পরমব্রতকে নিয়ে সাধারণ ডায়েরি, ভুল–বোঝাবুঝির অবসান

অভিনয়শিল্পী পরমব্রত
ছবি: সংগৃহীত

পর্যটন ভিসায় বাংলাদেশে এসে অভিনয় করছেন, গানের অনুষ্ঠান করছেন—এমন অভিযোগ প্রায়ই উঠে ভারতীয় অনেক শিল্পীর বিরুদ্ধে। এমনই এক ইস্যুতে ২০১৭ সালে ভারতীয় অভিনয়শিল্পী পরমব্রতর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয় বলেও খবর ছড়ায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের শিল্পীদের মধ্যেও ভুল–বোঝাবুঝি তৈরি হয়। টেলিভিশন নাটকের বৃহত্তর সংগঠন ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশান (এফটিপিও) নেতাদের মতে, আদতে এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি। পরমব্রতর বিরুদ্ধে কখনোই কোনো সাধারণ ডায়েরি হয়নি। সাধারণ ডায়েরি হয়েছিল পরমব্রতকে যে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে নিয়ে এনেছিল, ক্যানডি প্রোডাকশন লিমিটেড নামের সেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি শাহরিয়ার শাকিলের বিরুদ্ধে।

মামুনুর রশীদ
প্রথম আলো

এফটিপিও নেতারা ও দেশের বিশিষ্ট নাট্যজন মামুনুর রশীদ এবং অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক গাজী রাকায়েত স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে আমাদের নাটক, চলচ্চিত্র প্রচার হওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারতের দর্শক পরিধি বেড়েছে এবং দুই দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের মধ্যেও কাজের পরিধি বেড়েছে—যা খুবই আশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশের শিল্পীরা পশ্চিমবঙ্গে কাজ করবে, পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা বাংলাদেশে কাজ করবে—এতে আমাদের পেশাজীবী সংগঠনের কোনো দ্বিমত নেই, এটা আমরা সব সময় চেয়ে আসছি এবং ভবিষ্যতেও চাই। কিন্তু ২০১৭ সালের একটি সাধারণ ডায়েরিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়, যা এখনো অনেকের মধ্যে বিরাজমান। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, এই ধরনের কিছু কখনোই ঘটেনি। সঠিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে আন্তর্দেশীয় সংস্কৃতি বিনিময় আরও জোরালো হোক। জয় হোক শিল্পের, জয় হোক শিল্পীর, জয় হোক সংস্কৃতির।

দুই দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের মধ্যকার ভুল–বোঝাবুঝির অবসানের লক্ষ্যে বুধবার ঢাকার নিকেতন এলাকায় এফটিপিও কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় নাটকের বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনের (এফটিপিও) চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ, টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সভাপতি মনোয়ার পাঠান, অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব এবং অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক গাজী রাকায়েত।

গাজী রাকায়েত
ছবি: সংগৃহীত

২০১৭ সালের কথা উল্লেখ করে গাজী রাকায়েত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের অভিযোগ কোনো ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে ছিল না, ছিল পুরো সিস্টেমের বিরুদ্ধে। আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম, দেশের বাইরের শিল্পীরা পর্যটন ভিসায় এখানে এসে শুটিং করেন। বাংলাদেশের যেসব প্রতিষ্ঠান দেশের বাইরের শিল্পীদের এনে কাজ করছিল তারাও আমাদের যে সংগঠনগুলো আছে, তাদের সঙ্গে কোনো আলাপ–আলোচনা করছিল না। বলা যায়, কোনো নিয়মের তোয়াক্কা তারা করছিল না। অথচ আমাদের শিল্পীরা যখন দেশের বাইরে শুটিং করতে যায়, তখন সব ধরনের অনুমতি নিয়েই কাজ করতে হয়। আমরা যদি নিয়ম মেনে কাজ করি, তাহলে আমাদের দেশে আসা বাইরের শিল্পীরা কেন নিয়ম মানবেন না! মূলত নিয়ম না মানার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে দেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি শাহরিয়ার শাকিলের বিরুদ্ধে এই জিডি করা হয়।’