ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণা, অভিনেত্রী নুসরাতের কাছে আরও নথি চেয়েছে ইডি

নুসরাত জাহানইনস্টাগ্রাম থেকে

ফ্ল্যাট দুর্নীতি–কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য নুসরাত জাহানের। ১২ সেপ্টেম্বর ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল। সেদিন কলকাতার ইডি দপ্তরে হাজিরও হন নুসরত। ইডির গোয়েন্দারা তাঁকে একটানা ৬ ঘণ্টা জেরা করেন। সে সময় নুসরাত জাহান ফ্ল্যাট বেচাকেনার দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে যেসব নথি ইডির হাতে তুলে দেন, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি গোয়েন্দারা। তাই অভিনেত্রীর কাছে আরও নথি চেয়েছে ইডি। গতকাল বুধবার ইডি নুসরত জাহানকে আরও কিছু নথি জমা দেওয়ার নোটিশ দিয়েছে।

ইডি বলেছে, কীভাবে তিনি তাঁর নিজের সংস্থার পরিচালকের পদে থেকে ঋণ পেয়েছিলেন, সে–সংক্রান্ত নথি ইডিকে দেখাতে হবে। এ ছাড়া আরও কিছু নথি চেয়েছে ইডি। তবে এ কথাও বলা হয়েছে, এই নথি দেওয়ার জন্য সশরীর তাঁকে আসতে হবে না। যদিও এ নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো মন্তব্য করেননি নুসরাত।

আরও পড়ুন

ভারতের লোকসভার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট কেন্দ্রের তৃণমূল সংসদ সদস্য নুসরাত জাহান। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে ২৪ কোটি রুপির ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, তার গড়া একটি সংস্থার মাধ্যমে কলকাতার নিউ টাউনে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের আবাসন বা ফ্ল্যাট তৈরি করার প্রকল্পের ২৪ কোটি রুপির প্রতারণা করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সংসদ সদস্য ও অভিনেত্রী নুসরাত জাহান
ইনস্টাগ্রাম থেকে

সেই অভিযোগের তদন্ত করছে ইডি। যদিও বিজেপি এ ঘটনার পর দাবি তুলেছে, অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে নুসরাতকে গ্রেপ্তার করা হোক। তাঁর সংসদ সদস্য পদও বাতিল চেয়েছে বিজেপি।

নুসরাত জাহান ছিলেন কলকাতা মেসার্স সেভেন সেনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি সংস্থার পরিচালক। এ সংস্থার তিনজন পরিচালকের মধ্যে তিনি অন্যতম। নুসরাতের খ্যাতি কাজে লাগিয়ে এ সংস্থা মাঠে নামে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের একটি আবাসন ফ্ল্যাট বা প্রকল্প গড়তে। এ প্রকল্প গড়ার কথা কলকাতার রাজারহাটের নিউ টাউনে।

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সংসদ সদস্য ও অভিনেত্রী নুসরাত জাহান
ইনস্টাগ্রাম থেকে

এ লক্ষ্যে ৪২৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর কাছ থকে ৫ লাখ ৫৫ হাজার রুপি করে অর্থ তোলেন। অর্থের পরিমাণ ২৪ কোটি ছাড়িয়ে যায়। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও অন্যান্য সূত্র থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তা তুলে দেন সংস্থায়।

কিন্তু ওই সংস্থা আবাসন প্রকল্প না করায় কর্মীরা টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। এরপরই ফাঁস হয় এ দুর্নীতির ঘটনা। গত ২ আগস্ট কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে নুসরাত জাহান জানিয়ে দেন, তিনি ওই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন। শেয়ার হোল্ডারও নন। ২০১৭ সালে তিনি ওই সংস্থা ছাড়েন। তবে স্বীকার করেন, বাড়ি কেনার জন্য ওই সংস্থা থেকে তিনি ১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ রুপি ঋণ নিয়েছিলেন। ২০১৭ সালের মে মাসে সুদে–আসলে ১ কাটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ রুপি শোধও করে দেন।