যে কারণে নিজে লিখে নিজেই গেয়েছেন হিরো আলম

হিরো আলমসংগৃহীত

গান গাইলেন হিরো আলম। এ তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকা সবারই জানা। আমরা জানতে চেয়েছিলাম, কেমন সাড়া পেলেন তিনি। মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম, তিনি বলবেন, ‘অভাবনীয় সাড়া পাচ্ছি।’ কিন্তু আমাদের ধারণা ভুল প্রমাণ করে তিনি জানালেন, ‘নেগেটিভ সারা বেশি পাচ্ছি।’ হিরো আলমের ইউটিউব চ্যানেলে গিয়ে নতুন সেই গানের ডিজলাইক দেখে সেটা বোঝা গেল। লাইকের তুলনায় তিন গুণ ডিজলাইক পেয়েছেন তিনি। এবারে আলম জানালেন, কাদের ওপর ক্ষোভ থেকে এই গান করেছেন তিনি।

এবার গানও গাইলেন আলম
ছবি : সংগৃহীত

কেন গান গাইতে হবে তাঁকে? হিরো আলম জানালেন, কয়েকজন শিল্পীর ওপর ক্ষোভ থেকেই তিনি গানটি গেয়েছেন। গানের কথা লিখেছেন তিনি নিজে, সুর করেছেন আরেকজন। আর এ-ও জানালেন, শিগগির আসছে তাঁর গাওয়া আরও দুটি গান। গান গাওয়ার ইচ্ছে হলো কেন? আলম বললেন, ‘দেশের অনেক অভিনয়শিল্পী গান করেছেন। তাঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি।’ তবে গান করার ইচ্ছে তাঁর আগেও ছিল। এই সময়টাকেই গান করা ও প্রকাশ করার উপযুক্ত বলে মনে হয়েছে তাঁর। হিরো আলম বলেন, ‘আমাদের চঞ্চল (চঞ্চল চৌধুরী), শাওন (মেহের আফরোজ শাওন), ফারিয়া (নুসরাত ফারিয়া) পারলে আমি কেন পারব না। তারা অভিনয় করে গান করেছে, আমিও চেষ্টা করলাম। চেষ্টা করলে দোষ কী? তাদের দেখেই আমিও বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় গান করলাম। দেখলাম শখের বসে গান করতে কেমন লাগে।’

হিরো আলম
ছবি : সংগৃহীত

নেতিবাচক আলোচনার মধ্য দিয়েই ফেসবুকে আলোচিত হয়েছেন হিরো আলম। তবে তিনি মনে করেন, যেকোনো বিষয়ের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই রকম প্রতিক্রিয়া থাকবে। এখন আর নেতিবাচক কোনো মন্তব্যকে তিনি ভয় পান না। আলম বলেন, ‘আমি যখন হিরো হতে চাইলাম, তখন একশ্রেণির মানুষের সহ্য হলো না। যখন আমি নির্বাচন করি, তখনো অনেকের সহ্য হয়নি। আবার হলে যখন ছবি মুক্তি দিলাম, তখনো অনেকে পেছনে লাগল। ক্যারে ভাই, আমি হিরো আলম কী করিছি। গান করলাম, তাও মানুষের সহ্য হচ্ছে না। আমার কিছু ভাইরাল হলেই মানুষ আমার পিছে ল্যাগে যায়।’

শুরুতে হিরো আলম চেয়েছিলেন প্রতিষ্ঠিত কোনো শিল্পীর গান কাভার করবেন। এ জন্য যোগাযোগ করেছিলেন বেশ কয়েকজন গায়ক-গায়িকার সঙ্গে। কিন্তু সবাই তাঁকে হতাশ করেছেন। শুনিয়েছেন নানা কটু কথা। পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নিজেই গান লিখবেন। তিনি বেছে নেন ‘বাবু খাইছো’ শিরোনামকে। বাজারে এই শিরোনামে আলোচিত আরেকটি গান থাকলেও তিনি সেই শিরোনামকে কাজে লাগিয়েই আবার গান লিখলেন। তিনি বলেন, ‘দেশের অনেক গায়কের কাছে গান করার জন্য একটা গান চাইছিলাম। তারা আমাকে সরাসরি “না” করে দিছে। তারা অনেকেই বলেছে, আমাকে দিয়ে গান করালে কেমন দেখায়। কেউ আমার সঙ্গে কাজ করতে চায় না। তাদের কথায় কষ্ট পেলাম। তখন আমার মনে ক্ষোভ হলো। ভাবলাম নিজেই গান লিখে গাইব।’

নেতিবাচক মন্তব্যকে ভয় করেন না আলম
ছবি : ফেসবুক থেকে

তবে নিজের প্রথম গান নিয়ে সন্তুষ্ট হিরো আলম। কে কী বলছে, সেসবে মাথা ঘামাচ্ছেন না তিনি। ইতিবাচক বা নেতিবাচক, যে যা-ই বলুক, তিনি যে সাড়া পেয়েছেন, এতেই তিনি খুশি। তিন গুণ ডিজলাইক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকের গান ভালো লাগেনি। অনেকেই তাঁকে পছন্দ করেন না। সেই হিসেবে গানে ডিজলাইক দিয়েছেন। অনেক গায়ক আছেন, তাঁরা মনে করছেন এত দিন ধরে তাঁরা গানের জগতে এসে কিছুই করতে পারলেন না। আর আমি হিরো আলম একটা গান করেই ভাইরাল হয়ে গেলাম। আমাকে নিচে নামানোর চিন্তা করেই অনেকে ডিজলাইক দিয়েছেন। অনেকেই আবার গান না শুনে হুজুগে ডিজলাইক দিছে।’

নিজের প্রথম গান নিয়ে সন্তুষ্ট হিরো আলম
ছবি : সংগৃহীত

কাদের কাছে গান চেয়েছিলেন, আর কারাই বা সংগীত অঙ্গনে এসে কিছু করতে পারেনি? জানতে চাইলে কারও নাম বলেননি আলম। তবে জানিয়েছেন নিজের প্রিয় শিল্পীদের নাম। হিরো আলমের প্রিয় সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা, এন্ড্রু কিশোর, খালিদ হাসান মিলু। এই শিল্পীদের গান তাঁকে খুব টানে। এ ছাড়া রোমান্টিক মেলডি গান তাঁর ভালো লাগে। তিনি মনে করেন, তাঁর কোনো কিছুই কেউ ভালোভাবে নেয় না। মানুষের বঞ্চনা সহ্য করে তিনি আজ হিরো আলম হয়েছেন। যে যা-ই বলুক, তিনি গান থামাবেন না। বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় আরও দুটি গান করবেন তিনি। তারপর প্রকাশ করবেন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে। আর ১৬ ডিসেম্বর ভক্তদের তিনি একটি দেশের গান উপহার দেবেন।