পুরোনো রূপে শুটিংবাড়িগুলো

আগের রূপে ফিরে এসেছে নাটকের শুটিং। গতকাল সোমবার ঢাকার উত্তরায় ‘তবু ভালোবাসি’ নাটকের শুটিং–বিরতিতে ইফতার করছেন তাহসান, সামিরা খান মাহি, পরিচালক মাবরুর রশিদ বান্নাহসহ অন্যান্য শিল্পী ও কলাকুশলী
ছবি: সংগৃহীত

বিমানবন্দর থেকে শুটিং শেষ করে উত্তরায় ফিরেছেন দিলারা জামান। জ্যেষ্ঠ এ অভিনেত্রীকে এবারের ঈদে পাওয়া যাবে ‘বয়স একটি সংখ্যা’ নামের একটি নাটকে। তাঁর বিপরীতে দেখা যাবে আরেক জ্যেষ্ঠ অভিনেতা আবুল হায়াতকে। শুটিংয়ের পরিবেশ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বাস দেখা গেল দিলারা জামানের ভেতর। গত বছর এই সময়ে তিনি বলেছিলেন, শুটিংয়ে যেতে ভয় করে। করোনার ভয়। এখন সেই ভয় নেই। প্রায় সবাই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। সতর্কতার জন্য এখন আর কাউকে কিছু বলে দিতে হয় না। তিনি বলেন, ‘এখন সবকিছু প্রায় স্বাভাবিক। আমরা যারা বয়স্ক আছি, তারা নিজেদের স্বার্থে মাস্ক পরে থাকি।’ হাসতে হাসতে বলেন, ‘তবে ইফতারের সময় পরি না।’

ঈদ সামনে রেখে চলতি মাসের শুরু থেকে প্রবীণ–নবীন শিল্পীদের অংশগ্রহণে জমে উঠেছে রাজধানীর শুটিংবাড়িগুলো। এখন সেই অর্থে আগের মতো করোনার ভয় নেই। নেই স্বাস্থ্যবিধি মানা না মানার শঙ্কা। শুটিংবাড়িগুলোয় ফিরেছে স্বাভাবিক দিন। নিজে থেকে সবাই এখন সতর্ক থাকেন। ক্যামেরা চালু হলে মুখ থেকে মাস্ক খোলেন আর ইফতারে সবাই একত্রে খাওয়ার সময়। শুটিংবাড়িগুলোয় পূর্ণোদ্যমে চলছে ঈদুল ফিতরের নাটকের শুটিং।

গেল সপ্তাহের কথা। আপনঘরে চলছিল সাফা কবির ও তাহসানের শুটিং। মাহমুদুর রহমানের পরিচালনায় কাজ করছেন এ দুই তারকা। গত বছর আর এ বছরের এই সময়, অর্থাৎ ঈদের আগের শুটিং পরিস্থিতির পার্থক্য কী এই পরিচালকের কাছে? মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মনে পড়ে, গত বছর আউটডোরে শুটিং করতে হলে শিল্পীদের মাস্ক পরিয়ে শুট করতে হতো। দেখা গেল স্ক্রিপ্টে নেই, মুখে মাস্ক। এ বছর সেটা করতে হচ্ছে না। এদিক দিয়ে ভালো লাগছে।’

তিনি জানান, এরই মধ্যে দুটি নাটকের শুটিং শেষ, ঈদের আগে আরও তিনটি নাটক করবেন এই পরিচালক। আরেক পরিচালক আবু হায়াত মাহমুদ জানান, শুটিংয়ের দিনগুলোয় সন্ধ্যায় ইফতারের আয়োজন হয় জমজমাট। এটা রীতিমতো উৎসব। সবার পছন্দের খাবার আনিয়ে সবাই মিলে চলে খাওয়াদাওয়া। শুটিংয়ের বিরতিও হয়, আনন্দও হয়। মাঝেমধ্যে কোনো কোনো শিল্পী সেটের সবার জন্য বাড়ি থেকে খাবার বানিয়ে আনেন, নয়তো আনিয়ে নেন। এ বছর কে কে আনলেন? জানতে চাইলে আবু হায়াত মাহমুদ বলেন, এ বছর এখনো কেউ আনেননি। গত বছর দিলারা আন্টি, শর্মিলী আন্টিরা আনতেন। ঈদে আফজাল হোসেনকে নিয়ে ‘ডিজাইনার’, সাফা–খায়রুল বাসারকে নিয়ে ‘নয়নতারার গল্পগাথা’সহ বেশ কয়েকটি কাজ উপহার দেবেন তিনি।

লাবণী শুটিং হাউসে শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘রিভেঞ্জ’ নাটকের শুটিং করছিলেন তানজিন তিশা ও তাওসিফ। তাঁরা জানান, আগে যেভাবে করোনা আর স্বাস্থ্যবিধি মাথায় নিয়ে কাজ করতেন তাঁরা, এখন সেসব নেই। এখন কেবল কাজটাই মাথায় থাকে। তিশা বলেন, ‘এখন অনেকটা শঙ্কামুক্ত আমরা। আগের সেই ভয় এখন আর নেই, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় নেই।’ এবারের ঈদুল ফিতরে মাত্র পাঁচটি নাটকে অভিনয় করছেন তিশা। আগে করে রেখেছিলেন, সে রকম পাঁচটি নাটক ঈদে দেখা যাবে। তৌসিফ ও ফারিণকে নিয়ে শুরুটাই সুন্দর এবং অপূর্ব ও ফারিণকে নিয়ে ‘সানরাইজ টু সানসেট’ নামের দুটি নাটকের প্রস্তুতি শেষ মিজানুর রহমান আরিয়ানের। তিনি জানান, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা শুটিং ইউনিটগুলোয় এখন কমে গেছে। প্রায় ৮০ শতাংশ আগের অবস্থায় ফিরে গেছেন তাঁরা।