'অভিনেতা পাপ্পাই ভালো'

ছেলের সঙ্গে অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু ছবি: সংগৃহীত
ছেলের সঙ্গে অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু ছবি: সংগৃহীত

প্রথম ‘সিটিবাস’ নাটক দিয়ে দর্শকদের কাছে পরিচিতি পান এই অভিনেতা। নাটকটি প্রচার হওয়ার পর ‘মামুর বেটা নাকি’, ‘আমি তোতা মিয়া’, ‘যবের ব্যাপার’, ‘ছোট ভাইকে বাচতেই পারছেন না’সহ বেশ কিছু ডায়ালগ দর্শকদের মুখে মুখে ঘুরেছে অনেক দিন। রাজশাহীর আঞ্চলিক ভাষাই ছোট পর্দার অভিনেতা রাশেদ মামুন অপুর পরিচিতি বাড়িয়ে তোলে। এক যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করছেন রাশেদ মামুন। অভিনয়ের ব্যস্ততার পাশাপাশি এই অভিনেতাকে নির্মাণেও দেখা যাচ্ছে।

অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু ছবি: সংগৃহীত
অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু ছবি: সংগৃহীত

তোতা মিয়াখ্যাত এই অভিনেতার নির্মাণে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াল তাঁর ছেলে অনুরণন। বাবার সঙ্গে ছেলে পাঁচ বছর আগে ‘সংকোচ’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করে। সে সময় অভিনয়ের অভিজ্ঞতা মধুর হলেও নির্মাতা হিসেবে ক্যামেরার পেছনে বাবাকে অপরিচিত মনে হয়েছে ছেলের। এ সম্পর্কে অনুরণন বলে,‘ডিরেক্টর বাবার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকাই ভালো। পাপ্পাকে আমার চেনা হয়ে গেছে। পাপ্পা আমাকে ধমক দিয়েছেন।’ শুটিং শেষে বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে অভিমান করে কথাগুলো বলে ১০ বছরের ফাহিম রহমান অনুরণন। সে এবার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।

রাশেদ মামুনের নির্দেশনায় ‘অনুরণের দিনে’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন অনুরণন। শুটিং সেটেই বাবার ওপর অভিমান হয় ছেলের। নির্মাতা বাবার চেয়ে অভিনেতা বাবা তার কাছে ভালো ছিল। ছোট অনুরণন বলে, ‘আমি আমার ডিরেক্টর বাবাকে চিনেছি। আমার ডিরেক্টর বাবা আমাকে ধমক দিয়েছেন। বাবার সঙ্গে সেদিন আমি কথা বলি নাই। আমার অভিনেতা পাপ্পাই ভালো। ডিরেক্টর পাপ্পার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকাই ভালো।’ ছেলের কথা শুনে বোঝা যায় বাবার ওপর কতটুকু অভিমান করেছে ছেলে।

ছেলের সঙ্গে অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু ছবি: সংগৃহীত
ছেলের সঙ্গে অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু ছবি: সংগৃহীত

‘অনুরণের দিনে’ শর্টফিল্মের চিত্রনাট্য লিখেছেন জামশেদ শামীম। ছেলের অভিমান নিয়ে রাশেদ মামুন বলেন, ‘দৃশ্য ধারণ শেষ হলে আমি কাট বলি। তখন অনুরণন আমার পাশে এসে বাবা বলে হাত ধরে। তখন আমি দৃশ্যটির প্রিভিউ দেখছিলাম। ছেলে পাশে এলে আমার রাগ হয়ে যায়। আমি তাঁকে ধমক দিয়ে বলি শুটিংয়ের সময় সেটে আমি ডিরেক্টর, তুমি অভিনেতা। শুটিং শেষ করে আমার কাছে আসবা না।’ এতেই অভিমান হয় ছেলের। রাশেদ মামুন মূলত অভিনেতা এবং ডিরেক্টরের সম্পর্ক বোঝানোর জন্যই এমনটি করেন। ছেলেকে অভিনয় করানোর ইচ্ছে আছে এই অভিনেতার। অভিনয় সম্পর্কে খুঁটিনাটি ধারণা এখনই দিতে চান ছেলেকে।

অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু ছবি: সংগৃহীত
অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু ছবি: সংগৃহীত

দুই দিনের শুটিংয়ে দৃশ্য ধারণে অনুরণন একবারের জন্যও বাবার কাছে আসেনি। রাশেদ মামুন বলেন, ‘অনুরণন এখন পাকা অভিনেতা। পরে যতক্ষণ শুটিং করেছি শট শেষ করামাত্র অনুরণন আমার কাছ থেকে দূরে থেকেছে। ভয়ে আমার দিকে তাকায়নি।’ অনুরণনের কাছে জানতে চাই বাবার সঙ্গে শুটিং করে কেমন লেগেছে, যখন তোমার বাবা কাট বলতেন তখন কী করতে তুমি? অনুরণন বলে, আমি দূরে যেতাম। পাপ্পা আমাকে ধমক দিয়েছে। পাপ্পাকে আমার ভয় লাগত। অভিনয় করতে গিয়ে প্রথমবারের মতো অন্য পাপ্পাকে চিনেছি।’

‘অনুরণের দিনে’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাশেদ মামুন। পুরো সময় অনুরণন বাবার সঙ্গে কথা বলেনি। অনুরণন এর আগে একটি মিউজিক্যাল ফিল্ম এবং একটি বিজ্ঞাপনে শুটিং করেছে। ‘অনুরণের দিনে’ শর্টফিল্মে পুরান ঢাকা, শ্যামলী, বেড়িবাঁধ, এবং মানিকগঞ্জে তিন দিন দৃশ ধারণ হয়েছে। এটি খুব শিগগির অনলাইন প্ল্যাটফর্মে উন্মুক্ত হবে।