একজন মায়াবতী মিলি

ফারহানা মিলি। ছবি: সংগৃহীত
ফারহানা মিলি। ছবি: সংগৃহীত

‘ছোটবেলায় অপেক্ষা করে থাকতাম হুমায়ূন আহমেদের অয়োময়, আজ রবিবার আর বহুব্রীহি দেখার জন্য। ভাবতাম, যদি হুমায়ূন আহমেদের এমনি কোনো কাজের সঙ্গে থাকতে পারতাম। অনেক বছর পর আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হলো। কিন্তু এখন হুমায়ূন আহমেদ আর নেই।’ বললেন ফারহানা মিলি।
১৬ মার্চ দুপুরে মুঠোফোনে কথা হলো তাঁর সঙ্গে। জানালেন, পায়ে ব্যথা পেয়েছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায়ই আছেন। বিশ্রাম নিচ্ছেন। শুটিংয়ের চাপ নেই, তাই কিছু স্ক্রিপ্ট পড়ছেন।
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস একজন মায়াবতী অবলম্বনে অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী ও অন্যদিন ম্যাগাজিনের সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তৈরি করেছেন ধারাবাহিক নাটক। নাট্যরূপ দিয়েছেন অরুণ চৌধুরী। উপন্যাসের নামেই ধারাবাহিকটির নাম একজন মায়াবতী। মাজহারুল ইসলাম আগেই জানিয়েছেন, তাঁর এই নাটকে নাম ভূমিকায় তিনজনকে দেখা যাবে। এই যেমন, সুমাইয়া শিমু আর ফারহানা মিলিকে। চ্যানেল আইয়ে ২২ মার্চ থেকে প্রচার করা হবে ধারাবাহিকটি।
মিলি জানালেন, নাটকে তাঁর চরিত্রটির নাম ‘জাহানারা’। জীবনসংগ্রামে লিপ্ত। উপন্যাসে জাহানারা টাইপিস্ট হলেও নাটকে তিনি কম্পিউটার অপারেটর। ৫২ পর্বের এই ধারাবাহিকের শুটিং প্রায় শেষ। আর মাত্র এক দিনের কাজ বাকি আছে।
বললেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের গল্প কিংবা উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র সবার খুব পরিচিত। এখানে নিজের কিছু যোগ করা খুব কষ্টসাধ্য। কারণ একজন মায়াবতী নাটকে উপন্যাসের প্রতিটি সংলাপ এতটুকু পরিবর্তন করা হয়নি। কাজ করতে গিয়ে সংলাপগুলোর মাঝে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের উপস্থিতি অনুভব করেছি।’
একজন মায়াবতীর পাশাপাশি বিবিসি প্রযোজিত উজান গাঙের নাইয়া (সিজন টু) ধারাবাহিকের কাজ করেছেন মিলি। পুরো কাজটিই হয়েছে কক্সবাজারে।
মিলির ছেলের নাম রুসলাত। বয়স দুই বছর তিন মাস। ছেলের জন্য মাঝে বছর দেড়েক তেমন কোনো কাজ করেননি তিনি। জানালেন, এখন আবার নিয়মিত কাজ করছেন। শিগগিরই আরও তিনটি ধারাবাহিক আসছে তাঁর। এগুলো হলো আলভী আহমেদের শূন্য থেকে শুরু, মারুফ মিঠুর তিনি আসবেন আর অরণ্য আনোয়ারের দহন। বললেন, ‘ধারাবাহিকের চেয়ে খণ্ড নাটকে আমি বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করি।’
মিলিকে দর্শকদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় করে মনপুরা ছবিটি। পরিচালক গিয়াসউদ্দীন সেলিম। ব্যবসাসফল এই ছবির পর আর কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি মিলিকে। বললেন, ‘অনেক ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি, কিন্তু সব কটি ছবির গল্পই মনপুরার খুব কাছাকাছি। তখন যে ধরনের গল্প খোঁজ করছিলাম, তেমনটা পাইনি। তবে ভালো ছবিতে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করছি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্বে স্নাতক করেছেন মিলি। জানালেন, সামনে স্নাতকোত্তর করবেন অন্য কোনো বিষয়ে।
আলোচনার শেষে জানালেন, তিনি একসময় উপস্থাপনাও করেছেন। ২০০০ সালে, একুশে টিভির সেই অনুষ্ঠানটির নাম ‘চিপস অ্যান্ড বাইটস’। এরপর উপস্থাপনা করেছেন এনটিভির একটি অনুষ্ঠান। মিলি বললেন, ‘তখন আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। একদিন আমার শিক্ষক প্রয়াত সেলিম আল দীন বলেন, “তোর অনুষ্ঠান দেখেছি। উপস্থাপনার চেয়ে তুই অভিনয় ভালো করবি। তোর সেই দিকটাতে নজর দেওয়া উচিত।” এরপর আমিও আর উপস্থাপনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাইনি।’
আরও জানালেন, ইদানীং আবার মঞ্চে কাজ করার তাগিদ অনুভব করছেন। কারণ একসময় নিয়মিত নাটক করেছেন মঞ্চে। সর্বশেষ কাজ করেছেন নাট্যকেন্দ্রে।
বোঝা যাচ্ছে, মিলি আবার নিজেকে প্রস্তুত করছেন। জানালেন, সময়ই সব বলে দেবে।