অভিনয় ও সংসার দুটোই একহাতে চালাতেন শর্মিলী আহমেদ

শর্মিলী আহমেদ।
সংগৃহীত।

অভিনয়ে ব্যস্ত থাকলে অনেক সময়ই পরিবারে সময় দিতে পারেন না অভিনয়শিল্পীরা। কিন্তু শর্মিলী আহমেদ একেবারে আলাদা। অভিনয় ও সংসার দুটোই সামলেছেন তিনি। সংসারে কী রান্না হবে, কে কী খাবেন—এসব বুঝিয়ে দিয়েই প্রতিদিন ছুটতেন শুটিং সেটে। তাঁর কাছে পরিবার আগে গুরুত্বপূর্ণ, তারপরে কাজ। এ কারণে পরিবারের সদস্যরা সব সময়ই শর্মিলী আহমেদকে অভিনয়ে সহযোগিতা করেছেন। ছোট পর্দায় তাঁকে বেশির ভাগ সময় মায়ের চরিত্রে দেখা গেছে। আর বাস্তবেও মায়ের মতোই আগলে রেখেছেন পুরো পরিবারকে।

অভিনেত্রী ও মা—দুই জায়গাতেই সফল শর্মিলী আহমেদ। শুটিংয়ে যেমন তিনি সময় দিয়েছেন, তেমনি পরিবারের প্রতিটি কাজের দিকে খেয়াল রেখেছেন। প্রথম দিকে পরিবারের প্রতি দায়িত্ব কম থাকলেও মা হওয়ার পরে দায়িত্ব বেড়ে যায়। সে সময় অবশ্য অভিনয় কমিয়ে দেন। সিনেমা ও নাটকের বেশির ভাগ শুটিং তিনি ঢাকার মধ্যেই করতেন। যেন সন্তানদের সময় দিতে পারেন। সন্তানদের মানুষ করতে অভিনয়টা একটু কমিয়ে দিয়েছিলেন।

শর্মিলী আহমেদ
সংগৃহীত

এরপর মেয়ে যখন বড় হয়, তখন আবার অভিনয় বাড়িয়ে দেন। তত দিনে মেয়েও বুঝতে পেরেছেন, মাকে শুটিংয়ে যেতে হয়। মা ও মেয়ের মধ্যে একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়ে যায়। পরে শর্মিলী আহমেদকে শুটিং করতে উৎসাহ দিতেন মেয়ে। তাঁর মেয়ে তনিমা আহমেদও অভিনয়শিল্পী। শর্মিলী আহমেদ বলেন, ‘মেয়ের জন্মের পরে মা হিসেবে সব সময় তাঁকে সময় দিয়েছি। মানুষ করেছি। মা হিসেবে কতটা পেরেছি, জানি না। আমাকে নিয়ে মেয়ের কোনো অভিযোগ আছে কি না, আমি জানি না। থাকলে সে বলত। কারণ, আমাদের সম্পর্কটা এমনই। এটুকু বলতে পারি, ব্যস্ততার জন্য মেয়েকে কম সময় দিইনি। একজন মা হয়েই সংসার করে গেছি।’

‘মেয়ের জন্মের পরে মা হিসেবে সব সময় তাঁকে সময় দিয়েছি। মানুষ করেছি। মা হিসেবে কতটা পেরেছি, জানি না। আমাকে নিয়ে মেয়ের কোনো অভিযোগ আছে কি না, আমি জানি না। থাকলে সে বলত। কারণ, আমাদের সম্পর্কটা এমনই। এটুকু বলতে পারি, ব্যস্ততার জন্য মেয়েকে কম সময় দিইনি। একজন মা হয়েই সংসার করে গেছি।’
শর্মিলী আহমেদ, অভিনেত্রী

মেয়েকে সুশিক্ষায় বড় করতে হবে, এই চিন্তা সব সময়ই ছিল শর্মিলী আহমেদের। তাই শুটিংয়ে কখনো ঢাকার বাইরে যাননি। দূরে শুটিংয়ে গেলে যত রাতই হোক, বাসায় ফিরে আসতেন। যদি কখনো এমন হতো, তিনি ফিরতে পারবেন না, তাহলে বোনকে বাসায় এনে রাখতেন মেয়েকে দেখাশোনার জন্য। তিনি বলেন, ‘পরিবার, মেয়ে—সবার কথা চিন্তা করে কাজ কম করেছি। শুটিং শেষে বাসায় ফিরেই মা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।’

গতকাল ছিল এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। মেয়ে, নাতনি ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি দিনটি কাটিয়েছেন। করোনার কারণে তেমন কোনো আয়োজন ছিল না। তিনি জানান, এখনো প্রতিদিন অনেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক প্রিয়জন দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। এর মধ্যে জন্মদিন উদযাপনে তিনি আগ্রহী নন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একটি অতৃপ্তি আছে তাঁর। পছন্দের ভালো চরিত্রে এখনো অভিনয় করা হয়ে ওঠেনি। তিনি বলেন, ‘আরও অনেক বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করতে পারতাম। অভিনয় নিয়ে একটা অতৃপ্তি আছে। তবে সংসার নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই।’
আপাতত করোনার কারণে তিনি শুটিংয়ে অশংগ্রহণ করছেন না। পরিস্থিতি বুঝে তিনি শুটিংয়ে নামতে চান।

শর্মিলী আহমেদ।
ফেসবুক থেকে নেওয়া।