সামাজিক যোগাযোগের কোনো অনলাইন মাধ্যমের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই

সারিকা সাবরিনছবি: ফেসবুক থেকে
নিজের কিছু ভুলে মিডিয়া থেকে দূরে ছিলেন অভিনেত্রী ও মডেল সারিকা। কয়েক বছর হলো তিনি নিয়মিত কাজে ফিরেছেন। এই সময়ের মধ্যে এবার ঈদের তাঁর সর্বোচ্চসংখ্যক নাটক প্রচারিত হচ্ছে। ঈদের নাটক ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বললেন এই অভিনেত্রী।

প্রশ্ন :

ঈদের নাটকগুলো থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

এবার অনেকগুলো নাটকে অভিনয় করেছি। সেগুলো ঈদের সাত দিনব্যাপী ঈদ অনুষ্ঠানমালায় প্রচারিত হবে। ধারাবাহিক ‘তাল মিছরি না হওয়াই মিঠাই’, ‘যমজ’সহ একাধিক নাটক থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমার অভিনীত অর্ধেকের বেশি নাটক প্রচারিত হয়েছে। গল্পবৈচিত্র্যের কারণে কাছের অনেকেই ফোন করে কাজের প্রশংসা করেছেন।

সারিকা সাবরিন
প্রথম আলো

প্রশ্ন :

ঈদের কতগুলো নাটকে অভিনয় করেছেন?

২০১৬ সাল থেকে কাজে ফেরার পরে এবারই সবচেয়ে বেশি কাজ করা হয়েছে। এবার সময়টা বেশি পেয়েছি। দুটি ধারাবাহিক আর ১৫টার মতো খণ্ড নাটক। কাজের সংখ্যা আরও বাড়ত কিন্তু পরিবারের ছোট মেয়ে, মা–বাবার কথা ভেবে দেড় মাসের নাটকের কাজ বাতিল করেছি।

প্রশ্ন :

প্রচারিত নাটকগুলো কি দেখেছেন?

ব্যস্ততার ফাঁকে কিছু নাটক দেখার চেষ্টা করেছি। আমি নিজের কাজগুলো দেখে সব সময় ভুলগুলো শুধরাতে চাই। এটা নিজেকে ইমপ্রুভ করতে খুবই কাজে লাগে। তবে এবারই বেশি বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার কাজ ও অভিনয় নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।

সারিকা সাবরিন

প্রশ্ন :

একটি নাটকে দেখলাম ‘টিকটক’ করতে, বাস্তবে টিকটক করেন?

না, না আমি কোনো টিকটক করি না। এমনকি তিন বছর ধরে আমার সামাজিক যোগাযোগের কোনো মাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। পরিচিত অনেকের ফোন পেয়েই বুঝতে পারি কোন নাটক কতটা সাড়া পড়েছে। পরে ইউটিউবে দেখলে বুঝতে পারি।

প্রশ্ন :

নিয়মিত অভিনয় থেকে হঠাৎ বিরতি দিলেন, পরে কাজে ফিরে কী উপলব্ধি হলো?

তখন আমার ক্যারিয়ারে পিক টাইম ছিল। কাজ ছেড়ে যদি বিয়ে, সংসার করার চিন্তা না নিতাম তাহলে হয়তো আমার ক্যারিয়ার অন্য জায়গা থাকতে পারত। আবার না–ও থাকতে পারত। তখন বোঝার জন্য আমি ছোট ছিলাম। ভুল নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। তবে এগুলোকে আমার মাঝে মাঝে ভুল মনে হয় না। ওসব নিয়ে এখন আর কিছু ভাবি না। ভুল থেকেই শিখছি যে আমি কে। এখন অনেক কিছুই বুঝতে পারি। ভুল না করলে হয়তো সেটা হতো না। সামনে আরও বেশি সতর্ক থাকব।

প্রশ্ন :

দীর্ঘদিনের বিরতির পরে শুটিংয়ের ফেরা দিনের কথা মনে আছে?

দিনটি আমার কাছে স্মরণীয়। ফেরা আমার জন্য কঠিন একটি সিদ্ধান্ত ছিল। মনে হচ্ছিল সবকিছু আবার নতুন করে করতে হবে। প্রথম দিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে খুবই নার্ভাস লাগছিল। মনে হচ্ছিল আমি অভিনয় ভুলে গেছি। তারপর থেকে এখনো ভালোবেসে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন :

এখন কি একাই থাকছেন?

না না, একা থাকব কেন। মা–বাবার সঙ্গে থাকি। আমার মেয়ে আছে, নিয়মিত কাজ করছি। ভালোই আছি।

সারিকা সাবরীন
প্রথম আলো

প্রশ্ন :

আপনার মেয়ে কি আপনার নাটক দেখে?

সেই আমার নাটকের সবচেয়ে বড় ভক্ত। খুঁজে খুঁজে আমার নাটক দেখে। ওর বয়স ছয় বছর। প্রশংসা করে, আবার সমালোচনা করতেও ছাড়ে না। কোনো নাটক তার পছন্দ না হলে সরাসরি বলে, আম্মু এটা আরও আরও ভালো হতে পারত। তখন মনে হয় কষ্টটা সার্থক, আমি সফল। আমি শুটিংয়ে বের হলে সব সময় বলে, আম্মু ভালো করে কাজ করো। সে আমার ব্যস্ততার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে।

প্রশ্ন :

এখন সিনিয়র ও জুনিয়র দুই প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গেই কাজ করতে হয়, অভিজ্ঞতা কেমন?

সিনিয়র মোশাররফ ভাই, জাহিদ ভাইসহ অনেকের সঙ্গেই কাজ করছি। তরুণদের মধ্যে তৌসিফ, জোভান সবার সঙ্গে অভিনয় করছি। অভিজ্ঞতা বলতে সিনিয়র হলে একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয়। একটু টেনশন থাকি। তা ছাড়া সবার কাছ থেকেই কিছু না কিছু শেখার আছে। তবে সিনিয়ররা অনেক উপদেশ দেন। তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে আলাদা একটা এক্সসাইটমেন্ট থাকে।

সারিকা সাবরিন

প্রশ্ন :

বিয়ে নিয়ে কিছু ভাবছেন?

সংসার নিয়ে আপাতত ভাবছি না। ভাগ্যে লেখা থাকলে বিয়ে হবে। যখন হওয়ার তখন হবে। তবে আপাতত আমি ভালোবেসে অভিনয়টা করে যেতে চাই।

সারিকা সাবরীন

প্রশ্ন :

ঈদ কেমন কাটালেন?

সতর্কতা মেনে বাসায়ই আছি। খুব একটা বের হইনি। পরিবারকে সময় দিচ্ছি। ফোনে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছি। ভালো ভালো কাজও যাচ্ছে, ঈদটা আমার জন্য একটা আশীর্বাদ।

‘তাল মিছরি না হওয়াই মিঠাই’ নাটকের দৃশ্য

প্রশ্ন :


আবার শুটিংয়ে ফেরা কবে?

আজ থেকে একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় যোগ দেব। নাটকের শুটিং হয়তো এই মাসের শেষ থেকে শুরু করতে পারি।