যার পেছনে যত বেশি মানুষ জড়ো হবে, সে বিশেষ কৃতী ও অতি গুণধর বলে প্রমাণিত স্বীকৃত হয়...

আফজাল হোসেনছবি : প্রথম আলো

নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর অপমৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর ‘আত্মহত্যা’ নিয়ে আলোচনা হয় অন্তর্জালে। এমনকি ঘটনাটি অতিরঞ্জিত করে কেউ কেউ তুলে ধরেছেন। ‘কে কত বেশি ভাইরাল হতে পারে—এমন প্রতিযোগিতায় মেতে উঠছিলেন কেউ কেউ’ সেসব নিয়ে আজ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন গুণী অভিনেতা আফজাল হোসেন। একজন অভিনেত্রীর আত্মহত্যার কথা বললেও তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি।

আফজাল হোসেন
ছবি : প্রথম আলো

এই অভিনেতা তাঁর স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘একটা মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। মেয়েটা অভিনয় করত। যে মেয়ে অভিনয় করে, নাচে, গায় বা নিজ যোগ্যতায় অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে কাজ করে এই দেশ ও সমাজে তাঁর বা তাঁদের মতোদের দোষের শেষ নেই। গুণে ভরা, পবিত্র, সাধু মানুষ তারাই—যারা দোষ আবিষ্কার করে বেড়ায়। জগতে এক নতুন প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে—বাজার গরম করে রাখা। কে কত বেশি গরম করতে পারে, তার প্রতিযোগিতায় তুমুল মেতে রয়েছে মানুষ, দেশ এবং বিশ্ব। যার পেছনে যত বেশি মানুষ জড়ো হবে—সে বিশেষ, কৃতী ও অতি গুণধর বলে প্রমাণিত স্বীকৃত হয়। তার, তাদের জন্য পুরস্কারেরও বন্দোবস্ত আছে।’

বর্তমান সময়ে নিজেকে জাহির করতে অনেকেই বিশেষভাবে সামনে আসছেন। যাঁরা ভালো–মন্দ অনেক কিছুরই বাছবিচার করছেন না। তাঁদের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এই প্রসঙ্গে আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘কে কী কাণ্ড করে মানুষ জড়ো করছে—তা দেখার বিষয় নয়। যা খুশি করে লক্ষ লক্ষ মানুষের মাথা জোগাড় করো, মাথা গুনেই প্রমাণ মিলবে—তুমি একজন শ্রেষ্ঠ, বিশেষ। এমন আজগুবি রীতিতে আপত্তি ওঠে না। চারদিকে শ্রেষ্ঠ আর বিশেষের ছড়াছড়ি, আপত্তি জানিয়ে মান–সম্মান খোয়াতে চায় না কেউ।’

আফজাল হোসেন
ছবি : প্রথম আলো

‘উচিত কর্ম, ভালো কিছুর চর্চা, প্রশংসা ইত্যাদি সবার জন্য সহজ নয়, কিন্তু উল্টোটা অধিকাংশের জন্য সহজ’ মনে করেন আফজাল হোসেন। তারপরও কিছু মানুষের এই অসম্পূর্ণতা একসময় গুণ হয়ে উঠবে। সেই গুণের ঠ্যালায় মানুষ হয়ে উঠবে খ্যাতিমান, প্রশংসিত ও আলোচিত ভাবা যায় না—উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেন, ‘কোনো মানুষের আত্মহত্যার খবর শুনে শিউরে ওঠার বদলে একদল মানুষ দুঃখিত না হয়ে আইনস্টাইনীয় আনন্দে পেয়েছি—তা সুস্থতা নয়। ধর্মে বলা আছে, মানুষ সম্পর্কে মন্দ বলো না। আমরা মৃত সম্পর্কে মন্দ বলতেও ছাড়ি না। সংবেদনশীলতা না থাকা মানুষের কাছে জীবিত ও মৃতের পার্থক্য নেই।’