জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান হলেন শাফিন

শাফিন আহমেদ
ছবি: প্রথম আলো

২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন শাফিন আহমেদ। তিন বছরের মধ্যে এই ব্যান্ড তারকা ও সংগীত পরিচালককে পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। নবম জাতীয় সম্মেলন শেষে তাঁকে এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার সকালে শাফিন আহমেদ নিজেই খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

নতুন দায়িত্ব বিষয়ে শাফিন আহমেদ বলেন, ‘রাজনীতিতে কী পদ পেলাম না পেলাম, সেটা নিয়ে ভাবতে চাই না। আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে পার্টিতে নতুন কিছু সংযোজন করা। নতুন চিন্তাভাবনা, নতুন প্রজন্মের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সংগঠনকে আরও জোরদার করা। জনগণের সঙ্গে, বিশেষ করে তরুণ ও যুবসমাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করব। আমরা সবাই জানি, এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো থেকে তরুণ প্রজন্ম ও যুবসমাজ একটু দূরে থাকে। জোরালোভাবে তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা হয়নি। সেই সুযোগটা রয়েছে। আমার চেষ্টা থাকবে, ওই জায়গা নিয়ে কাজ করার।’

শাফিন আহমেদ
ইনস্টাগ্রাম

শাফিন আহমেদ আরও বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের দেশ গড়ার কাজে সক্রিয় হওয়ার তীব্র ইচ্ছা আছে। কিন্তু ভালো কোনো প্ল্যাটফর্ম তারা পাচ্ছে না। অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে, কিন্তু ভালো প্ল্যাটফর্ম না হলে তো হবে না। আস্থা রাখতে পারে, এমন প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব, জাতীয় পার্টিকে যেন নতুনভাবে চিন্তা করে, নতুন দৃষ্টিতে দেখে।’

তরুণসমাজ কেন জাতীয় পার্টিকে নতুন দৃষ্টিতে দেখবে? এমন প্রশ্নে শাফিন আহমেদ বলেন, ‘সব পার্টিরই একটা অতীত আছে। এ দেশের সব পার্টিরই লম্বা ইতিহাস আছে। তার মানে এই না, জাতীয় পার্টি সময়ের সঙ্গে চলতে পারবে না! এমনটা যেন কেউ চিন্তা না করে। জাতীয় পার্টি সময়ের সঙ্গে চলবে, আধুনিক-সময়োপযোগী রাজনৈতিক দল হিসেবে সামনের দিনগুলোয় আত্মপ্রকাশ করবে।’

তরুণ ও যুবসমাজ কেন জাতীয় পার্টির প্রতি আস্থাশীল হবে? ‘রাজনীতিতে কোনো ম্যাজিক আছে, তা না। রাজনীতি ম্যাজিকের বিষয়ও না। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু একটা করে দেখানো যাবে, সেটা না। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর তরুণ ও যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করার ব্যাপার আছে। আকৃষ্ট করার প্রয়োজন আছে। তাদের বিষয় নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন আছে। তরুণ ও যুবসমাজের জীবনের সঙ্গে জড়িত যে বিষয়গুলো, সেগুলো নিয়ে কোনো দল আদৌ কথা বলছে কি না, এসব দিক চিন্তা করলে সবাই বুঝতে পারবে, কেন তরুণ ও যুবসমাজ রাজনীতি থেকে দূরে সরে থাকে। এই মুহূর্তে বিভিন্ন দেশে অল্প বয়সী বেশ কয়েকজন দেশপ্রধান বা সরকারপ্রধান আছেন। সারা পৃথিবীই এই প্রয়োজন অনুভব করে। সুতরাং সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন আনতে হবে। পরিবর্তনের কথা চিন্তা করতে হবে—সেখানে অনেক সুযোগও রয়েছে। তরুণ ও যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করতে পারলে নতুন ধ্যানধারণা ও ভাবনা পাওয়া যাবে। আমি সেই চেষ্টাই করে যাব। তাই তরুণসমাজ আকৃষ্ট হবে বলে আমি আশা করতেই পারি,’ বলেন শাফিন আহমেদ।

শাফিন আহমেদ
সংগৃহীত

শাফিন আহমেদ জানান, রাজনীতির পাশাপাশি তাঁর গানের কার্যক্রমও চলতে থাকবে। তিনি আরও জানান, আগামী সপ্তাহে তাঁর একটি নতুন গান মুক্তি পাবে, পরের সপ্তাহেও নতুন একটি গান প্রকাশ করতে চান।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে (এনডিএম) যোগ দেন শাফিন আহমেদ। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম উচ্চ পরিষদের (সুপিরিয়র কাউন্সিল) সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন তিনি। পরে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন শাফিন আহমেদ।