বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চান রূপঙ্কর

রূপঙ্কর বাগচি। ছবি-দেবাশিস রায়।
রূপঙ্কর বাগচি। ছবি-দেবাশিস রায়।

‘আমি তো চাই, বাংলাদেশ আমাকে নাগরিকত্ব দিয়ে দিক!’ লিখতে পারি এ কথাটা? ‘লিখুন না! সত্যি বলছি, বাংলাদেশ নাগরিকত্ব দিলে খুশি হব!’

বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে এসব কথা বললেন ভারতের জাতীয় পুরস্কার জয়ী সংগীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচি। উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় একান্তে কথা হচ্ছিল প্রথম আলোর সঙ্গে। এসেছিলেন ঋষিকেশ সাহা মেধাবৃত্তি উৎসবে। শ্যামসুন্দর কোং অ্যান্ড জুয়েলার্সের আয়োজনে অনুষ্ঠানের ফাঁকে একান্তে কথা হলো বাংলা গানের নানা বিষয় নিয়ে। ছোটবেলায় রেডিও শুনতে শুনতেই গান শেখা, বড় হয়ে চর্চা। এরপর ‘জাতিস্মর’ সিনেমার প্লেব্যাক এনে দিল জাতীয় পুরস্কার। বর্তমানে খ্যাতির শিরোনামে রূপঙ্কর। শুধু ইন্ডিয়াই নয়, বাংলাদেশেও তাঁর গানের হাজারো শ্রোতা।

কথা প্রসঙ্গে বাংলা গান নিয়ে ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রূপঙ্করের হতাশাই উঠে আসছিল। বলছিলেন, ‘শুধু ফিল্মি গান নিয়ে কোনো ভাষা বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না! অথচ বাংলা গান আজ পশ্চিমবঙ্গে ফিল্মনির্ভর হয়ে উঠেছে!’ তাঁর কথায় আগেকার শিল্পীরা, যেমন মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় বা মহম্মদ রফিরা ফিল্মি গানের চেয়ে বরং বেশি জনপ্রিয় ছিলেন আধুনিক গানের জন্য। কিন্তু এখন উল্টো ছবি!

‘তাহলে বাংলাদেশে যান?’ জবাব এল, ‘ওঁরা গাইতে দেবেন কেন? এখানকার শিল্পীরা তো চান না আমরা যাই! তাহলে ওঁদের অসুবিধা হবে। ওঁরাই তো আন্দোলন করেন, আমরা যাতে না যাই! তাই তো চাইছি ওঁদের নাগরিকত্ব!’ একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের সংগীতচর্চার ভূয়সী প্রশংসা করেন। রূপঙ্করের মতে, ‘বাংলাদেশের সংগীতচর্চা মোটেই ফিল্মনির্ভর নয়। পদ্মা-মেঘনা পারের মানুষের সুরবোধ অতি উচ্চমানের। তাঁরা ভালো গানের কদর বোঝেন।’

বাংলাদেশেও তাঁর গানের বেশ কদর আছে। এ কথা স্মরণ করিয়ে দিলে রূপঙ্করের দাবি, ভারতে নামডাক করেই তাঁর বাংলাদেশের জনপ্রিয়তা। সেই সঙ্গে খেদ, ‘কই, তেমন তো ডাকটাক পাই না! পাবনায় একবার, আর ঢাকায় দু-চারবার প্রোগ্রাম করেছি। এই যা!’ ভারতের জনপ্রিয় শিল্পী বললেন, ‘ভারতে টাকা বা প্রতিষ্ঠা কামাতে হলে হিন্দি গান গাইতে হবে। হিন্দি সিনেমার গান...!’ একই সঙ্গে ডাক দিলেন, নকল ওয়েবসাইট আর নকল সিডির বাজার ধ্বংস করারও।

শেষে নিজেই জানালেন, আদতে তিনি সিলেটের। পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ছিল বাংলাদেশেরই সিলেটে।