ফিরলেন গানের খালামণি

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বাসা থেকে বের হন না বরেণ্য সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান। শুরুর দিকে তো কখনো কখনো ঘরের জানালা খুলতেও ভয় পেতেন তিনি। করোনা সংক্রমণের কারণে পরিবারের পাশাপাশি অন্যদের সুরক্ষার কথা ভেবে সচেতন থাকছেন তিনি। টিকা নেওয়া ও প্রয়োজনীয় কিছু কাজ ছাড়া বাসা থেকে বেরই হতেন না। ঘর থেকে বের হতে না পারার কারণে শারীরিকভাবে ভালো থাকলেও মনটা ভীষণ খারাপ ছিল এই জ্যেষ্ঠ শিল্পীর। অবশেষে দীর্ঘ বিরতির পর ফেরদৌসী রহমান শুটিংয়ে ফিরলেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের এসো গান শিখি অনুষ্ঠানের শুটিংয়ের মধ্য দিয়ে কাজে ফিরলেন ফেরদৌসী রহমান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি সবার কাছে ‘গানের খালামণি’ হিসেবেই পরিচিত। করোনা মহামারির সময় ঘর থেকে বের না হওয়ায় বিনোদন অঙ্গনের কোনো অনুষ্ঠানেও অংশ নেননি। দীর্ঘ সময় পর লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের জগতে ফিরলেন। গত বুধবার এক দিনে এ অনুষ্ঠানের চার পর্বের শুটিং শেষ করেন বলে প্রথম আলোকে জানালেন ফেরদৌসী রহমান।

ফেরদৌসী রহমানের সঙ্গে এ অনুষ্ঠানের শুটিংয়ে ১০-১১টি শিশু অংশ নিয়েছে। তিনি বললেন, ‘টেলিভিশনের জন্ম থেকেই এ অনুষ্ঠান করে আসছি। লম্বা সময় ধরে কাজটি করতে না পারায় খারাপ লেগেছে। এত দিন পর আবার শুটিং শুরু করতে পেরে মনে হয়েছে, নিজের জায়গায় ফিরে এসেছি।’
গত বুধবার এসো গান শিখি অনুষ্ঠানের চারটি পর্বের শুটিং সেরেছেন ফেরদৌসী রহমান। বেলা ১১টায় শুটিং শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টার দিকে। মাঝখানে বিরতি ছিল। ফেরদৌসী রহমান বললেন, ‘বাচ্চাদের সঙ্গে যে সময়টা থাকতে পারি, সেটা খুবই এনজয় করি। স্বাভাবিক সময়ে এমনিতে ১৫-১৬ জন বাচ্চা শুটিংয়ে থাকে। তবে এবার ১০-১১ জন ছিল। বুধবারের আগেও এক দিন শুটিং করেছিলাম।’

ফেরদৌসী রহমান
ছবি : প্রথম আলো

শিশুতোষ অনুষ্ঠান ‘এসো গান শিখি’ ৫৬ বছর আগে প্রচার শুরু হয়। করোনার সময় নতুন কোনো অনুষ্ঠানের শুটিং করতে না পারায় পুরোনো অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়েছে বলে জানালেন ফেরদৌসী রহমান। এসো গান শিখি অনুষ্ঠানের সঙ্গে এ দেশের কয়েকটি প্রজন্মের শৈশবস্মৃতি জড়িয়ে আছে। পাপেট মিঠু-মন্টি, গানের খালামণি—কত কি-ই না এ অনুষ্ঠান থেকে পেয়েছেন দর্শকেরা।

এসো গান শিখির যাত্রা নিয়ে ফেরদৌসী রহমান বলেন, ‘১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর আমার গাওয়া গানের মধ্য দিয়েই শুরু হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনের পথচলা। আর ২৭ ডিসেম্বর “গান শেখার আসর” নামে শুরু হয় এখনকার অনুষ্ঠানটি। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় অনুষ্ঠানটির নাম। এখনো যখন দেশে-বিদেশে যেকোনো অনুষ্ঠানে যাই, দেখা যায় কোলে সন্তান নিয়ে অনেকেই ছুটে এসে আমাকে বলছে, খালামণি জানেন, আমি আপনার ছাত্র বা ছাত্রী ছিলাম।’