দিন শেষে আমি শিল্পী, আইটেম নই : নোবেল

মাঈনুল আহসান নোবেল।ছবি : প্রথম আলো
পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘সারেগামাপা’র জনপ্রিয় প্রতিযোগী ছিলেন বাংলাদেশের মাঈনুল আহসান নোবেল। গত শনিবার ছিল তাঁর জন্মদিন, গতকাল প্রকাশিত হয় সংগীতচিত্রসহ তাঁর নতুন গান ‘অভিনয়’। জন্মদিন, নতুন গান, পুরোনো বিতর্ক নিয়ে কথা বললেন এই তারকা।

প্রশ্ন :

জন্মদিন কীভাবে কাটালেন?

জন্মদিনের প্রথম পর্ব সেলিব্রেট করেছি মাওয়া ঘাটে। বন্ধুদের সঙ্গে লং ড্রাইভে বের হয়েছিলাম। রাত ১২টার পর ঘাটে কেক কেটেছি। ইলিশ উত্সব করেছি। পরে বাসায় ছোট পরিসরে জন্মদিনের আয়োজন ছিল।

নোবেল
ফেসবুক থেকে

প্রশ্ন :

‘অভিনয়’ গানের সংগীতচিত্রের গল্পটা কেমন?

গানের লিরিকটা খুব সুন্দর। একজন ব্যান্ডশিল্পীর সংগ্রামের গল্প উঠে এসেছে এই ভিডিওতে। রাজধানীর একটি সংগীত একাডেমিতে দীর্ঘ সময় ধরে শুটিং হয়েছে গানটির।

প্রশ্ন :

নতুন গানটা ‘তামাশা’ গানের চেয়ে আকর্ষণীয় হবে তাহলে?

এই গান দিয়ে আমি শ্রোতাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব বলে মনে করছি। কারণ, এ গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন পেশাদার গীতিকার, সুরকার, ভিডিও নির্মাতা। এ ছাড়া গানের ভিডিওটি প্রকাশিত হবে সাউন্ডটেকের মতো বড় অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে। উপযুক্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে ‘অভিনয়’ গানের কাজ হয়েছে। সুতরাং ভালো কিছু হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

নোবেল। ছবি :
সংগৃহীত

প্রশ্ন :

যে উন্মাদনা নিয়ে প্রথম সংগীতচিত্র ‘তামাশা’ প্রকাশ করলেন, সেটা থেকে কতটা সাড়া পেলেন?

সত্যি কথা কি, ‘তামাশা’ নিয়ে যতটা উন্মাদনা ছিল, প্রকাশের পর ততটা সাড়া আমি পাইনি। যে রকম প্রত্যাশা নিয়ে গানটি প্রকাশ করেছিলাম, গানটি বোধ হয় শ্রোতাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। গানটি যখন করি, তখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে গানটির ভিডিও নির্মাণে ভালো টিম পছন্দ করতে পারিনি। কারিগরি দিকটাও উন্নত ছিল না। তা ছাড়া করোনার কারণে আমি নিজেও ভালো কোনো স্টুডিওতে গিয়ে গানটি ধারণ করতে পারিনি। ফলে গানটিও আমার কণ্ঠে ততটা শ্রুতিমধুর হয়নি। ফলে সবদিক থেকেই ‘তামাশা’ গানটি শ্রোতাদের সামনে ঠিকমতো তুলে ধরতে পারিনি।

প্রশ্ন :

গানটি প্রকাশের আগে সংগীতাঙ্গনের সম্মানিত ব্যক্তিদের নিয়ে অশোভন কথা বলেছিলেন। সেটিও কি ‘তামাশা’ গানের সাফল্যের অন্যতম বাধা নয়?

সেটা তো অবশ্যই। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। ওই সময় গানটির প্রচার-প্রচারণা করতে গিয়ে আমি সংগীতের উজ্জ্বল কয়েকজন নক্ষত্রকে নিয়ে যেসব মন্তব্য করেছিলাম, সেটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। কারণ, নেতিবাচক কথাবার্তা একজন মানুষকে শেষ পর্যন্ত বেশি দূর নিয়ে যেতে পারে না। এসব স্বল্প সময়ের জন্য আলোচনায় আনতে পারে। কিন্তু দিন শেষে আমি তো শিল্পী, আইটেম নই। মানুষ আমাকে শিল্পী হিসেবে দেখে। সুতরাং আমার উচিত শিল্পীসুলভ আচরণ করা। আমার মনে হয়, ওই সময় আমি কোনো কারণে হয়তো নিজের ভেতরে ছিলাম না।

নোবেল। ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

সাউন্ডটেকের সঙ্গে বছরব্যাপী চুক্তি হয়েছে আপনার। সেটা কী রকম?

সাউন্ডটেকের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতি মাসে আমার দুটি করে গান প্রকাশ করবে তারা, তবে সেটা বাধ্যতামূলক নয়। ভালো গান পাওয়া না গেলে দুই মাসে একটা করে গানও আসতে পারে। এ লক্ষ্যে গীতিকার আহমেদ রিজভী, সুরকার আহমেদ হুমায়ন, নির্মাতা শাহরিয়ার পলক ও আমি দল বেঁধে কাজ শুরু করেছি। ‘অভিনয়’ গানটি এই টিমের কাজ। এই টিম নিয়ে বড় পরিসরে কয়েকটি কাজ করার ইচ্ছা আছে।

প্রশ্ন :

ধীরে ধীরে স্টেজ শো শুরু হচ্ছে। আপনি কি স্টেজ শো করবেন?

এখনো ওইভাবে স্টেজ শো শুরু হয়নি। তবে ইনহাউস দু–একটি শো হওয়ার কথা শুনেছি। শো নিয়ে দু-একজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু এখনো শো করার সিদ্ধান্ত নিইনি। এই দুর্যোগ চলে গেলে হয়তো অনেক শো করা হবে। তাঁর আগে নিজের জন্য কিছু ভালো মৌলিক গান করতে চাই, যেসব গান তৃপ্তি নিয়ে স্টেজেও গাইতে পারি।

প্রশ্ন :

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে ফেসবুকে বিরূপ মন্তব্য করায় আপনার নামে ভারতের এক নাগরিক স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেছিলেন। সেটার খবর কী?

ওই বিষয়ের নতুন কোনো খবর নেই। তবে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে আশা করছি। কলকাতার হাইকমিশনে যোগাযোগ হয়েছে। শিগগিরই বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে। আমার নামে ত্রিপুরায় একটি এজাহার হয়েছে, রাষ্ট্রীয় কোনো মামলা নয়। অনেকে বলেন আমার নামে নাকি ওয়ারেন্ট হয়েছে। ভারতে আমার ভিসাও বন্ধ করা হয়েছে। এ নিয়ে আমি কিন্তু কিছুই জানি না। এজাহার ছাড়া বাকি খবরগুলো ভুয়া।

মাঈনুল আহসান নোবেল।
প্রথম আলো

প্রশ্ন :

ওই ঘটনার পর নাকি ভারতে আপনার জনপ্রিয়তা কমে গেছে?

তা তো কমেছেই। ওই ঘটনার পর ভারতের অনেক শ্রোতা আমার ওপর নাখোশ হয়েছেন। তাঁদের আগের নোবেল হিসেবেই আমি আবার তাঁদের মনে জায়গা করে নিতে চাই। সবকিছু সমাধান করে আমি আবার কলকাতায় যাব। তাঁদের সামনে আবার গাইব। আশা করি, তাঁরা আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।