জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পটভূমিতে নির্মিত মিউজিক্যাল ফিল্ম ‘বাবা’ পুরস্কার পেয়েছে। ভারত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২০–এ এটি সেরা মিউজিক্যাল ফিল্ম নির্বাচিত হয়েছে বলে জানালেন পরিচালক রেমন্ড সালোমন। ছবির গানে কণ্ঠ দিয়েছেন নাফিসা শামা।
অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ম রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন স্কুল থেকে পরিচালনা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন রেমন্ড। তাঁর পরিচালনায় নির্মিত ছবিটি ভারত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হওয়ায় তিনি ভীষণ উচ্ছ্বসিত। সিডনি থেকে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশের শিল্পীরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করবেন। দেড় দশক ধরে দেশের শিল্পীদের সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনাও করেছি। এরপর নিজে পরিচালনার ওপর পড়াশোনা করি। অভিবাসন আইন পেশা ও শিক্ষার পাশাপাশি পরিচালনার ওপরে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়েছি। এখন আমি আমার পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের অসাধারণ সব গল্প ও ইতিহাস পৃথিবীকে জানাতে চাই। শুরুতেই বেছে নিয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। আমার মনে হয় পাশ্চাত্যের মার্কেটে আমাদের দেশের গল্পের চাহিদা আছে। দরকার উন্নত মানের নির্মাণশৈলী।’
গত বছরের আগস্টে ৬ মিনিট ২ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের মিউজিক্যাল ফিল্ম ‘বাবা’ ইউটিউবে মুক্তি দেওয়া হয়। রেমন্ড জানান, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ৬০টির বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে গীতিচিত্র ‘বাবা’ জমা দেওয়া হয়। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত ১০টি সম্মাননা অর্জন করেছেন তিনি। তাঁর আশাবাদ, সামনে হয়তো আরও কিছু পুরস্কার ঝুলিতে ভরতে পারবেন তিনি।
মিউজিক্যাল ফিল্ম বাবা তৈরিতে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আবুল হাসনাত মিল্টন। বাংলাদেশে বেড়ে ওঠা রেমন্ড ১৮ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। একসময় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে বৈমানিক হিসেবে কাজ করতেন। সেখান থেকে বেরিয়ে ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়া চলে যান।
বাবা তৈরির পেছনের গল্প জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের অন্য একটি মানবিক দিক আছে। ১৫ আগস্টে নিহতদের বেঁচে যাওয়া সন্তানদের স্বজন হারানো বেদনার গল্প। তাঁদের বেদনা অনুধাবন করার ক্ষমতা কারোরই নেই, থাকার কথাও না। আমার গল্পের মূল চরিত্রের দুজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা। প্রায়ই আমার মনে প্রশ্ন জাগত, এমন নিষ্ঠুরভাবে স্বজনদের হারিয়ে তাঁরা কীভাবে বেঁচে আছেন? একজন বাবার অনুপস্থিতিতে শোকার্ত কন্যার বেড়ে ওঠার বেদনাদায়ক গল্প তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গীতিচিত্রে।’