জন্মদিনে কী করলেন তাঁরা

ফজলুর রহমান বাবু, ডলি সায়ন্তনী, মোশাররফ করিমরুমানা রশিদ ঈশিতা। তারকা হওয়ার পর অভিনয় আর সংগীতজগতের এই চার তারকা জেনেছেন, তাঁরা জন্মেছিলেন একই দিনে। গতকাল ২২ আগস্ট শনিবার ছিল তাঁদের জন্মদিন। করোনাকালে কেমন কাটল তাঁদের জন্মদিন।

ঈশিতা, ফজলুর রহমান বাবু, ডলি সায়ন্তনী ও মোশাররফ করিম
জন্মদিন নিয়ে মাতামাতি অস্বস্তি লাগে। সন্তানেরা বলল, ৬০তম জন্মদিন তো আর বারবার আসবে না। কী আর করা!
ফজলুর রহমান বাবু
ফজলুর রহমান বাবু
সংগৃহীত

বেলা তিনটা। ফোনের ওপাশে সদ্য ৬০-এ পা রাখা ফজলুর রহমান বাবু তখন ছুটছেন। স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছিলেন গাজীপুরের উদ্দেশে। সেখানকার এক অবকাশ যাপনকেন্দ্রে দিনের বাকি সময়টুকু কাটাবেন। জন্মদিনের প্রথম প্রহর অর্থাৎ রাত ১২টায় তাঁদের নিয়ে হইচই করে কেটেছেন কেক। কেকটার ওপরে লেখা ছিল ‘হ্যাপি সিক্সটি’।

৬০-এ পৌঁছে শিশুদের মতোই খুশি দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারজয়ী এই অভিনেতা। বললেন, ‘আজ আমার কোনো কাজ নাই। ঘুরব, খাব, রাতটা ওখানেই থাকব।’ কণ্ঠস্বরে লজ্জা ঢেলে বললেন, ‘সকাল থেকে সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছে, বার্তা পাঠাচ্ছে। বাসায় মিষ্টি এসেছে। জন্মদিন নিয়ে এই মাতামাতি আমার অস্বস্তি লাগে। সন্তানেরা বলল, ৬০তম জন্মদিন তো আর বারবার আসবে না। তাই কী আর করা!’

অন্য বছরগুলোতে এ আয়োজনটা আরেকটু বড় হয়। গানের আসর বসে। করোনাকালে পরিসরটা ছোট হলো
ডলি সায়ন্তনী
ডলি সায়ন্তনী
সংগৃহীত

জন্মদিনে মহাব্যস্ত সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী। চুলোর কাছে দাঁড়িয়েই ফোন ধরলেন। জানালেন, একটু পরই সিঙ্গাপুরের একটা অনলাইন চ্যানেল থেকে লাইভে গাইবেন। রান্না প্রসঙ্গে বললেন, ‘প্রতি শুক্রবার ও বিশেষ বিশেষ দিনে আমি নিজ হাতে রান্না করি। আজ পরিবার আর কাছের কিছু বন্ধুকে দাওয়াত করেছি। কাচ্চি বিরিয়ানি, ভুনা খিচুড়ি, কয়েক পদের মাংস, মাছ, বেগুনভাজি হচ্ছে। অন্য বছরগুলোতে এ আয়োজনটা আরেকটু বড় হয়। গানের আসর বসে। করোনাকালে পরিসরটা ছোট হলো।’

‘হে যুবক’, ‘কোন বা পথে নিতাইগঞ্জ যায়’খ্যাত এই শিল্পী জন্মদিনের প্রথম প্রহরে একটা কেক কেটেছেন। দিনের শেষে কেটেছেন আরেকটি। ছেলেমেয়েরা মাকে উপহার হিসেবে দিয়েছে পারফিউম আর মগ। মগের ওপর লেখা, ‘লাভ ইউ মম’। আর বর দিয়েছেন নতুন জামা।

আমি জন্মদিন নিয়ে হইচই করায় বিশ্বাসী নই। আলাদা করে পালন করারও কিছু পাই না।
মোশাররফ করিম
মোশাররফ করিম
সংগৃহীত

জন্মদিনের আগেই স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে মোশাররফ করিম পৌঁছে গেছেন ঢাকার কোলাহল থেকে দূরে, নিরিবিলি এক অবকাশযাপন কেন্দ্রে। সঙ্গে ছিল টকটকে লাল রঙের একটা কেক। কেকের ওপর সাদা ক্রিমের হরফে লেখা, ‘জন্ম হোক শুভ’। দুই ভাগে উদ্‌যাপিত হলো মোশাররফ করিমের জন্মদিন। এক ভাগে ছিল ফেসবুক ফ্যান পেজে নানা উন্মাদনা। অন্যদিকে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের ব্যস্ত দুনিয়া থেকে ছুটি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছেন মোশাররফ করিম।

ফোনের ওপাশ থেকে অবশ্য বললেন, ‘আমি জন্মদিন নিয়ে হইচই করায় বিশ্বাসী নই। আলাদা করে পালন করারও কিছু পাই না। পরিবার নিয়ে একটু নিভৃতে সময় কাটাতে এখানে আসা।’ মোশাররফ করিমকে সবার আগে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে তাঁর ছেলে রায়ান, তারপর স্ত্রী জুঁই। আজ বা কাল আবার ফিরবেন শহরে, নানা রঙের নানা চরিত্রের আড়ালে মিশে যাবেন।

সব জন্মদিনই ঘরোয়াভাবে কাটে তাঁর। তাই করোনাকাল জন্মদিনের শিডিউলে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি
রুমানা রশিদ ঈশিতা
রুমানা রশিদ ঈশিতা
সংগৃহীত

ঈশিতাকে ফোন করে প্রথম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর শাশুড়ি। তারপর ১১ বছরের ছেলে সুর করে গেয়েছে, ‘হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ’। দুপুরে যখন তাঁর সঙ্গে কথা হচ্ছে, ততক্ষণে তিনি সকালের এক কাপ চা ছাড়া আর কিছুই খাননি। জন্মদিনকে বিশেষভাবে উদ্‌যাপনে তেমন উৎসাহ নেই ছোটপর্দার এই গুণী তারকার।

তবে জন্মদিনে মায়ের হাতে রান্না বিশেষ পদ খেতে ভোলেন না ঈশিতা। গতকাল জন্মদিনের রাতেও মায়ের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। সব জন্মদিনই ঘরোয়াভাবে কাটে তাঁর। তাই করোনাকাল জন্মদিনের শিডিউলে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।