গণসংগীতশিল্পীদের জন্য কাজ করে যেতে চাই

গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর
মহান মে দিবসকে কেন্দ্র করে বিটিভি, চ্যানেল আই ও বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের ফেসবুক লাইভে গান ও কথা নিয়ে হাজির হবেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। দিবসটি ঘিরে নিজের ভাবনা ও প্রত্যাশার কথা জানালেন এই শিল্পী।

প্রশ্ন :

শ্রমজীবী মানুষকে বহু বছর ধরে উদ্বুদ্ধ করে আসছেন আপনারা। তাঁরা কি সাড়া দিয়েছেন?

গণসংগীতের ডাকে এই ভূখণ্ডের মানুষ সব সময়ই সাড়া দিয়েছেন। সেই ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে গণজাগরণ মঞ্চ পর্যন্ত যত আন্দোলন হয়েছে, মানুষ সাড়া দিয়েছেন বলেই সেসব সফল হয়েছে।

প্রশ্ন :

করোনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শ্রমিকেরা। ব্যবসায়ী ও সরকার তাঁদের জন্য যা করেছে, সেটা কি যথেষ্ট মনে করেন?

না। যে যা করেছে, সেটা খুবই সামান্য। শ্রমজীবী মানুষ সব সময়ই বঞ্চিত হন। আমাদের এখানে ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জিনিস নিয়ে হয়েছে, চিকিৎসা নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে। এসব নিয়ে সব সময়ই সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমার মনে হয়, এসব বাদ দিয়ে সবার উচিত মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসা।

ফকির আলমগীর

প্রশ্ন :

গণসংগীতে তরুণ শিল্পী তৈরি হচ্ছে?

আগে যে জোয়ার ছিল, সেটা এখন নেই। ফলে এখন আর আগের মতো শিল্পী তৈরি হচ্ছে না, হলেও খুবই কম। আগে যে পরিবেশ ছিল, সেটা নানা কারণেই নেই এখন। অনেকে নিষ্ক্রিয়, পলায়নপর। যাঁরা করছেন, সংগঠিত নন। আমি মনে করি, তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপসকামিতা, স্বার্থবাদিতা, লেজুড়বৃত্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

প্রশ্ন :

করোনার পর কেমন পৃথিবী প্রত্যাশা করেন?

গেল ২৪ এপ্রিল ছিল রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির অষ্টম বছর। হতাহত ব্যক্তিরা এখনো তাঁদের ন্যায্য পাওনা বুঝে পাননি। এখনো স্বজনদের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদছেন তাঁরা। এখনো সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক শ্রম আইন অমান্য করে শিশুশ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে, নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। করোনার পর নয়, এখন থেকেই এসব বৈষম্যের বিলুপ্তি চাই। বিশ্বায়নের এই সময়কে হতে হবে আরও উদার, শ্রমিকদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমজীবী মানুষদের শোষণ-বঞ্চনা ও নির্যাতন বন্ধ করে তাঁদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় হতে হবে।

ফকির আলমগীর

প্রশ্ন :

মে দিবসে কী কী অনুষ্ঠানে আপনাকে পাওয়া যাবে?

বাংলাদেশ টেলিভিশনে সংকলিত অনুষ্ঠান 'সাম্যের গান' রয়েছে আজ। তা ছাড়া চ্যানেল আইতে থাকবে 'তারকাকথন' দুপুর সাড়ে ১২টায়। এ ছাড়া আজ ও কাল রাত ৯টায় বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের ফেসবুক পেজ থেকে রয়েছে সরাসরি অনুষ্ঠান।

প্রশ্ন :

জীবনে কী পেতে চান, যা পাওয়া হয়নি?

যত দিন বেঁচে আছি, মেহনতি মানুষের সঙ্গে একাত্ম হতে চাই। তাঁদের জন্য কাজ করে যেতে চাই। এ ছাড়া একটা গণসংগীত একাডেমি, গণসংগীত শিল্পীদের জন্য একটা কল্যাণ ট্রাস্ট করতে চাই। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে জনমানুষ ও গণসংগীতশিল্পীদের জন্য কাজ করে যেতে চাই। আর পুরস্কার-সম্মাননা অনেক পেয়েছি। যেগুলো পাইনি, তা নিয়ে আক্ষেপ করতে চাই না।