অভিনেতা দিলু আর নেই

মুজিবুর রহমান দিলু
ছবি : ফেসবুক থেকে

মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকের অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলু আর নেই। আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। প্রথম আলোকে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন অভিনেতার ছেলে অয়ন রহমান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার বেলা একটায় দিলুর মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে বেলা তিনটায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁকে নেওয়া হবে শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে। সবশেষে গার্ড অব অনার দিয়ে বনানী কবরস্থানে দিলুকে দাফন করা হবে।

মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকের অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলু
ছবি : ফেসবুক থেকে

গত বুধবার সকালে হঠাৎ মুজিবুর রহমান দিলুর অসুস্থতার খবর পাওয়া যায়। ছেলে অয়ন জানান, তাঁর বাবার ফুসফুসে সমস্যা ধরা পড়েছে। হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দিলু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। উন্নত চিকিৎসা সেবার প্রত্যাশায় উত্তরার ওই হাসপাতালটি বদলে দিলুকে গুলশানের আরেকটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে স্থানান্তর করা হয় হাসপাতালটির আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)। চিকিৎসকের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে আজ মঙ্গলবার ভোরে বিদায় নিয়েছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান দিলু।

বিটিভির বিখ্যাত ‘সংশপ্তক’ নাটকের মালু চরিত্রের কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। যুবক মালুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। টিভি নাটকের আগে থেকেই তিনি মঞ্চে অভিনয় করছিলেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী হন। ১৯৭৬ সাল থেকে টেলিভিশনে নিয়মিত অভিনয় করছেন। অভিমান করে পরে দীর্ঘ সময় অভিনয় থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলেন।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দিলু

মুজিবুর রহমান দিলুর জন্ম ১৯৫২ সালের ৬ নভেম্বর। স্ত্রী রানী রহমান, দুই ছেলে অয়ন রহমান, অতুল রহমান ও এক মেয়ে তানজিলা মুজিবকে নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় বসবাস করতেন তিনি। মুজিবুর রহমান দিলু মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক ‘আমি গাধা বলছি’, ‘নানা রঙ্গের দিনগুলি’, ‘জনতার রঙ্গশালা’, ‘নীল পানিয়া’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘ওমা কী তামাশা।’ বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় নাটক ‘তথাপি’, ‘সময়-অসময়’ ও ‘সংশপ্তক’-এ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন।

২০০৫ সালে গুলেন বারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন কোমায় ছিলেন দিলু। পরে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করেন।