মুনিয়া ভাবি, প্রিয়ন্তী-অয়ন আর অবন্তীর ‘সিটি লাইফ’
শহরের ব্যস্ততা, সম্পর্কের টানাপোড়েন, অভ্যাসে বদল, জীবনযাত্রায় জটিলতা—সব মিলিয়ে এক ‘সিটি লাইফ’-এর গল্প। মাছরাঙা টেলিভিশনের আলোচিত ধারাবাহিক নাটক ‘সিটি লাইফ’ স্পর্শ করছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক—২০০তম পর্ব।
প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় প্রচারিত নাটকটির ২০০তম পর্ব সম্প্রচারিত হবে ১৯ জুন বৃহস্পতিবার। নাটকটি রচনা করেছেন শাহরিয়ার তাসদিক, পরিচালনায় রয়েছেন নজরুল ইসলাম।
নাটকে অভিনয়ে আছেন এফ এস নাঈম, তানজিকা আমিন, নিশাত প্রিয়ম, পাভেল, তানজিম হাসান অনিক, মুকিত জাকারিয়া, মিলি বাসার, আবদুল্লাহ রানা, শামীমা নাজনীনসহ আরও অনেকে।
নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র মোর্শেদ মাহমুদ। গ্রামে জমি বিক্রি করে স্ত্রী রেনু ও সন্তানদের নিয়ে চলে এসেছেন ঢাকার একটি ফ্ল্যাটে। তাদের যুক্তি—শহরই ভবিষ্যৎ, গ্রামে থেকে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। সন্তানদের আধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে।
শহরের এই জীবনযাত্রা যদিও প্রাথমিকভাবে মনে হয় নতুন সম্ভাবনার দ্বার, ধীরে ধীরে সেটাই পরিণত হয় টানাপোড়েন আর সংশয়ের কেন্দ্রে। পাশের ফ্ল্যাটের মুনিয়া ভাবি প্রথম থেকেই বাড়িতে নিয়মিত যাওয়া-আসা শুরু করেন। অতিরিক্ত আগ্রহ ও ‘সহানুভূতি’ একসময় রেনুর মনে সন্দেহের জন্ম দেয়—মুনিয়ার স্বামী বিদেশে, তাহলে কি তিনি মোর্শেদের প্রতি অন্য রকম আগ্রহী?
মোর্শেদ সাহেবের তিন সন্তান—প্রিয়ন্তী, সোহান ও অবন্তী। বড় মেয়ে প্রিয়ন্তী প্রেমে পড়ে প্রভাবশালী ব্যক্তির ছেলে অয়নের। সম্পর্কের ভিত্তি ভালোবাসার চেয়ে নিরাপত্তা—অয়ন প্রভাবশালী, তাই তার পাশে থাকলে অন্য কেউ বিরক্ত করবে না।
ছেলে সোহান শহরে এসে বদলে যায় দ্রুত। বন্ধুবান্ধব, পার্টি, প্রেম—সবই তার কাছে নতুন রোমাঞ্চ। রাত করে ফেরা, দায়িত্বহীনতা মা–বাবার চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ছোট মেয়ে অবন্তীই সহজ-সরল, পরিবারের আস্থার জায়গা। রাকিব নামের এক তরুণ পছন্দ করে অবন্তীকে, তবে অবন্তী উদাসীন। মা–বাবা নিশ্চিত ছিলেন, অবন্তীকে নিয়ে অন্তত কোনো বিপদ হবে না।
কিন্তু নাটকের মোড় ঘুরে যায়। যে মেয়েকে তারা সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভেবেছিলেন, সেই অবন্তীই একদিন হয়ে ওঠে পরিবারের সবচেয়ে বড় বিপদের কারণ। নাটকে এখানে তৈরি হয় জটিল এক দ্বন্দ্ব ও রুদ্ধশ্বাস নাটকীয়তা।
নগরজীবনের জটিল বাস্তবতা, সম্পর্কের সূক্ষ্মতা, মধ্যবিত্ত পরিবারের আকাঙ্ক্ষা আর সমাজের ভাঙাগড়াকে ঘিরে নির্মিত ‘সিটি লাইফ’ নাটকটি বাস্তবমুখী গল্প বলার জন্য দর্শকেরা পছন্দ করেছেন বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা। নির্মাতার ভাষ্যে, নাটকটিতে নগরের নাগরিক জীবনের ‘ছায়া’যেন দেখা যায় পর্দায়। গ্ল্যামার নয়; বরং পরিচিত মুখ, পরিচিত টানাপোড়েন, চেনা শব্দ আর বাস্তব সংকটই যেন হয়ে উঠেছে নাটকটির প্রধান আকর্ষণ। নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি বাস্তবতাকে নাট্যরূপ দিতে। দর্শক যতটা পরিচিত হবেন চরিত্রগুলোর সঙ্গে, ততটাই আবেগ জুড়ে থাকবে গল্পের মোড় ঘোরার সময়। সেটাই আমাদের শক্তি।’
নির্মাতা জানিয়েছেন, ২০০তম পর্বে এসে নাটকটি আরও নাটকীয় মোড়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। অবন্তীকে কেন্দ্র করে নতুন একটি বড় ঘটনা উন্মোচিত হবে, যা দর্শকদের মধ্যে তৈরি করবে প্রশ্ন, বিস্ময় এবং প্রতীক্ষা নতুন অধ্যায়ের।