অভিনেতা সেলিম আহমেদ আর নেই

প্রায় ১০ বছর আগে সেলিম আহমেদ অভিনয় শুরু করেন।
ছবি:সংগৃহীত

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় মারা গেছেন অভিনেতা, শিল্পনির্দেশক ও প্রচ্ছদশিল্পী সেলিম আহমেদ। ১৭ ডিসেম্বর হঠাৎ বুকে ব্যথা শুরু হলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। দ্রুত তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। আজ আসরের নামাজের পর ইস্কাটন জামে মসজিদে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

সেলিম আহমেদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম। তিনি সেলিম আহমেদের মগবাজারের বাসা থেকে প্রথম আলোকে জানান, আগে থেকেই সেলিম আহমেদের কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল। গত বৃহস্পতিবারে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে দ্রুত রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পরে সেলিম অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন তাঁকে সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে থাকে। চিকিৎসকেরা জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত সেখানেই ছিলেন সেলিম।

অভিনয়জীবনে তিনি একক, ধারাবাহিক ও বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন।
ছবি:সংগৃহীত

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আজাদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, সেলিম আহমেদ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর ফুসফুসেও পানি জমে গিয়েছিল। শেষ দিকে কিডনি অকেজো হয়ে পড়ে। আজাদ আবুল কালাম বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে তাঁর হার্টে রিং পরানো হয়েছিল। তারপর থেকে তিনি ভালোই ছিলেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষের দিকে তাঁর অক্সিজেনও কমে গিয়েছিল। সবকিছু মিলিয়ে তার শারীরিক অবস্থা একসময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

অভিনেতা সেলিম আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ১০ বছর আগে সেলিম আহমেদ অভিনয় শুরু করেন। তাঁর অভিনীত প্রথম নাটক ছিল জয়িতা। এরপর তিনি গোলাম মুক্তাদির পরিচালিত লোটাকম্বল ধারাবাহিকে অভিনয় করেন। অভিনয়জীবনে তিনি একক, ধারাবাহিক ও বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন। সম্প্রতি চিরঞ্জীব মুজিব ছবির শিল্পনির্দেশক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। ছবিতে একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন সেলিম। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে তাঁর লেখা রানার নামে একটি নাটক টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। এটি পরিচালনা করেছেন গোলাম সোহরাব দোদুল।
সেলিম আহমেদের জন্ম রংপুর জেলায়। তিনি সপরিবার মগবাজারে নিজস্ব বাসায় থাকতেন। লেখাপড়া করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে। আশির দশক থেকে প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন সেলিম। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলেসহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছেলে জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি নিয়ে লেখাপড়া করছে। ছোট ছেলে ঢাকায় এ লেভেলে পড়ে।