৬ মাসে ১৮ কেজি ওজন কীভাবে কমালেন বাঁধন
‘৭৮ কেজি থেকে ৬০ কেজি—এই পথ এতটা সহজ ছিল না। মানসিক স্বাস্থ্যের লড়াই, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে অভ্যস্ত, আর জিনগত বৈশিষ্ট্য, যার কারণে ওজন বাড়া ছিল খুবই সহজ—সবকিছু মিলিয়ে এই সংগ্রাম ছিল বাস্তব ও কঠিন।’ ৬ মাসে ১৮ কেজি ওজন কমানোর গল্পটা এভাবেই নিজের ফেসবুকে তুলে ধরলেন আজমেরী হক বাঁধন। নিজের ফেসবুকে রোববার সকালে বাড়তি ওজন থাকার সময় আর ওজন কমার পরের একাধিক স্থিরচিত্র পোস্ট করেছেন। দুই সময়ের তোলা স্থিরচিত্রে পরিষ্কার ওজন কমার বিষয়টি।
প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে গত মাসের প্রথম দিকে বাঁধন জানান, হঠাৎ খেয়াল করেন, তাঁর ওজন বেড়ে ৭৮ কেজিতে গিয়ে ঠেকেছে। ওজন বাড়ার কারণে চিন্তা বাড়ে। এরপর সিদ্ধান্ত নেন, ওজন আর বাড়তে দেওয়া যাবে না। এটাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। শুরু হয় মিশন। সেই মিশনে মোটামুটি সফল হয়েছেন বাঁধন। তবে সময় লেগেছে ছয় মাস। ওই সময়টায় বাঁধনের ওজন ৬১ কেজি। যেকোনোভাবে ৬০ কেজিতে আনার লক্ষ্য ছিল। আজ জানালেন, ‘তা সম্ভব হয়েছে।’
বাঁধন তাঁর ওজন কমানোর প্রসঙ্গ এনে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ওজন কমানো আমার জন্য ওজন বাড়ানোর চেয়েও বেশি কঠিন ছিল। তবু সঠিক চিকিৎসা-পরামর্শ, শৃঙ্খলা এবং নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে মাত্র ৬ মাসে আমি ১৮ কেজি ওজন কমাতে পেরেছি। আমার সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল আমার মেয়ে। সে আমাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে উৎসাহ দিয়েছে, জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে রেখেছে, আর প্রতিদিন নিঃশর্তভাবে আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে। এটা শুধু ওজন কমানোর গল্প নয়—এটা সুস্থ হয়ে ওঠার, শক্ত হয়ে দাঁড়ানোর এবং নিজের প্রতি সম্মান ফিরে পাওয়ার গল্প। কৃতজ্ঞ। আরও শক্তিশালী। এগিয়ে চলেছি।’
ওজন বাড়ার প্রসঙ্গে বাঁধন প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, মাঝে চার বছর একটি প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের শুরুতে সেই প্রেমের সম্পর্কটা ভেঙে যায়। এরপর সেই বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাঁধনকে বেশ সোচ্চার দেখা যায়। প্রেমের সম্পর্কে ভাঙন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে বাঁধন মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েন। ওই সময়টায় তাঁর ওজন বাড়তে থাকে।
সেই সময়ের কথা মনে করে বাঁধন বললেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও আমার ব্রেকআপ—সব মিলিয়ে অন্য রকম একটা জীবন। আমার আবার ওভার ইটিং ডিজঅর্ডার আছে। যখন খাই, প্রচুর খাই। এই প্রচুর খাওয়ার কারণে ওজন বাড়তে থাকল। প্রায় ১৭ কেজি ওজন বেড়ে যায়। অনেক দিন ধরেই বাড়ছিল, কিন্তু কমাতে পারছিলাম না। খেয়েই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ মনে হলো যে আসলে ওজনটা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। কারণ, কাজও ছিল না। সামনের নির্বাচনের পর কয়েকটা কাজের ব্যাপারে কথাবার্তা হচ্ছে, যেগুলোর প্রস্তুতি নেওয়ারও একটা ব্যাপার আছে। তাই ওজন কমানোটা খুবই জরুরি হয়ে পড়ে।’