স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে সারিকার যৌতুকের মামলা

নির্যাতনের অভিযোগে মডেল, অভিনেত্রী ও উপস্থাপিকা সারিকা সাবরিন তাঁর স্বামী জি এস বদরুদ্দিন আহমেদ রাহীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আজ সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবার আদালতে সারিকা সাবরিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। প্রথম আলোকে আজ সোমবার দুপুরে খবরটি নিশ্চিত করেছেন বাদী সারিকা সাবরিন।
সারিকা সাবরিন চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন রাহীকে, যিনি পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। পারিবারিকভাবে বিয়ের কাজটি সেরে নেওয়ার কারণে তখন বিনোদন অঙ্গনে তাঁদের বন্ধু-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী কাউকে জানাতে পারেননি। তাই গেল অক্টোবরে ঢাকার মহাখালীর একটি কনভেনশন সেন্টারে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সারিকা। জাঁকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করা সেই বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উভয় পরিবারের ঘনিষ্ঠজনেরা ছাড়াও বিনোদন অঙ্গনের অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনের মাসখানেকের মাথায় নির্যাতনের অভিযোগে মামলার এ খবরটি এল। সারিকা জানালেন, বেশ কিছুদিন ধরে তিনি স্বামীর কাছ থেকে দূরে আছেন। মা–বাবার সঙ্গে থাকছেন। বাধ্য হয়েই তিনি মামলা করেছেন বলে জানালেন।

সারিকা সাবরিন ও আহমেদ রাহি

মামলার আরজিতে তিনি দাবি করেছেন, ‘গত ২ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে সারিকা ও বদরুলের বিয়ে হয়। বিয়েতে ২০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। বিয়ের সময় সারিকার মা–বাবা বদরুদ্দিনকে ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকারসহ বাসার যাবতীয় আসবাব উপহার হিসেবে দেন। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই আসামি বদরুদ্দিন বাদী সারিকার পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে তাঁকে মারধর করতে থাকেন। ৫ নভেম্বর আসামি বদরুদ্দিন ভিকটিম সারিকার কাছে ৫০ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় সারিকাকে এক কাপড়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ১৯ নভেম্বর ঢাকার ধানমন্ডিতে এ বিষয়ে একটি সালিস বৈঠক হয়। বৈঠকে কথোপকথনের একপর্যায়ে আসামি বলেন যে ব্যবসার জন্য তাঁকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে। দাবি করা টাকা না দিলে সারিকার সঙ্গে সংসার করবেন না এবং তাঁকে তালাক দিয়ে বেশি টাকা যৌতুক নিয়ে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে দ্রুত চলে যান।’

সারিকা সাবরিন
ছবি : সংগৃহীত

প্রথম আলোকে আজ সোমবার সারিকা বলেন, ‘এভাবে তো চলতে পারে না। দিনের পর দিন আমি এটা আর সহ্য করতে পারিনি, তিনি প্রতিটি জিনিসের জন্য আমার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। এমনকি আমাদের বিয়ের খরচও আমি দিয়েছি। একজন মানুষ আর কতটা বহন করতে পারে? আপাতত এর বেশি আর কিছুই বলতে চাই না।’ এ বিষয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে সারিকার স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কারও সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক পছন্দে বিয়ে করেন সারিকা ও রাহী। ওই সময় প্রথম আলোকে সারিকা বলেছিলেন, ‘দুই পরিবারের পছন্দেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। করোনার কারণে বড় পরিসরের অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি, বাসাতেই বিয়ে হয়েছে। বিয়ের দিনটা সুন্দর। দুই দুই বাইশ! দিনটি স্মরণীয়। তার আগে ১২ ডিসেম্বর আমাদের বাগ্‌দান হয়।’

সারিকা সাবরিন
ছবি: ফেসবুক থেকে

এর আগে ২০১৪ সালে মাহিম করিমকে ভালোবেসে বিয়ে করেন সারিকা। বিয়ের দুই বছরের মাথায় তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। ২০০৬ সালে মডেলিং শুরু করেন সারিকা। তারপর একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে রাতারাতি তারকা বনে যান। ২০১০ সালে নির্মাতা আশুতোষ সুজনের ‘ক্যামেলিয়া’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক হয় সারিকার।