ছবির এই শিশু এখন প্রতিষ্ঠিত অভিনয়শিল্পী ও সংসদ সদস্য

ছবির এই শিশুকে চেনা যায়। চট করে অনেকে হয়তো চিনতে পারেননি। তিনি শক্তিমান অভিনয়শিল্পী ও আবৃত্তিকার গোলাম মুস্তাফা এবং রেডিওর অনুষ্ঠান প্রযোজক ও লেখক হোসনে আরা মুস্তাফার কন্যা। মঞ্চ দিয়ে তাঁর অভিনয়জীবন শুরু। আশির দশকে যাত্রা শুরু টেলিভিশন নাটকে। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রে। সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা মানুষটি আপাদমস্তক সংস্কৃতির মানুষ হয়েই আছেন। সংস্কৃতি অঙ্গনের নানা সংকট নিয়ে কাজ করে চলছেন তিনি। অভিনয় অঙ্গনের অগ্রজ, অনুজ সবার কাছে তিনি প্রিয় একটি নাম। সংস্কৃতিকর্মী পরিচয়ের বাইরে তিনি এখন একজন সংসদ সদস্য। তিনি সবার প্রিয় অভিনয়শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা। আজ তাঁর জন্মদিন। ১৯৬২ সালের ২ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করা সুবর্ণা আজ তাঁর সহকর্মীদের ভালোবাসায় ভাসছেন। স্থিরচিত্রে দেখে নেওয়া যাক সুবর্ণা মুস্তাফাকে
১ / ১০
ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন অভিনয়শিল্পী ও আবৃত্তিকার গোলাম মুস্তাফা। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর পর তিনি সেখান থেকে চলে আসেন। একটা সময় সংসার শুরু করেন রেডিওর অনুষ্ঠান প্রযোজক ও লেখক হোসনে আরা মুস্তাফার সঙ্গে। এই দুজনের সংসারে ১৯৬০ সালের ২ ডিসেম্বর জন্ম নেন আজকের অভিনয়শিল্পী ও সংসদ সদস্য সুবর্ণা মুস্তাফা। ছবিতে সুবর্ণা মুস্তাফার বাবা ও মা
ছবি : সংগৃহীত
২ / ১০
তিনি সুবর্ণা মুস্তাফা। নানির বাড়ি ঢাকার সেন্ট্রাল রোডে তোলা হয়েছিল ছবিটি। সেন্ট্রাল রোডের ভূতের গলির রূপায়ণ নামে ছিল সেই বাড়ি। সুবর্ণা জানান, বাড়িটি সে সময় অনেকের কাছে ভূতের বাড়ি হিসেবে পরিচিত ছিল। অনেক বড় এই বাড়ির সামনে ছিল বড় একটি বাগান। একটি হিন্দু পরিবার থেকে বাড়িটি কেনা হয়েছিল। সেই বাড়ির সামনে তোলা ছবিতে ছোট্ট সুবর্ণা মুস্তাফা
ছবি : সংগৃহীত
৩ / ১০
অভিনয় আর মিষ্টি হাসিতে কয়েক প্রজন্মের দর্শকের ভালোবাসা অর্জন করেছেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। এই প্রজন্মের অনেক অভিনেত্রী তাঁকে আদর্শ মানেন। এই অভিনয়শিল্পী বাবার দেখানো পথে হেঁটে নিজেও হয়েছেন বরেণ্য
৪ / ১০
সুবর্ণা মুস্তাফার বয়স যখন পাঁচ-ছয় বছর, ঠিক তখনই মা হোসনে আরা মুস্তাফার মাধ্যমে বেতারের নাটকে অভিষেক ঘটে তাঁর। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি প্রথম টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৭১ সালের আগপর্যন্ত তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে নিয়মিত টেলিভিশনে কাজ করেছেন
ছবি : সংগৃহীত
৫ / ১০
১৯৭৫ সালে সুবর্ণা মুস্তাফা ঢাকা থিয়েটারে ভর্তি হন। তখন মহড়া হতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে
ছবি : প্রথম আলো
৬ / ১০
‘ঘুড্ডি’ সিনেমার গানের দৃশ্যে রাইসুল ইসলাম আসাদ ও সুবর্ণা মুস্তাফা। ১৯৮০ সালের ১৯ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকীর ‘ঘুড্ডি’ চলচ্চিত্র দিয়ে প্রথম বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে সুবর্ণা মুস্তাফার। সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকী পরিচালিত এই ছবি নিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, ‘ঘুড্ডি হচ্ছে সময়ের আগে নির্মিত একটি ছবি।’ এই ছবিতে সুবর্ণার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন রাইসুল ইসলাম আসাদ
ছবি : সংগৃহীত
৭ / ১০
মায়ের সঙ্গে সুবর্ণা মুস্তাফা। স্কুল–কলেজের পাট চুকিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। সে সময়ের কথা মনে করে সুবর্ণা বলেন, ‘আমাদের সময় তো ইউনিট ছিল না। যে বিভাগে পড়ব, সে বিভাগে পরীক্ষা দিতে হতো। আমি একটা বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলাম, ইংরেজি। এই বিশ্ববিদ্যালয়জীবন আমার জীবনের সেরা সময়। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ অনেক ধরনের আন্দোলনে ক্যাম্পাস তখন মুখর। ফলে সমাজ, দেশ, রাজনীতি—সবকিছুর সঙ্গে সম্পৃক্ততা তৈরি হয়ে যায়। আর সব বিভাগে একেকজন দিকপাল শিক্ষক। আমাদের বিভাগে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী থাকলে বাংলায় আছেন আনিসুজ্জামান—তাঁদের দেখে বড় হওয়া। কবীর চৌধুরী, খান সারওয়ার মুরশিদ, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম—তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেছি
ছবি : সংগৃহীত
৮ / ১০
‘ঘুড্ডি’ দিয়ে সিনেমায় অভিষেক ঘটা সুবর্ণা মুস্তাফা এরপর আরও বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এসবের মধ্যে আছে ‘লাল সবুজের পালা’, ‘নতুন বউ’, ‘নয়নের আলো’, ‘সুরুজ মিয়া’, ‘একা একা’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘কমান্ডার’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘ফাঁসি’, ‘আঁখি ও তার বন্ধুরা’ ‘গহীন বালুচর’ ও ‘গণ্ডি’। ‘নতুন বউ’তে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে পার্শ্বচরিত্র বিভাগে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সুবর্ণা মুস্তাফা সেই পুরস্কার গ্রহণ করেননি। কারণ, ওই সিনেমায় তিনি ছিলেন নাম ভূমিকায়। ২০১৯ সালে তাঁর হাতে ওঠে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘গহীন বালুচর’ সিনেমায় অসাধারণ অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে এই পুরস্কার অর্জন করেন। একই বছর বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদক প্রদান করে। গহীন বালুচর ছবিতে সুবর্ণা মুস্তাফা।
ছবি : সংগৃহীত
৯ / ১০
আশির দশকে চলচ্চিত্রে সুবর্ণা মুস্তাফার জনপ্রিয়তা ‘ঘুড্ডি’ দিয়ে শুরু হলেও টেলিভিশন নাটকে তিনি জনপ্রিয়তা পান নব্বইয়ের দশকে এসে। নন্দিত লেখক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে বরকত উল্লাহ পরিচালিত ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটক দিয়ে আলোচনায় আসেন সুবর্ণা। এরপর অভিনয় করেছেন ‘আজ রবিবার’-এর মতো কালজয়ী ধারাবাহিক নাটকে। পরে তাঁকে ‘ডলস হাউজ’, ‘সীমান্ত’, ‘উপসংহার’, ‘গহীনে’, ‘গ্রন্থিকগণ কহে’, ‘এলেবেলে’, ‘কোমল বিবির অতিথিশালা ও কানা সিরাজউদ্দৌলা’, ‘পিঞ্জর’, ‘ঘোড়ার চাল আড়াই ঘর’ এবং ‘অন্তর্যাত্রা’ টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয়ে দেখা গেছে। ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের একটি দৃশ্য সুবর্ণা মুস্তাফা ও আসাদুজ্জামান নূর
ছবি : সংগৃহীত
১০ / ১০
ব্যক্তিজীবনে সুবর্ণা মুস্তাফা প্রথম বিয়ে করেছিলেন বরেণ্য অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে। দীর্ঘ ২২ বছর সংসার করে ২০০৮ সালে এসে আলাদা হয়ে যান তাঁরা। এরপর নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদকে বিয়ে করেন সুবর্ণা মুস্তাফা
ছবি : সংগৃহীত