স্মরণে জন লেনন

জন লেনন
জন লেনন

‘ইমাজিন দেয়ার ইজ নো হেভেন’ গানটি যিনি শুনেছেন, তিনিই মজে গেছেন জন লেননে। বারবার শুনেছেন এই অসাধারণ গানটি। যাঁরা আগে থেকেই রাখতেন লেননের খোঁজখবর, তাঁরা তো গত শতাব্দীর ষাটের দশকে ফিরে গিয়ে খুঁজে ফেরেন ‘বিটলস’কে। ছোকরা-চতুষ্টয় নামে লন্ডন নগরীর চার তরুণ কী ভীষণভাবেই না কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন সংগীতের রাজ্য!
বিশ শতকের ষাটের দশক ছিল যুগান্তকারী সময়। চারদিক থেকে এ সময় উঠেছিল পরিবর্তনের ঢেউ। আমাদের দেশে যেমন, তেমনি পশ্চিমেও। ‘দ্য বিটলস’ ব্যান্ড এবং ‘ফোর ফ্যাভস’ নামে খ্যাতিমান চারজনের একজন ছিলেন জন লেনন, যিনি হয়ে ওঠেন কিংবদন্তি। আজ ৮ ডিসেম্বর, তাঁর ৩৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী।
বিটলসের পল ম্যাকার্টনি ও জন লেননের লেখা অনেক গান সে সময়ে ছিল জনপ্রিয়তার শিখরে। ‘ইন মাই লাইফ, হেল্প!’ , ‘ইউ’ভ গট টু হাইড ইউর লাভ অ্যাওয়ে’, ‘নরওয়েজিয়ান উড’, ‘টুমরো নেভার নোজ’, ‘আই অ্যাম দ্য ওয়ালরুস’, ‘স্ট্রবেরি ফিল্ডস ফরেভার’, ‘হ্যাপিনেস ইজ আ ওয়ার্ম গান’, ‘কাম টুগেদার’-এর মতো একের পর এক গান সে সময় তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে এই দলের মূল গায়ক জন লেননের গায়কি মানুষের মন জয় করে নেয়। একই সঙ্গে দলের অন্য দুই তরুণ জর্জ হ্যারিসন ও রিঙ্গো স্টারও সাড়া ফেলে দেন গানের জগতে।
কিন্তু ষাটের দশক রাজত্ব করার পরেই বিটলস ভেঙে যায় ১৯৭০ সালে। ১৯৭১ সালে অবশ্য আর একবার তাঁরা একত্র হতে পারতেন, সেও আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে। অনেকেরই নিশ্চয় মনে পড়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মানুষের সাহায্যার্থে আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এ জর্জ হ্যারিসন ও রিঙ্গো স্টার অংশ নেন। হ্যারিসন তো রবি শঙ্করের সঙ্গে ছিলেন এই আয়োজনের মূল উদ্যোক্তাদের একজন। জন লেননেরও আসার কথা ছিল, শেষ মুহূর্তে আসা হয়নি তাঁর।
বিটলস ভেঙে যাওয়ার পর লেনন সংগীতের পাশাপাশি সামাজিক কাজেও অংশ নিতে শুরু করেন। নিজের একক সংগীতজীবনে একে একে উপহার দেন ‘ইনস্ট্যান্ট কর্মা!’ , ‘মাদার’, ‘গিভ পিস আ চান্স’, ‘মাইন্ড গেমস’, ‘হ্যাপি ক্রিস্টমাস’, ‘জেলাস গাই’-এর মতো গান। আর ১৯৭১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ইমাজিন’ গানটির কথা তো আগেই বলা হয়েছে।
কী থাকত লেননের এ সময়ের গানে? ভেদাভেদহীন মানবসমাজের স্বপ্নের কথা বলতেন তিনি। ভিয়েতনাম যুদ্ধের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। মার্কিন সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এত খারাপ হয়েছিল যে, তাঁকে আমেরিকা ছাড়তে বলা হয়। পরে অবশ্য লেনন গ্রিন কার্ড পান।
১৯৮০ সালের ৮ ডিসেম্বর তাঁর এক দারুণ ভক্ত মার্ক ডেভিড চ্যাপম্যানের গুলিতে মারা যান জন লেনন।