মেহজাবীনের সেই আফসোস ঘুচল বাহমায়
ছোটবেলায় টাইটানিক দেখে বড় কষ্ট পেয়েছিলেন মেহজাবীন চৌধুরী। পাশাপাশি মনের গভীরে একটা ইচ্ছারও জন্ম দিয়েছিল এই সিনেমা—জাহাজে করে গভীর সমুদ্রে কোনো দ্বীপে যাওয়ার ইচ্ছা। সেই ইচ্ছাই এখন পূরণ করছেন এই অভিনেত্রী। সাগরের ভেতর দূরের এক দ্বীপে আছেন তিনি। কোথায় আছেন এই অভিনেত্রী, সঙ্গেই বা কে?
বছর কয়েক আগেও ঈদে ডজন খানেকের বেশি নাটক নিয়ে আলোচনায় থাকতেন মেহজাবীন চৌধুরী। সেখানে ঈদুল আজহায় এবার একটিমাত্র নাটক মুক্তি পেয়েছে তাঁর। তাতেও এই অভিনেত্রীর জনপ্রিয়তায় একটুও ভাটা পড়েনি। এক পুনর্জন্ম অন্তিম পর্ব দিয়েই ভক্তদের কাছ থেকে প্রশংসা পাচ্ছেন বিস্তর। নতুন এই অভিজ্ঞতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভক্তদের এমন আগ্রহ ক্যারিয়ারে অন্য কোনো কাজের সময় দেখিনি। এক মাস আগে থেকেই দর্শক জানতে চাইছিলেন, কবে আসবে, এবার কী হবে। লুক প্রকাশের পর ভক্তরা আমার সেই মুখ পুড়ে যাওয়া সাজের অনেক ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ঈদে নাটকটি প্রচারের পর এক লাখের বেশি মানুষ একসঙ্গে সেটা দেখেছেন। এটা আমার জন্য অবিশ্বাস্য। তাঁদের কাছ থেকেই জানলাম, আমার ও আফরান নিশোর চরিত্র নিয়ে দুটো ভাগ হয়ে গেছে, এরপর কী হবে ইত্যাদি জানতে চাইছেন, এটা আমার কাছে নতুন করে পাওয়া।’
ভক্তরা যখন ফেসবুকে মেহজাবীনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, তখন যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। সেখানে একটি আয়োজনে অংশগ্রহণ করে এখন নিজের মতো করে ঘুরছেন।
তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায় ঘোরা হচ্ছে। মিয়ামি, ভার্জিনিয়া, নিউইয়র্ক, থেকে ফ্লোরিডা। সেখান থেকে বাহমায় যাচ্ছি জাহাজে। আমার কখনো জাহাজে ভ্রমণ করা হয়নি। টাইটানিক–এর কথা মনে পড়ছে। সিনেমাটা আমার অনেক পছন্দের। সিনেমাটির শেষটা অনেক কষ্ট দিয়েছিল। কিন্তু সেই থেকেই জাহাজে ভ্রমণের ইচ্ছা। এবার সেই আফসোস ঘুচল। দারুণ অনুভূতি।’
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর থেকেই ফেসবুকে একের পর এক সুন্দর সুন্দর ছবি পোস্ট করছেন মেহজাবীন। সেগুলো নিয়েও ভক্তদের কৌতূহল। কে তুলে দিচ্ছেন এসব ছবি? এ প্রশ্নের উত্তরে মেহজাবীন বলেন, ‘এসব ছবির ফটোগ্রাফার তাসনিয়া ফারিণ। যুক্তরাষ্ট্রের আয়োজনে আমরা একসঙ্গেই এসেছি। দুজনই এখন সমুদ্রে। এখানে ঠিকমতো নেটওয়ার্ক নেই। এ কারণে অনেকের সঙ্গেই ঠিকমতো কথা বলতে পারছি না।’ জানা গেল দুই তারকার মধ্যে আড্ডা হচ্ছে নিয়মিত। নাটক, সিনেমা, গান নিয়ে কত কথা।
মেহজাবীনের ইচ্ছা ছিল, সহশিল্পী আফরান নিশোর প্রথম সিনেমা দেখবেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কারণে আর দেখা হলো না। এই নিয়ে নাকি নিশোর সঙ্গে কথাও হয়েছে। মেহজাবীন বলেন, ‘একসঙ্গে অনেক কাজ করেছি আমরা। নিশো ভাই প্রথমবার সিনেমা করলেন, তাঁকে শুভকামনা জানিয়েছি। সিনেমাটি দর্শক দেখছেন, এটাও আমাদের জন্য আনন্দের। আর নিশো ভাই বলেছিলেন, বিশেষ একটি শো হবে। সেখানে থাকার কথা ছিল। কিন্তু হলো না। হয়তো দেশে গিয়ে সিনেমাটি দেখব।’
ঘোরাঘুরির সময় ফেসবুকে কিছুটা সরব থাকলেও সবকিছু থেকেই নিজেকে দূরে রাখতে চান এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের জীবনযাপন যে ধরনের, যে কাজ, সেখানে নিজেকে সব সময় শুটিংয়ে ব্যস্ত রাখতে হয়। এ জন্য প্রতিবার ঈদের সময় বা কিছুটা সময় পেলেই মনে হয়, একটু আনন্দ করা উচিত। ঘোরাঘুরির জন্য বেরিয়ে পড়া উচিত। আমার কাছে মনে হয় নিজের সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যটা জরুরি। কঠোর পরিশ্রম করার জন্য শক্তি সঞ্চয় করা দরকার। নিজে ভালো থাকা দরকার। আমি তো দেশের বাইরে বেড়ে উঠেছি, তখন থেকেই মনে হতো প্রচুর ঘুরব। আর এমন সব জায়গায় যাব, মানুষ সচরাচর যেখানে যায় না।’
দেশে ফিরবেন কবে জানতে চাইলে গত বুধবার রাতে বললেন, ‘ফেরার পরিকল্পনা এখনো করিনি। আরও কিছু সময় সমুদ্রের মাঝে দ্বীপে কাটাতে চাই।’