আমি ছায়ার মতো, সংসারে এক সন্ন্যাসী, বিবাহবার্ষিকীতে আফজাল হোসেন

দাম্পত্যজীবনের ৩২ বছর পার করেছেন গুণী অভিনেতা, নির্দেশক ও চিত্রকর আফজাল হোসেন। একসঙ্গে পথচলার শুরু থেকে স্ত্রী তাজিন হালিম এই অভিনেতার জীবনের সব ক্ষেত্রে নানাভাবে জড়িয়ে আছেন। সংসার, সন্তানদের সামলানো থেকে শুরু করে পরিবারের সব দায়িত্ব তিনি পালন করে চলেছেন।

আফজাল হোসেন ও তাজিন হালিম
ছবি : সংগৃহীত

অভিনয় ও অন্যান্য ব্যস্ততার কারণে সংসারে সময় দিতে পারেননি আফজাল হোসেন, অকপটে তা স্বীকারও করেন। দাম্পত্যজীবনের ৩২ বছরে নিজের উপলব্ধির কথা জানিয়েছেন এই অভিনয়শিল্পী। তিনি বলেন, ‘পূর্ণ হলো ৩২ বছর। পেয়েছি কী আর পাওয়া হয়নি কী—কখনো, কোনো দিন সে হিসাব করতে বসিনি। জগতে বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’

কনের বেশে আফজাল হোসেনের স্ত্রী তাজিন হালিম
ছবি : আফজাল হোসেনের সৌজন্যে

পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে সাতক্ষীরার পারুলিয়াতে জন্মগ্রহণ করা আফজাল হোসেন ১৯৯২ সালের ৯ আগস্ট তাজিন হালিম মনাকে বিয়ে করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় পড়েছেন। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থিয়েটারে অভিনয় শুরু। পরে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তালিকাভুক্ত হন। অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করেন। আশির দশকে বাংলাদেশের নাটকে সুবর্ণা-আফজাল জুটি বিশেষ দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেন। অভিনয় করেন ‘দুই জীবন’, ‘নতুন বউ’ ও ‘পালাবি কোথায়’–এর মতো সিনেমায়। ১৯৮৪ সালে তিনি বিজ্ঞাপন নির্মাণে যুক্ত হন। এ ছাড়া নাটক পরিচালনায়ও নিয়মিত পাওয়া যায় তাঁকে। লেখালেখিতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বেশ কিছু বইও।

আরও পড়ুন
বরের সাজে আফজাল হোসেন। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে সাতক্ষীরার পারুলিয়াতে জন্মগ্রহণ করা আফজাল হোসেন ১৯৯২ সালের ৯ আগস্ট তাজিন হালিম মনাকে বিয়ে করেন

দাম্পত্যজীবনের ৩২ বছর পূর্ণ করার এই সময়ে লেখালেখি ও ছবি আঁকা আর ভালো লাগার ব্যাপারটিও উঠে এসেছে। আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমার লিখতে ভালো লাগে, ভালো লাগে দুনিয়া ভুলে আঁকতে। আবার কখনো কিচ্ছু না করে ভাবনায় ডুবে সাঁতরাতে ভালো লাগে। মন চাইলে গান শুনি, পড়ি, দেখি—মন আমাকে যখন যা বলে, শুনি। মাথা খাটিয়ে, লক্ষ্য ঠিক করে কোনো কিছুতে ঝাঁপিয়ে পড়া ধরনের নই আমি।’

আরও পড়ুন

কথায় কথায় আফজাল হোসেন বলেন, ‘ভুল বা ঠিক—যেটাই হোক, আমি মানুষটা যেমন ছিলাম, তেমনভাবেই জীবন কাটাতে পারলাম, আমাকে আমার মতো থাকতে দেওয়া হলো—এর চেয়ে বেশি কোনো চাওয়া থাকতে পারে না। আমার ইচ্ছায় সঙ্গীকে কি তার জীবন বদলাতে হয়েছে? এক শব্দে উত্তর হচ্ছে—না। আমাদের সংসারে আমার তেমন ভূমিকা নেই। তার জন্য গোপনে সে দীর্ঘশ্বাস ফেললে—৩২ বছরে একটু হলেও টের পেতাম। আমরা ভালো আছি। সে জানে, সবকিছুই তার—আমি ছায়ার মতো, সংসারে এক সন্ন্যাসী। এমন জীবন উপভোগে প্ররোচনা দেওয়ার জন্য সঙ্গীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সেলিম আল দীনের লেখা একটা সংলাপ, “বেঁচে থাকাটা বড় কথা নয়, কীভাবে বেঁচে আছি, সেটাই বড়।”’

আরও পড়ুন