নবম ও দশম শ্রেণিতে বিভিন্ন পরীক্ষায় ২১ বার ফেল করেছিলেন সালমান মুক্তাদির
শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন একটু আলাদা। পড়াশোনায় কখনোই ছিলেন না প্রথম সারির ছাত্র; বরং ছিলেন সেই ‘দুষ্টু ছেলে’, যাকে স্কুল বদলাতে হয়েছে বারবার। ১২টি স্কুলে পড়েছেন। আর নবম ও দশম শ্রেণিতে বিভিন্ন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন ২১ বার! এইচএসসিতেও দুই বছরে হিসাববিজ্ঞানে অকৃতকার্য হয়েছেন দুইবার! তাঁর ভাষায়, ‘টেনেটুনে পাস করাটাই ছিল সবচেয়ে বড় আনন্দ।’ বলছিলাম ভার্চুয়্যাল দুনিয়ার আলোচিত নাম সালমান মুক্তাদিরের কথা।
২০১২ সাল। অনলাইন কনটেন্ট তখনো অনেকের কাছে ‘অবাস্তব’ স্বপ্ন। সেই সময় নিজের নোকিয়া এন৯৫ দিয়ে গিটার বাজিয়ে ভিডিও বানিয়ে আপলোড করলেন ইউটিউবে। ইউটিউব চ্যানেলের নাম দিলেন ‘সালমান দ্য ব্রাউনফিশ’। এই ‘ব্রাউনফিশ’ নামটিরও রয়েছে একটি মজার ইতিহাস।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির এক শিক্ষিকা তাঁকে মজা করে বলেছিলেন, ‘তুমি যদি ব্রাউন (বাদামি) জাতিগোষ্ঠীর হও, তাহলে তোমার নাম হওয়া উচিত “সালমান দ্য ব্রাউনফিশ”।’ সেখান থেকেই এসেছে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের এই নাম।
ভিন্নরকম চিন্তাধারার কনটেন্ট আর খোলামেলা কথাবলার কারণে সালমান মুক্তাদির দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তরুণদের কাছে। তাঁর মায়ের সঙ্গে মজার ভিডিওগুলো যেমন ইউটিউব দর্শককে হাসিয়েছে, তেমনি সালমান বারবার তাঁর করা ভিডিওতে দেখিয়েছেন একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর শুধু বিনোদন নয়, পারে কনটেন্টের মাধ্যমে দর্শকদের ভাবতে ও শেখাতেও।
যদিও প্রথম দিকে কোনো বিষয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে ভয় পেতেন সালমান। এ নিয়ে তাঁর মধ্যে হতাশাও কাজ করত। তবে একটা সময় গিয়ে উপলব্ধি করেন, তাঁর একটি প্ল্যাটফর্ম যখন আছে, তখন কথা বলাটাও তাঁর দায়িত্ব। তবে পথটা সহজ ছিল না। ধর্ম, রাজনীতি বা সামাজিক ‘নীতি-নৈতিকতা’ নিয়ে খোলাখুলি কথা বলায় তাঁকে পড়তে হয়েছে তীব্র সমালোচনার মুখে। বিতর্ক আর সমালোচনাকে সঙ্গী করেই সামনে এগিয়েছেন। কখনো চুপ থাকেননি। বই লেখার পর তাঁর বিরুদ্ধে প্রচুর নেতিবাচক মন্তব্য হয়েছিল। তবে বইটি পড়ার পর অনেকের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়।
সালমান মুক্তাদিরের মতে, একজন তারকার নিখুঁত জরুরি নয়। যতক্ষণ কারও ক্ষতি করা না হয়, ততক্ষণ নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করাই যায়। ভুল করলে তা স্বীকার করে নেওয়াই উত্তম এবং ক্ষমা চাওয়াকে লজ্জার কিছু হিসেবে দেখা উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি।