জন্মদিনে মান্না দের জানা–অজানা কথা

সবার হৃদয়ে এক গভীর বিষাদ ছড়িয়ে অনন্তলোকে চলে গেছেন তিনি। চলে গেছেন তা–ও আট বছর হয়ে গেল। তবু তাঁর স্মৃতি সততই উজ্জ্বল। তিনি আছেন তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে, তাঁর গানের মধ্য দিয়ে। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম সেরা কণ্ঠশিল্পী মান্না দে। তাঁর ১০২তম জন্মদিন আজ। ১৯১৯ সালের আজকের দিনে ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ সংগীতজীবনে নিজে গেয়েছেন, গানে সুর করেছেন, হিন্দি চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেছেন। সংগীতের প্রায় সব ক্ষেত্রেই অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ভারতের বিভিন্ন ভাষায় চার হাজারের মতো গান গেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে বাংলা গানের সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি। ‘কফি হাউস’ তো আছেই; এ ছাড়া ‘সে আমার ছোট বোন’, ‘যদি হিমালয় আল্পসের’, ‘যদি কাগজে...হৃদয়ে লিখো নাম, সে নাম রয়ে যাবে’—এমন অসংখ্য গান প্রেম-বিরহের আবেগে থরথর বাঙালির হৃদয়তন্ত্রীতে বাজবে বহুদিন। জন্মদিনে আজ আবার জেনে নিই শিল্পীর জানা–অজানা কথা—

১ / ১৮
পূর্ণ চন্দ্র দে ও মহামায়া দের চার ছেলে, এক মেয়ে। পূর্ণ চন্দ্র তাঁর তৃতীয় ছেলের নাম রেখেছিলেন প্রবোধ চন্দ্র দে। কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দে তাঁকে ডাকতেন ডাকনাম ধরে, মান্না বলে। সংগীতভুবনে মান্না দে নামেই তিনি খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। কলকাতায় ১৯১৯ সালের ১ মে তাঁর জন্ম।
ছবি: ফেসবুক থেকে
২ / ১৮
গান আর স্কুলের পাট শুরু হয়েছিল তাঁর প্রায় একসঙ্গেই। গানে গানে মাতিয়ে রাখতেন সহপাঠীদের। ত্রিশের দশকে ছাত্রজীবনে আন্তকলেজ সংগীত প্রতিযোগিতায় পরপর তিন বছর তিনটি পৃথক বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
ছবি: ফেসবুক থেকে
৩ / ১৮
তাঁর বড় ভাই প্রণব দে খ্যাতিমান সংগীত পরিচালক ও শিল্পী ছিলেন। দ্বিতীয় ভাই প্রকাশ চন্দ্র দে ছিলেন চিকিৎসক। ছোট ভাই প্রভাষ চন্দ্র দে গানবাজনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে তাঁদের মধ্যে মান্না দে তাঁর অসাধারণ গায়কি আর সুষমামণ্ডিত কণ্ঠসুধায় সুরের আকাশে ধ্রুবতারার মতো দেদীপ্যমান হয়ে ওঠেন
ছবি: ফেসবুক থেকে
৪ / ১৮
চাচা শিল্পী কৃষ্ণ চন্দ্র দে একাধারে ছিলেন তাঁর সংগীতগুরু ও প্রেরণার উৎস। বিখ্যাত কাকার সুবাদে সংগীতজীবনের শুরু থেকেই উপমহাদেশের খ্যাতিমান সংগীতজ্ঞদের সান্নিধ্য এবং তাঁদের কাছে তালিম নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর।
ছবি: ফেসবুক থেকে
৫ / ১৮
চাচা কৃষ্ণ চন্দ্রের সঙ্গে মুম্বাইয়ে যান ১৯৪২ সালে। পরের বছরই ‘তামান্না’ ছবিতে সুরাইয়ার সঙ্গে একটি দ্বৈত গান করার সুযোগ পান। গানটি জনপ্রিয়তা লাভ করে তাঁর এগিয়ে যাওয়ার পথ করে দেয়। এরপর উপমহাদেশের আরেক সংগীত দিকপাল শচীন দেববর্মনের সঙ্গে কাজের সুযোগ পান তিনি।
ছবি: ফেসবুক থেকে
৬ / ১৮
১৯৫০ সালে ‘মশাল’ ছবিতে শচীনকর্তার লেখা ‘ওপার গগন বিশাল’ গানটি এবং ১৯৫২ সালে একই গল্পের বাংলা ও মারাঠি ছবিতে ‘আমার ভুপালী’ গানটি গেয়ে গানের ভুবনে তাঁর আসন পাকাপোক্ত করে নেন। হিন্দি, গুজরাটি, মারাঠি, ভোজপুরি, পাঞ্জাবি, কোঙ্কনি, অসমিয়া ও বাংলা ভাষার গানের পাশাপাশি রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীতেও তিনি তাঁর অনন্য সংগীতপ্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন
ছবি: ফেসবুক থেকে
৭ / ১৮
‘পড়োশানা’ (১৯৬৮) ছবির সেটে মান্না দে আর কিশোর কুমার। এই ছবিতেই তাঁরা গেয়েছিলেন ‘ইয়ে দোস্তি’ আর ‘এক চতুরনারে’র মতো দারুণ জনপ্রিয় গান। ছবি: ফেসবুক
ছবি: ফেসবুক থেকে
৮ / ১৮
কেরালার মেয়ে মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী সুলোচনা কুমারনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত পৌঁছেছিল ১৯৫৩ সালে। তাঁদের দুই মেয়ে সুরমা দে ও সুমিতা দে। অকপটে বলেছেন, জীবনের বড় পাওয়া তাঁর স্ত্রী।
ছবি: ফেসবুক থেকে
৯ / ১৮
স্ত্রীর সঙ্গে মান্না দে
ছবি: ফেসবুক থেকে
১০ / ১৮
মান্না দে ও রুনা লায়লা
ছবি: ফেসবুক থেকে
১১ / ১৮
সংগীতজগতে আসবেন না আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করবেন, এ নিয়েও নাকি দ্বন্দ্ব ছিল মান্না দের মনে। তবে কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র চাইতেন ভাইপো গান করুক। কাকার ইচ্ছাতেই তাঁর গানের জগতে আসা। সে ক্ষেত্রে গায়ক না হলে হয়তো কালো কোর্ট গায়ে চাপিয়ে আদালতে মামলা লড়তে দেখা যেত তাঁকে।
১২ / ১৮
ফিরোজা বেগম ও মান্না দে
ছবি: ফেসবুক থেকে
১৩ / ১৮
সংগীতে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭১ সালে ভারত সরকারের পদ্মশ্রী, ২০০৫ সালে পদ্মভূষণ, ২০০৭ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান। এ ছাড়া ভারতে চারটি জাতীয় পুরস্কার, রবীন্দ্রভারতী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানজনক ডি–লিট, আলাউদ্দিন খাঁ পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন
১৪ / ১৮
শুধু গায়ক নন, দক্ষ সংগীত পরিচালকও ছিলেন মান্না দে।
ছবি: ফেসবুক থেকে
১৫ / ১৮
গান গেয়ে বিখ্যাত হলেও খেলাধুলায়ও দারুণ আগ্রহ ছিল। তরুণ বয়সে কুস্তি, বক্সিংয়ের মতো খেলায় পারদর্শী ছিলেন মান্না দে। তা ছাড়া ফুটবলও খেলতেন তিনি।
ছবি: ফেসবুক থেকে
১৬ / ১৮
মান্না দের আত্মজীবনীর নাম ‘জীবনের জলসাঘরে’। ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয় এই বই। তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্মও। সেই ছবির শুটিংয়েই কলকাতার কফি হাউসে মান্না দে। ২০০৮ সালে মুক্তি পায় এ তথ্যচিত্র।
ছবি: ফেসবুক থেকে
১৭ / ১৮
মান্না দে ছিলেন খুব গোছানো মানুষ। প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগে উনি দু–তিন ঘণ্টা অনুশীলন করতেন। খুঁতখুঁতেও ছিলেন, একটা গান উনি বারবার গাইতেন। কিছুতেই একবারে উনি সন্তুষ্ট হতেন না। যে গান রেকর্ড করবেন, সেই গান আট-নয়বার গাইতেন।
ছবি: ফেসবুক থেকে
১৮ / ১৮
২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর জীবনখাতার পাতায় সব হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে জীবনের জলসাঘর থেকে বিদায় নেন মান্না দে।
ছবি: প্রথম আলো