে।

গানবাংলার আড্ডায় হামিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

গানবাংলার এমন আড্ডায় প্রায় নিয়মিত উপস্থিত থাকেন মাইলস ব্যান্ডের অন্যতম ভোকাল ও গিটারিস্ট হামিন আহমেদ। তিনি বলেন, একত্রে এত তারকা শিল্পী প্রস্তুতিহীন বসে গান গাইছেন, তা বাংলাদেশের দর্শক এভাবে আগে কখনো দেখেননি। তাঁরা তো সব সময় সাজানো অনুষ্ঠান দেখে অভ্যস্ত। এখানে ঘটছে বিরল এক ঘটনা। তাই দর্শকেরাও সাদরে গ্রহণ করেছেন এটি।

গানবাংলার ফেসবুক লাইভের এমন গান-আড্ডার শ্রোতাপ্রীতিকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছেন লেখক ও গবেষক সুমন রহমান। তিনি বলেন, অন্তর্জালে গানের শ্রোতাগোষ্ঠী গানবাংলাকে চিহ্নিত করতে পেরেছে, এটা খুব ভালো একটা লক্ষণ। গান ভাইরাল হওয়া মানে সমাজে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা এখনো পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। গানবাংলা তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একটা বিরাট শ্রোতাগোষ্ঠীকে একত্র রাখতে পারছে, তাতে মিস ইনফরমেশন ভাইরাল হওয়ার সংস্কৃতি কিছুটা হলেও প্রতিহত করা যাবে।

তাঁদের গান-বাদ্য-আড্ডায় তাল মেলাচ্ছিলেন শ্রোতারাও। ছবি: সংগৃহীত

গানবাংলার গান-আড্ডায় নিয়মিতই উপস্থিত থাকেন জনপ্রিয় শিল্পী বালাম। তিনি বলেন, ‘মিউজিশিয়ানদের আড্ডাগুলো অনেক বছর আগে হতো। আমরা কিছুটা পেয়েছি, এই জেনারেশন খুব একটা পায়নি। মিউজিক একসময় স্টুডিওকেন্দ্রিক ছিল। আমাদের বিখ্যাত ব্যান্ডগুলোর কথা যদি বলি—এলআরবি, মাইলস, সোলস, ফিডব্যাকসহ নানা ব্যান্ড দল ধরে বা শিল্পীরা এককভাবে স্টুডিওতে গিয়ে হ্যাংআউট করত। মিউজিক নিয়ে আড্ডা হতো। এসবের মধ্য দিয়ে অনেক আইডিয়া তৈরি হয়। দু-চার কথার পরই এটা-সেটা বেজে ওঠে। কেউ গেয়ে ওঠে। গানবাংলায়ও তেমনটাই হচ্ছে। এটা আসলে আমাদের মনের খোরাক।’

গানবাংলার চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নীর ক্যামেরায় এ আড্ডাগুলো সঞ্চালনা করেন কৌশিক হোসেন তাপস। এ প্রসঙ্গে তাপস বলেন, ‘মানুষ যে ভালো কিছু চায় এবং তা পেলে সাদরে গ্রহণ করে, সেটা আবারও প্রমাণিত হলো। কোনো আয়োজন না করে, কোনো ঘোষণা না দিয়ে হঠাৎ মধ্যরাতে বা দিনের যেকোনো সময় লাইভে আসি আমরা। তাতেই যে পরিমাণ সাড়া মিলছে, আমরা অভিভূত।’ ফারজানা মুন্নী বলেন, ‘কোটি দর্শকের সাড়া আমাদের জন্য ভালো লাগার ঘটনা। এটি আমাদের এবং শিল্পীদের এগিয়ে চলার পথে সাহস জোগাবে। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’