হঠাৎ করে লুক চেঞ্জ ও পুরো বিষয়টা তাদের ভালো লাগছে

ভারতের জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার্স’ দিয়ে সবার কাছে পরিচিতি পান জামিল হোসেন। এর পর থেকে অভিনয়েও নিয়মিত হন তিনি। গানও প্রকাশ করেছেন। এবার রোমান্টিক ধাঁচের একটি গান প্রকাশ করলেন তিনি। শিগগিরই আরও গান প্রকাশ করবেন। এদিকে ঈদে তাঁর দেড় ডজন নাটক প্রচারিত হতে পারে। এসব নানা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদন।

প্রথম আলো:

‘আনমনে’ গানটি প্রকাশের পর পরিচিতিজনদের কাছ থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?

জামিল হোসেন : গানের ভিডিও দেখার পরবেশির ভাগ পরিচিতজনের  প্রথম কথাটা এমন, ‘তোকে তো দেখতে হিরোর মতো লাগছে।’ এত দিন তাঁরা সবাই নাটকে আমাকে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দেখেছেন, এবারই প্রথম নায়ক হিসেবে দেখলেন। আমার বন্ধুবান্ধবরা সবাই রোমান্টিক লুকে এমন ভিডিওতে দেখে অবাক। হঠাৎ করে লুক চেঞ্জ ও পুরো বিষয়টা তাদের ভালো লাগছে।

আরও পড়ুন

প্রথম আলো :

লুক নিয়ে নাহয় বলছেন। গান নিয়ে কী বলছেন?

জামিল হোসেন : আমি সাধারণত এ ধরনের গান করি না। যা–ই করেছি, লোকগান করি বা একটু মজার গান করি। এসব থেকে বের হয়ে রোমান্টিক মৌলিক গান! ফেসবুক, ইউটিউবের পাশাপাশি পরিচিতজনদের অনেকের মন্তব্য এমনও পেলাম যে কণ্ঠটা তাহসান ভাইয়ের মতো। আমি নাকি শুধু গানের ভিডিওতে মডেল হয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা, পরিবর্তনটা শ্রোতাদের কাছে ভালো লাগছে। এটাই আমার ভালো লাগার। বেশির ভাগ মানুষের মন্তব্য ইতিবাচক। সবাই আমার কাছ থেকে আরও নতুন নতুন গানের আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমারও সে প্রস্তুতি আছে। শেষ গান প্রকাশ করেছি বছরখানেক আগে, নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষার সেই গান ছিল ‘আঁই হেতিরে ভালোবাসি’। আগামী পয়লা বৈশাখে একটা গান প্রকাশ করব। এখন নিয়মিত টুকটাক গান করতে চাই।

জামিল হোসেন। ছবি: ফেসবুক থেকে
প্রথম আলো:

গানে হাতখড়ি কীভাবে?

জামিল হোসেন : আমার বাবা হাসমত উল্লাহ সিলেট বেতারের তালিকাভুক্ত কাওয়ালিশিল্পী ছিলেন। আমি বলছি ৯০ সালের ঘটনা। বাবার হাত ধরে আমিও বেতারে যেতাম। রেওয়াজ করতাম। তিনিই আমার প্রথম ওস্তাদ। তিনি নিজেকে কাওয়াল হাসমত উল্লাহ বলতে পছন্দ করতেন। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমার বাবা ১৯৯৫ সালে মারা যান। তিনি আমার গান প্রকাশের ব্যাপারটা দেখে যেতে পারেননি।

জামিল হোসেন। ছবি: ফেসবুক থেকে
প্রথম আলো:

বাবা কি চাইতেন যে আপনি গান করেন?

জামিল হোসেন : তিনি সব সময়ই চাইতেন যে আমি যেন গান করি। তাই তো বাবা যখনই গাইতেন, আমাকে পাশে নিয়ে বসতেন। মজার বিষয় হচ্ছে, বাবা আমাকে হারমোনিয়াম শেখাতে গিয়ে সা রে গা মা পা পর্যন্ত শিখিয়েছিলেন। এরপর আমি আর এগোতে পারিনি। কারণ, আমার সব সময় গিটারের প্রতি ঝোঁক ছিল। গিটার শিখতে চাইতাম। শিখেছিও। সিলেটের উজ্জ্বল ভাই, সালাম ভাই—এই দুজনের কাছ থেকে গিটার শিখেছি।

জামিল হোসেন। ছবি: ফেসবুক থেকে

প্রথম আলো :

নাটকের ব্যস্ততা কেমন, সামনে তো ঈদ!

জামিল হোসেন : সত্যি বলতে নাটকের শুটিং নিয়ে প্রচুর ব্যস্ততা। পুবাইলে আজও (রোববার) একটি নাটকের শুটিং করছি। ‘সম্পত্তির ভাগ’ নামের এই নাটক বিদ্যুৎ রায়ের লেখা, জুলফিকার শিশিরের পরিচালনা। ঈদে আসবে। এর বাইরে সব মিলিয়ে ১৫টির বেশি নাটক প্রচারিত হবে।

প্রথম আলো:

এসব নাটকের গল্পের ধরন কেমন?

জামিল হোসেন : আমার গল্পগুলোর প্রতিটিতে একটা বার্তা থাকে। গ্রামের সহজ–সরল গল্প আর বিনোদনের মাধ্যমে সব সময় বার্তা দেওয়ার চেষ্টা থাকে। আমাদের সমাজের চারপাশের বাস্তবতাই গল্পে তুলে ধরা হয়।

প্রথম আলো :

আপনাকে কি এমন কথা শুনতে হয়—চটুল গল্পে কাজ করেন?

জামিল হোসেন : অনেকেই না দেখে মন্তব্য করে ফেলেন। আগে হয়তো কয়েকটা নাটক দেখেছিলেন, সেটার ওপর নির্ভর করে অনুমান করে এসব কথা বলে ফেলেন। আসলে আমার অভিনীত অনেক ভালো গল্পের নাটক অনেকে দেখেননি। যেমন সংসার। অসম্ভব ভালো একটা নাটক। এখন যে ধরনের ট্রেন্ড চলছে, তার থেকে একদমই আলাদা। ‘কুয়োর ব্যাং’, যদিও র ফরম্যাটের গল্প, একেবারে অন্য রকম। যেগুলো দেখলে মানুষ সহজেই যুক্ত হতে পারেন। আমার জায়গা থেকে আসলে আমার মতো বার্তানির্ভর কাজ করছি। দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এমনটা করি। আমি একজন শিল্পী, আমার নাটক যাঁরা দেখেন, তাঁরা কোথাও না কোথাও যদি একটু যুক্ত হতে পারেন, এটাই আমার সন্তুষ্টি। আমি মনে করি, এটাই করা উচিত।