‘নরসুন্দরী’ তিশাকে দেখে যা বলছেন দর্শকেরা
চার দিন আগে ইউটিউবে অবমুক্ত হয়েছে তানজিন তিশা অভিনীত নাটক ‘নরসুন্দরী’। নাটকটি অন্তর্জালে আসার পর থেকে প্রশংসিত হচ্ছেন এ অভিনয়শিল্পী। মন্তব্যের ঘরে ঢুঁ মারলে তেমনটি দেখা যায়।
ইউটিউবে মন্তব্যের ঘরে অনেকে নারীপ্রধান এ গল্পে নাটক বানানোর জন্য পরিচালক রাফাত মজুমদারসহ সংশ্লিষ্টদের বাহবা দিচ্ছেন। এতে একজন নাপিতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানজিন তিশা। গ্ল্যামারাস রূপ ভেঙে এমন চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে তাঁর দুর্দান্ত অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক। কেউ বলছেন, এ নাটক তিশার অভিনয়জীবনে অন্যতম মাইলফলক হয়ে থাকবে।
জয় নামের একজন লিখেছেন, ‘জীবনে কত যে যুদ্ধ করে জীবন পরিচালনা করতে হয়। এই ‘নরসুন্দরী’ নাটক তার উদাহরণ। সামাজিক হলেও নাটকটি ছিল দুর্দান্ত বাস্তবমুখী।’ শাহিদা লিখেছেন, ‘নরসুন্দরী চরিত্রে সেই রকম ফেবারিট চমৎকার অভিনয় করেছেন তানজিন তিশা। নাটকটি দেখে অনেক অনেক ভালো লাগল।’
দীপঙ্কর দীপু লিখেছেন, ‘সমাজের বাস্তবধর্মী একটি গল্প “নরসুন্দরী”। আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে, যাদের কারণে মেয়েরা সর্বস্তরে অবহেলিত হয় ও পদে পদে বাধা। সবার অসাধারণ অভিনয়ে মুগ্ধ করেছে গল্পটি।’ সাদ্দাম হোসেন লিখেছেন, ‘দুঃখ–কষ্ট নিয়ে চলা, এরই নাম জীবন। জীবনে চলার পথে কত-না বাধা আসে, যা কাউকে কিছু বলা যায় না, নীরবে দুই চোখে পানি আসে। এ নাটকে বাস্তব জীবনে রূপকথা যেন তুলে ধরা হয়েছে।’
‘নরসুন্দরী’ নাটকের এমন একটি চরিত্রে কাজের ব্যাপারে তানজিন তিশা বলেন, ‘এটি তো অস্বীকার করার উপায় নেই, নারীরা আমাদের সমাজে এখনো পুরোপুরি নিরাপদ নয়। কাজ তো কাজই। নারী-পুরুষ সমানভাবেই করতে পারে সেটা। কিন্তু কোনো কোনো কাজ এ সমাজে এখনো নারীদের জন্য বাধা, মেনে নিতে পারে না। এই যে নাপিতের কাজ নারীরা করতে গেলে সমস্যা। কাজটি করতে গিয়ে পদে পদে বাধা।’ তানজিন তিশার ভাষ্য, ‘“নরসুন্দরী” নাটকটির গল্প আমার কাছে নতুন, এখানে নিজের চরিত্রটিও নতুন। কাজটি আমার ক্যারিয়ারে নতুন কিছু যোগ করেছে। তা ছাড়া নারীদের অধিকার, নারীদের সংগ্রামের গল্প নিয়ে কাজ করতে আমারও খুব ভালো লাগে।’
চরিত্রটির জন্য বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে এই নায়িকার। শুটিংয়ের আগে সেলুনে, রাস্তার ধারের দোকানে গিয়ে চুল কাটা, দাড়ি কামানোর কৌশলগুলো বসে থেকে দেখতে হয়েছে, শিখতে হয়েছে তাঁকে। এ অভিনেত্রী বলেন, ‘শুটিংয়ের আগে মগবাজার, কারওয়ান বাজারে গিয়ে সেলুনে ও রাস্তার ধারের নাপিতের কাছে দু-তিন ঘণ্টা করে বসে থেকে কাজটি দেখেছি। কাঁচি ধরা থেকে শুরু করে দাড়ি কামানোর কৌশল রপ্ত করার চেষ্টা করেছি।’
নাট্যকার আহমেদ তাওকীর জানান, বরিশালের প্রত্যন্ত একটি অঞ্চলে এমন ‘নরসুন্দরী’ দেখেছিলেন তিনি। সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নাটকের গল্পের ভাবনা মাথায় এসেছে। তিনি বলেন, ‘নারী-পুরুষ ভেদাভেদ করে নয়, সমাজ পরিবর্তন করতে হলে প্রয়োজন হয় মানুষের। যেহেতু আমি নতুন নতুন গল্প সাজাই, তাই নিজের গল্প ও কাজের মাধ্যমে সব সময় চেষ্টা করি চারপাশের সত্যিকারের মানুষদের তুলে ধরতে, যারা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
পরিচালক রাফাত মজুমদার রিংকু বলেন, ‘“নরসুন্দরী” প্রচারের পর দর্শকদের ভালোবাসা আমাকে সিক্ত করছে। আসলে ভাইরাল সময়ে এসে সবাই যে ওগুলো পছন্দ করে তা নয়। ভালো কাজের দর্শক কখনো শেষ হয় না, এটার অন্যতম প্রমাণ হচ্ছে “নরসুন্দরী”। মানুষ ভালোবাসা জানাচ্ছেন। সবার অনুপ্রেরণা পেয়ে আরও ভালো কাজের উৎসাহ পাচ্ছি।’