দেড় যুগ পেরিয়ে সিসিমপুর

১৮ পেরিয়ে পা রাখছে ১৯তম বছরে ‘সিসিমপুর’সংগৃহীত

প্রাক্‌-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের শেখাকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্যে ২০০৫ সালে শুরু হয়েছিল ‘সিসিমপুর’। দেখতে দেখতে জনপ্রিয় এই টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি ১৮ পেরিয়ে পা রাখছে ১৯তম বছরে। এ উপলক্ষে সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘তিন থেকে আট বছর বয়সী শিশুর প্রারম্ভিক শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৮ বছর ধরে শিশুতোষ এ অনুষ্ঠান নির্মিত হচ্ছে। আনন্দ আর খেলার ছলে সিসিমপুর ভূমিকা রেখে চলেছে শিশুর সামগ্রিক বিকাশে।’
সিসিমপুর টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুকে বর্ণ চেনানো, শব্দ থেকে বর্ণ চিহ্নিত করা, বর্ণ দিয়ে শব্দ মেলানো, শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করতে সাহায্য করে। চারপাশের পরিবেশ থেকে উপকরণ খুঁজে নিয়ে সেগুলোর মাধ্যমে বর্ণ ও শব্দ চিনতে সাহায্য করে। ভাষা-বর্ণ, গণিত, পরিবেশ ছাড়াও স্বাস্থ্য সুরক্ষার মতো মৌলিক বিষয়গুলো শিশুদের বিনোদন ও খেলার ছলে শেখানো হয়। এর পাশাপাশি সিসিমপুর জেন্ডার–সমতা, সামাজিক মূল্যবোধ, দেশের শিল্প-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ইত্যাদি নানা বিষয় শিশুদের শিখতে সাহায্য করেছে সিসিমপুর।

বর্তমানে টেলিভিশনে সিসিমপুরের ১৫তম সিজনের প্রচার চলছে। সিরিজটির হালুম, ইকরি মিকরি, শিকু, টুকটুকি চরিত্রগুলো শিশুদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। বর্তমান সিজনে যুক্ত হয়েছে ‘জুলিয়া’ নামে একটি নতুন চরিত্র। জুলিয়া অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু। বাংলাদেশের অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুদের প্রতিনিধিত্ব করছে জুলিয়া। জনপ্রিয় অনুষ্ঠানটি শুরু থেকেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১৮ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে প্রচারিত হয়। বর্তমানে দুরন্ত, মাছরাঙা ও বিটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে।

‘শিশুরা হয়ে উঠুক আরও সম্পন্ন, আরও সবল এবং আরও সদয়’—এ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে সিসেমি স্ট্রিটের বাংলাদেশি সংস্করণ ‘সিসিমপুর’।

বর্তমানে টেলিভিশনে সিসিমপুরের ১৫তম সিজনের প্রচার চলছে
সংগৃহীত

শুরু থেকেই ‘ইউএসএআইডি বাংলাদেশ’-এর আর্থিক সহায়তায় নির্মিত হয়ে আসছে জনপ্রিয় এই শিশুতোষ সিরিজ। সিসিমপুর নির্মাণে সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের প্রোডাকশন পার্টনার ধ্বনি–চিত্র লিমিটেড। টেলিভিশনে সিসিমপুরের প্রথম প্রচারের দিন হিসাবে প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল তারিখটিকে ‘সিসিমপুর দিবস’ হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের সব কার্যক্রমই সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় পরিচালিত হয়। গত ১৮ বছরে সিসিমপুর বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে। এ ছাড়া সিসিমপুরের পথচলায় পাশে আছে ইউএসএআইডি বাংলাদেশসহ আরও কিছু দাতা সংস্থা। নিউইয়র্কভিত্তিক সিসেমি স্ট্রিট নামক শিক্ষামূলক টেলিভিশন ধারাবাহিকের সহপ্রযোজনা সিসিমপুরের কার্যক্রম বাংলাদেশে পরিচালনা করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ।