শারদীয় উৎসবে নতুন সব গান

হৈমন্তী রক্ষিত, পুলক, রুবাইয়াত জাহান, চম্পা বণিককোলাজ

শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হতে বেশি দিন বাকি নেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এ উৎসব ঘিরে সংগীত পরিচালকেরা তৈরি করেছেন বেশ কয়েকটি নতুন গান। তৈরি করেছেন সংগীতচিত্র। সেসব গানের কণ্ঠশিল্পীরা জানালেন, উৎসবকে আরও রঙিন করতেই এ প্রয়াস।

‘আঁধার নেমে আসা এ জগতে’ শিরোনামে যৌথ কণ্ঠে নতুন একটি গান করেছেন আটজন শিল্পী। এ গানের সংগীত পরিচালনা করেছেন ফিডব্যাকের শিল্পী ফোয়াদ নাসের বাবু। তাঁর সংগীত পরিচালনায় বহু গান নির্মিত হলেও পূজার গান আগে করা হয়নি। এবার সেটা করতে পেরে আনন্দিত এই শিল্পী। তাঁর অন্যান্য সৃষ্টির মতো এই গানও শ্রোতাদের হৃদয়ে জায়গা করে নেবে বলে বিশ্বাস গানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব শিল্পীর।

হৈমন্তী রক্ষিত দাশ। ছবি: ফেসবুক থেকে

‘আঁধার নেমে আসা এ জগতে’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন অলক কুমার সেন, চম্পা বণিক, সন্দীপন দাস, হৈমন্তী রক্ষিত দাস, দেবলীনা সুর, অপূর্ব অপু, অবন্তী দেব সিঁথি ও মন্টি সিনহা। ফোয়াদ নাসের বাবু বলেন, ‘চলচ্চিত্রে কাজ করার সময় প্রায়ই কীর্তন আঙ্গিকের গানে সুর ও সংগীতায়োজন করতে হয়েছে। তবে পূজার গান এই প্রথম করা। শিল্পীদের সহযোগিতার কারণে কাজটি করা সম্ভব হয়েছে। গানটির কথাও আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।’ গানটির অন্যতম শিল্পী হৈমন্তী রক্ষিত বলেন, কিছু কাজ থাকে, যেগুলো করে একটা তৃপ্তি পাওয়া যায়। এই গান সে রকম একটি কাজ। বাংলাদেশ টেলিভিশনের পূজার বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য গানটি তৈরি করা হয়েছে।

‘মা এল’ শিরোনামে একটি নতুন গান করেছেন সুফি ঘরানার শিল্পী পুলক অধিকারী। এটিও তাঁর গাওয়া প্রথম পূজার গান। শিগগিরই সংগীতচিত্রসহ তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হবে গানটি। রমনা কালী মন্দিরে সংগীতচিত্রটির দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। পুলক বলেন, ‘অনেক ধরনের গানই গাওয়া হয়, কিন্তু এ ধরনের গানে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে। বড় একটা উৎসবের জন্য গাইতে পারার আনন্দ বলে বোঝানো যাবে না। গানটির কথাও ভীষণভাবে মনে ধরেছে। আমার মনে হয়, গানটি একবার শোনার পর শ্রোতারা আপনমনে গাইবেন এটি।’

পুলক। ছবি: সংগৃহীত

পূজার গান গেয়েছেন শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী সমরজিৎ রায়। ‘আমার মা’ শিরোনামের এ গানের সংগীতচিত্র নির্মিত হয়েছে পূজামণ্ডপে। তিনি জানান, উৎসব নিয়ে ভিন্নধর্মী ও সর্বজনীন কিছু করার চেষ্টা থেকেই এই গান। নিজের কথা-সুর ও সংগীতায়োজনে গাওয়া গানের সংগীতচিত্রে মডেল হিসেবে দেখা যাবে শিল্পীর মা-বাবাকে। সমরজিৎ বলেন, ‘দুর্গাপূজা উপলক্ষে গানটি তৈরি হলেও মূলত গেয়েছি পৃথিবীর সব মাকে উদ্দেশ করে। আমার কাছে আসলে মা-ই সবকিছু। অনেক দিনের ইচ্ছা, মায়ের জন্য একটি গান রেকর্ড করার। অবশেষে ইচ্ছাটা পূরণ হচ্ছে এই উৎসবে।’

চম্পা বণিক
সংগৃহীত

পূজার আনন্দ বাড়িয়ে দিতে বিশ্বরঙের কর্ণধার ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা নির্মাণ করেছেন ‘পুজো বাড়ির গান’। সংগীতচিত্রে দেখা যাবে পূজার বাড়ির আনন্দ-উল্লাস, পরিবারের সব বয়সীদের মধ্যকার ধর্মীয় আবেগ ও স্রষ্টার আরাধনার নানা রূপ। বিপ্লব সাহা জানান, ৬ অক্টোবর ধুমধাম করে সংগীতচিত্রের শুটিং করা হয়। এটি দেখা যাবে ইউটিউবে। গানটির গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী বিপ্লব সাহা সংগীতচিত্রটির পরিচালনাও করেছেন।

লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশি কণ্ঠশিল্পী রুবাইয়াত জাহান গেয়েছেন পূজার গান। ‘এসেছে দুর্গা মা’ শিরোনামে গানটি লিখেছেন তিনি নিজেই। গানের সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন রাজা কাশেফ। রুবাইয়াত জাহান বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমরা হিন্দু-মুসলিম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বড় হয়েছি। আমি নিজে মুসলমান হলেও সব ধর্মকে সব সময় সম্মান করতে শিখেছি, করে এসেছি। আমার ছোটবেলার এক বন্ধু কলকাতায় থাকে। তাঁকে পূজায় চমকে দিতে প্রথমবার নিজে গান লিখলাম এবং গাইলাম।’

শারদীয় এ উৎসবের সবগুলো গানই ইউটিউবে দেখে নেওয়া যাবে।