পাকিস্তানের যে গায়িকার গানে মজেছেন ভারতীয়রাও

শায় গিল
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

রাহাত ফতেহ আলি খান, আতিফ আসলাম, শাফাকাত আমানত আলী থেকে ফাওয়াদ খানরা একটা সময় নিয়মিত প্লেব্যাক করতেন বলিউড ছবিতে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে কয়েক বছর ধরে ভারতে একরকম নিষিদ্ধ তাঁরা। ভারতীয় ছবিতে পাকিস্তানের অভিনয়শিল্পী ও শিল্পীদের বয়কটের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ঝড় উঠেছিল। রাস্তায় নেমেও প্রতিবাদ করেছে অনেক সংগঠন। তবে ওপরে ওপরে বিরুদ্ধ অবস্থান নিলেও বাস্তবতা বলছে ভেতরে-ভেতরে ঠিকই পাকিস্তানি শিল্পীদের গান শুনছেন, দেখছেন ভারতীয়রা। যার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ কোক স্টুডিওর গান ‘পাসুরি’।

চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে মুক্তির পর গানটির ভিউ হয়েছে ১৫ কোটি ৮৩ লাখের বেশি। যার বড় অংশই ভারতীয়! ৩ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের পাঞ্জাবি-উর্দু গানটি গেয়েছেন আলী শেঠি ও গায়িকা শায় গিল। কোক স্টুডিও সিজন–১৪ গানটি নিয়ে অবশ্য মুক্তির পর থেকে ব্যাপক আলোচনা। পাকিস্তান তো বটেই, বিশ্বের অনেক শ্রোতাই গানটির তারিফ করে ইউটিউব ভিডিওর নিচে মন্তব্য করেছেন। হয়েছে গানটির একের পর এক কাভার। তবে গানটির গুণমুগ্ধ শ্রোতাদের তালিকায় যে এত বিপুলসংখ্যক ভারতীয় আছেন, কে জানত! সম্প্রতি ভারতে গানটির এত জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

‘পাসুরি’র এই বিপুল সাড়ায় অবাক জনপ্রিয় ভারতীয় সুরকার শান্তনু মৈত্রও। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, ভারতের কোক স্টুডিওর চেয়ে পাকিস্তানের গানটি যে এত ব্যাপক জনপ্রিয় হবে, সেটা কোক স্টুডিও পাকিস্তানও ভাবেনি। এটা অবিশ্বাস্য।’

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে সরিয়ে রেখে ভারতে অবশ্য সব সময়ই পাকিস্তানের গানের অনেক ভক্ত আছে। গুলাম আলী, আবিদা পারভিনের গান গুনগুন করেন না এমন সমঝদার সংগীতপ্রেমী ভারতীয় কমই আছেন। গানের বাইরে পাকিস্তানের সিরিয়ালও অনেক ভারতীয় দেখেন। পাকিস্তানেও ভারতের সিনেমা জনপ্রিয়। অনেক বলিউড ছবি দেশটিতে রেকর্ড ব্যবসা করেছে।

হালে এত জনপ্রিয়তা পাওয়া এই গানের অন্যতম গীতিকার, সুরকার আলী শেঠি। ২০১০ সাল থেকে কাজ করা এই গায়ক, সুরকার ও গীতিকার অবশ্য আগে থেকেই জনপ্রিয়। তবে ‘পাসুরি’র কল্যাণে অভিষেকেই রীতিমতো ঝড় তুলেছেন শায় গিল। চার মাস আগেই যাঁকে কেউ চিনত না, সেই শায় এখন তরুণদের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী। অনেকেই জনপ্রিয় ব্রিটিশ গায়িকা ডুয়া লিপার সঙ্গে তাঁর তুলনা করছেন।

স্পটিফাইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২৩ বছর বয়সী লাহোরের গায়িকা জানান তাঁর গানের শুরুর গল্প, ‘হোস্টেলের রুমে বান্ধবীর সঙ্গে থাকার সময়ই গানের শুরু। তখন আমরা গান গেয়ে ভিডিও বানাতে শুরু করি। এভাবেই কোক স্টুডিওতে শুরু করি।’

খ্যাতি পাওয়ার পর শায় গিল এখন শাস্ত্রীয় সংগীত শিখতে চান, লিখতে চান গানও। কোন শিল্পীর সঙ্গে গাওয়ার স্বপ্ন দেখেন? তাঁর ঝটপট উত্তর ইয়ং স্টানারস (জনপ্রিয় উর্দু র‍্যাপার ডুয়ো) ও এ আর রাহমান।