শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে কবীর সুমন, দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেন

কবীর সুমন
ফেসবুক

কবীর সুমন গুরুতর অসুস্থ। তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি এই সংগীতশিল্পীর জ্বর ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও রয়েছে। এ কারণে আজ সোমবার ভোরে কলকাতার এসএসকেএম (শেঠ সুখলাল কারনানি মেমোরিয়াল) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাঁর কোভিড পরীক্ষাও করা হয়েছে, তবে ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি।

কবীর সুমন
সংগৃহীত

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান সৌমিত্র ঘোষের অধীনে কবীর সুমনের চিকিৎসা চলছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভর্তির সময় সুমনের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ছিল ৯০, যা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ কম। যে কারণে তাঁকে কৃত্রিম অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। অন্যান্য ওষুধও চলছে, চলছে স্যালাইনও।

এ ছাড়া সুমনের বুকের এক্স-রে, স্ক্যান ও রক্ত পরীক্ষা করা হবে বলেও জানা গেছে। তাঁর উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকদের একটা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। খুব শিগগির চিকিৎসকেরা জানাবেন, পরবর্তী পদক্ষেপ কী।

কবীর সুমন। ছবি: ফেসবুক

আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত কলকাতার স্থানীয় সব সংবাদমাধ্যম সূত্র জানিয়েছে, শিল্পীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন—এমন মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই কবীর সুমনের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। দুই বাংলার নানা অঙ্গনের তারকা, লেখক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে অনেকেই কবীর সুমনের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।
১৯৯২ সালে ‘তোমাকে চাই’ নামের একটি গানের অ্যালবাম করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবীর সুমন। জীবনমুখী বাংলা গানের প্রবর্তক হিসেবে তাঁকেই গ্রহণ করে বাঙালি। গ্রহণ করেছে দুই বাংলার শ্রোতারা। সেই থেকে অব্যাহত তাঁর সংগীতের চলার পথ। একসময় স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হন নিজের মতো করে। নন্দীগ্রাম আর সিঙ্গুর আন্দোলনে দাঁড়িয়েছিলেন মমতার পাশে।

তারপর যাদবপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হন। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় পরে তৃণমূল ছাড়েন।

কবীর সুমন। ছবি: ফেসবুক

কবীর সুমনের পূর্বনাম সুমন চট্টোপাধ্যায়। ধর্মান্তরিত হয়ে কবীর সুমন নাম ধারণ করেন।

পিট সিগার ও কবীর সুমন: সেবার কলকাতায়

জন্ম ভারতের ওডিশা রাজ্যে, ১৯৪৯ সালের ১৬ মার্চ। এখন তাঁর বয়স ৭২ বছর। গত বছর ২৩ অক্টোবর ফেসবুকে নিজের ইচ্ছাপত্র বা উইল প্রকাশ করে লিখেছেন, তাঁর মৃত্যুর পর যেন তাঁর সমস্ত সৃষ্টি ট্রাকে করে নিয়ে ধ্বংস করে দেয় কলকাতা পৌরসভা।

তাঁর মৃতদেহ যেন দান করে দেওয়া হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাজে। নিজের নামের প্যাডে নিজের হাতে লেখা এই ইচ্ছাপত্র কবীর সুমন ফেসবুকে আপলোড করেন।

কবীর সুমন নিজের ইচ্ছাপত্র প্রকাশ করে লিখেছেন, তাঁর মৃত্যুর পর যেন তাঁর সমস্ত সৃষ্টি ট্রাকে করে নিয়ে ধ্বংস করে দেয় কলকাতা পৌরসভা
কোলাজ

‘সকলের অবগতির জন্য’ শিরোনামে লেখা এই ইচ্ছাপত্রে তিনি লেখেন, ‘আমার মৃত্যুর পর কোনো স্মরণসভা, শোকসভা, প্রার্থনাসভা যেন না হয়। আমার সমস্ত পাণ্ডুলিপি, গান, রচনা, স্বরলিপি, রেকর্ডিং, হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইভ, লেখার খাতা, প্রিন্ট আউট যেন কলকাতার পুরসভার গাড়ি ডেকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, সেগুলো ধ্বংস করার জন্য।’
সূত্র: আনন্দবাজার, হিন্দুস্থান টাইমস