যাত্রাপুরে চিরনিদ্রায় জানে আলম

জানে আলমছবি: ফেসবুক

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের যাত্রাপুরে জন্মে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছিলেন জানে আলম। তাঁর কণ্ঠে ‘একটি গন্ধমের লাগিয়া, আল্লায় বানাইল দুনিয়া’ গানটি সারা পৃথিবীর বাঙালির কাছে পরিচিত। আজ বুধবার বাদ আসর যাত্রাপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় এই শিল্পীকে।
শিল্পী জানে আলম একাধারে ছিলেন গীতিকার, সুরকার, সংগীত প্রযোজক ও কনসার্ট আয়োজক। ২ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১০টায় রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে করোনা নেগেটিভ হলেও নিউমোনিয়াসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।

জানে আলম
ছবি: ফেসবুক থেকে

ফেরদৌস ওয়াহিদ, ফিরোজ সাঁই, আজম খান, জানে আলম ও ফকির আলমগীর—এ পাঁচ শিল্পীকে ধরে নেওয়া হয় বাংলা পপ গানের স্রষ্টা ও প্রচারক হিসেবে। ফিরোজ সাঁই ও আজম খানের পর চলে গেলেন জানে আলমও। তাঁর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে ফকির আলমগীর বলেন, ‘জানে আলম মঞ্চ জমিয়ে সংগীত পরিবেশন করতেন।

সম্প্রতি উত্তর আমেরিকা সফর করে সেখানকার ভক্ত-শ্রোতাদের মাতিয়ে এসেছিলেন। তিনি অনেক শিল্পীকে সহযোগিতা করতেন। আমার সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আমার পারিবারিক সব অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করতেন। সদালাপী জানে আলম ভক্ত-শ্রোতার হৃদয়ে অনেক দিন বেঁচে থাকবেন।’

আরেক পপশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘চলে গেছে বলে বলছি না। জানে আলম সবার থেকে আলাদা। আমরা কেবল গান করে টাকা আয় করেছি। তিনি বাংলা গানকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আমি গান করা ছেড়ে দিয়েছি, আমার এখন আর বলতে দ্বিধা নেই যে, তিনি অবমূল্যায়িত হয়েছেন।’
শিল্পী জানে আলমের দীর্ঘদিনের বন্ধু শিল্পী, গীতিকবি, সংগীত পরিচালক হাসান মতিউর রহমান জানান, পারিবারিক কবরখানায় তাঁকে দাফন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি মানিকগঞ্জের গাড়িতে তাঁদের সবাইকে তুলে দিয়েছি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেখানে যেতে পারিনি। তাঁর মতো ভদ্র ও অমায়িক মানুষ আমি জীবনে দেখিনি।’

জানে আলম
ছবি: ফেসবুক থেকে

জানে আলম ‘স্কুল খুইলাছে রে মাওলা’, ‘দয়াল বাবা কেবলা কাবা’, ‘বাবা ভান্ডারি লাইন ছাড়া চলে না রেলগাড়ি’র মতো গানগুলো বাংলাদেশসহ বিশ্বের আনাচকানাচে ছড়িয়ে দিয়েছেন। জানে আলম দুই ছেলে সজল, সফল ও অসংখ্য ভক্ত-গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন।