'আয় বাপ কোলে আয়'

ছবিটি এখন সিনেমা, নাটকসংশ্লিষ্ট ফেসবুকের বেশ কিছু গ্রুপে ঘুরছে
ছবি: সংগৃহীত

একগাল হাসি নিয়ে ইরেশের কোলে চঞ্চল চৌধুরী। আনন্দের কমতি নেই ইরেশ যাকেরের মুখেও। ছবিটা গত পরশু ফেসবুকে পাওয়া গেছে। এ হাসিই বলে দেয় দুই অভিনেতার সম্পর্কের গভীরতা। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব তাঁদের। দীর্ঘদিন অভিনয় করছেন দুজন। সম্প্রতি তাঁদের একসঙ্গে দেখা গেছে ‘বলি’ ওয়েব সিরিজে। সিরিজটি মুক্তির পর এক আড্ডায় হাজির হয়েছিলেন দুজন। সেখানেই দুজনকে এক ফ্রেমে বন্দী করার জন্য ডেকে নেন সহকর্মীরা। ইরেশও ‘আয় বাপ কোলে আয়’ বলে কোলে তুলে নেন চঞ্চলকে।

‘বলি’ ওয়েব সিরিজে চঞ্চল চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

ইরেশ যাকের ও চঞ্চল চৌধুরী পরস্পরকে ‘বাপ’ সম্বোধন করেন। কবে, কীভাবে, কে প্রথম এটা শুরু করেন, সেটা আর আজ কারও মনে নেই। স্মৃতি খুঁড়ে চঞ্চল বলেন, ‘যাকের ভাই (প্রয়াত অভিনেতা ও ইরেশের বাবা আলী যাকের), সারা ভাবি (ইরেশের মা ও অভিনেত্রী সারা যাকের) আমাদের গুরুস্থানীয়। যখন থিয়েটার শুরু করি, তখনই তাঁরা অভিনেতা, নির্দেশক হিসেবে অতুলনীয়। তখন দেখতাম, থিয়েটারের কোনো অনুশীলন বা নাটকের মঞ্চায়নে ইরেশ আসত। আমরা ছিলাম কাছাকাছি বয়সের। ইরেশ আমার ছোট। তখন থেকেই তাকে চিনতাম। পরে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বন্ধু হয়ে যাই। কাজের ফাঁকে ইরেশ আমাকে মজা করে বাপ বলত। পরে আমিও তাকে মজা করে বাপ বলতাম। এখন আমাদের যেখানেই দেখা হোক, মুখে বাপ চলে আসে। সেদিন আমাদের প্রোগ্রামের সময় অনেকেই ছবি তুলতে ডাকছিলেন। তখন ইরেশ আমাকে কোলে তুলে নিল।’

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ইরেশ যাকের যেন হেসেই খুন। ‘বলি’ ওয়েব সিরিজে মাওলানা জয়নাল মুনশির চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। গল্পে সোহরাব কোম্পানির হয়ে কাজ করে চরিত্রটি। এ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ভক্তদের কাছ থেকে বাহবা পাচ্ছেন। তিনি বললেন, ‘আমার সঙ্গে চঞ্চলের প্রথম পরিচয় ২০০৭ সালে। পরে “মনপুরা” সিনেমার মহরতের দিনে কথা হয়। তখনো আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ছিল না। একসঙ্গে নাটক-সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে আমাদের সম্পর্কটা গভীর হতে থাকে। আমরা একসঙ্গে “শান্ত কুটির” নামে একটি সিরিয়াল করেছি, “দেবী” সিনেমা করেছি। শুটিংয়ের ফাঁকে কথা বলতে বলতেই আমাদের সম্পর্কটা এগিয়েছে। একসঙ্গে কাজ করলেও পর্দায় একসঙ্গে অভিনয় করিনি। তবে বন্ধু হিসেবে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে।’

বলি ওয়েবের একটি দৃশ্যে ইরেশ যাকের
ছবি: সংগৃহীত

চঞ্চল চৌধুরীকে ‘বলি’ সিরিজে নতুন রূপে দেখা গেছে। কাজটি তাঁর প্রত্যাশা কতটা পূরণ করেছে? জানতে চাইলে এই অভিনেতা বলেন, ‘শিল্পীর কোনো ভাবনা কখনোই পূরণ হয় না। এটা হওয়া উচিতও নয়। এখানে সর্বোচ্চ বলে কিছু আছে, এটা আমি মনে করি না। দর্শক পছন্দ করেছেন। সামনে আরও ভালো কাজ করব।’

প্রসঙ্গক্রমে আবারও চলে আসে মজাচ্ছলে তোলা ছবিটার কথা। ছবিটি এখন সিনেমা, নাটকসংশ্লিষ্ট ফেসবুকের বেশ কিছু গ্রুপে ঘুরছে। ভক্তরা দুই অভিনেতার রসবোধের প্রশংসা করছেন। ‘বলি’ সিরিজের সাফল্য উদ্‌যাপনে একটি পুনর্মিলনীর আয়োজন করেছিল প্রযোজনা সংস্থা। সেখানেই দেখা হয় চঞ্চল ও ইরেশের। ছবিটিও সেখানেই তোলা।