নীরবেই চলে গেলেন ‘হীরক রাজার দেশে’র অভিনয়শিল্পী

সমীর মুখোপাধ্যায়ছবি: সংগৃহীত

‘হীরক রাজার দেশে’সহ চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের বহু সিনেমার অভিনয়শিল্পী সমীর মুখোপাধ্যায় মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অনেকটা আড়ালেই ছিলেন ৮০ বছর বয়সী এই শিল্পী। গতকাল শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।

সমীর মুখোপাধ্যায়ের ভাই বিমান মুখোপাধ্যায় টিভিনাইন বাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিন ধরেই শরীরটা খারাপ যাচ্ছিল। কিছুদিন আগেই এক হাসপাতালে ভর্তি করি আমরা। কিন্তু ডাক্তারও জানাচ্ছিলেন, শরীর ভালো নেই। দুই দিন আগে তাঁদের পরামর্শেই বাড়িতে নিয়ে আসি। চিকিৎসা যদিও চলছিল। আজ সকালে হঠাৎই বমি করতে শুরু করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দাদা চলে যায়। মনে হয়, স্ট্রোকের মতো হয়েছিল।’
সমীর মুখোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতাকে অনেকেই ভুলতে বসেছেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী, শ্রীলেখা মিত্রসহ আরও অনেকেই।

ফেসবুকে সুদীপ্তা লিখেছেন, ‘সমীর কাকুকেও ভুলে গেছি আমরা। সত্যজিৎ রায়ের বহু ছবি চললেই তাঁর দেখা পাই, অগুনতি সাদা–কালো বা রঙিন পুরোনো বাংলা সিনেমায় ছোট থেকে বড় নানান চরিত্রে অভিনয় করে মানুষকে কখনো হাসিয়েছেন, কখনো রাগিয়েছেন সমীর কাকু। গাড়ি চড়ে স্টুডিওতে ঢুকতে আমি অন্তত কোনো দিন দেখিনি। অন্যরা দেখেছেন কি না, জানি না। বেহালায় নিজের অঞ্চলে লুঙ্গি আর ফতুয়া পরে সবজি বাজার করতে দেখেছি বহুদিন। সাদামাটা জীবন যাপন করলেন বলেই কি আমরা ভুলে গেলাম? নাকি ইনস্টাগ্রাম রিল বানান না বলে? কী জানি! তবে ভুলে যে আমরা গেছি, সে বিষয়ে নিশ্চিত। যা–ই হোক, আর তো দেখা হবে না। ক্ষমা চাওয়ার অপশনটাও রইল না।’

অভিনয়ের বাইরে ইন্ডিয়ান অক্সিজেন লিমিটেডে চাকরি করতেন সমীর মুখোপাধ্যায়। সেখানে তাঁর সহকর্মী ছিলেন শ্রীলেখা মিত্রের বাবা। শ্রীলেখা এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমাদের বাড়িতে উনি বহুবার এসেছিলেন। রসিক অমায়িক মানুষ। শ্রীলেখা নয়, টুম্পা বলেই ডাকতেন আমায়। কেবা মনে রেখেছে তাঁকে? কোন কাগজে ছেপেছে তাঁর মৃত্যুর খবর? অন্ধকারে, আড়ালেই থাকেন এনারা। শান্তিতে থাকো সমীর কাকু। বাবার সাথে দেখা হলে বোলো, আমি ভালো আছি।’

আরও পড়ুন