আত্মহত্যা করেছেন জাপানের জনপ্রিয় তারকা

তাকেউচি ইউকো
ইনস্টাগ্রাম

জাপানের বিনোদন জগতের শিল্পীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন শিল্পী আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল রোববার সেই তালিকায় যোগ হয়েছে আরেকটি নাম, তাকেউচি ইউকো। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪০ বছর।

বিবিসি জানিয়েছে, রোববার রাত দুইটায় টোকিওর শিবুইয়া ওয়ার্ডে নিজ বাসা থেকে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। টোকিও পুলিশ বলছে, পরিস্থিতির বিশ্লেষণে তাদের ধারণা, তাকেউচি ইউকো আত্মহত্যা করেছেন। জাপানের জনপ্রিয় এই শিল্পী অনেক সিনেমা ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন। ১৯৯৯ সালে জাপানের রাষ্ট্রয়ত্ত টিভি চ্যানেল এনএইচকেতে শুরু হওয়া একটি ধারাবাহিকে কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। এ ছাড়া ২০১৬ সালে প্রচারিত এনএইচকের একটি ঐতিহাসিক নাটকেও তিনি অভিনয় করেছিলেন।

তাকেউচি ইউকো
ইনস্টাগ্রাম

ইউকোর মৃত্যু আবারও প্রশ্ন তুলেছে দেশটির আত্মহত্যা নিয়ে। বিবিসি জানায়, গত কয়েক মাসে জাপানে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকজন অভিনেতা এবং রিয়েলিটি শোর তারকা আত্মহত্যা করেছেন। চলতি মাসের শুরুতেই আত্মহত্যা করেন আসিনা নামের এক অভিনেত্রী। গত জুলাই মাসে আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা হারুমা মিউরা। তিনি ছিলেন বেশ জনপ্রিয় এবং সুপরিচিত। জাপান টাইমস সূত্র জানিয়েছে, টোকিওতে নিজ বাসায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৩০ বছর বয়সী মিউরাকে। তাঁর বাড়ি থেকে সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়। ‘ব্লাডি মনডে’, ‘লাস্ট সিন্ডেরেলা’, ‘গোকুসেন’-এর মতো একাধিক হিট টিভি সিরিজে অভিনয় করেছিলেন হারুমা। খুব অল্প বয়সেই অভিনয়জীবন শুরু হয় মিউরার। মাত্র সাত বছর বয়সে ‘আগরি’ ড্রামায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এরপর ‘কোইজোরা’ (২০০৭) , ‘কিমি নি তোদকে’–এর (২০১০) মতো হিট ছবিতে দেখা গেছে তাঁকে। ২০১৫ সালে ফাইটার পাইলটের বাস্তব কাহিনিনির্ভর ছবি ‘দ্য ইটারনাল জিরো’তে অভিনয় করে পুরস্কার পান তিনি।

তাকেউচি ইউকো
সংগৃহীত

এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাপানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ জন মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশে আত্মহত্যার হার এত ব্যাপক নয়। আর্থসামাজিক এবং ঐতিহাসিক কারণে জাপানে মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। লজ্জা বা অসম্মান ঢাকার উপায় হিসেবে অনেক দিন ধরে জাপানিরা আত্মহত্যার ভুল পথ বেছে নেন। এমনও মনে করা হয়, দেশটির মানুষের রয়েছে মানসিক ভারসাম্যহীনতা এবং একাকিত্ব। যা তাঁদের আত্মহত্যার পথে তাড়িত করে।

২০০৭ সালে জাপান সরকার আত্মহত্যা প্রতিরোধ কর্মসূচি হাতে নেয়। ২০১৬ সালে এই কর্মসূচির সঙ্গে যোগ হয় আরও নতুন সব কর্মসূচি। কারখানাগুলোতে কর্মচারীরা কী পরিমাণ কাজের চাপে রয়েছেন, প্রতিবছর সেটা যাচাই করা বাধ্যতামূলক বলেও ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার।