আমি নিজেও প্রতারিত হয়েছি: মিথিলা

মামলা হয়েছে, জানতেনই না মিথিলাছবি: ফেসবুক থেকে
‘ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এক গ্রাহকের করা প্রতারণার মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হলে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন অভিনয়শিল্পী তাহসান রহমান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়া।’ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানালেন মিথিলা

প্রশ্ন :

আপনার নামে মামলা হয়েছে জানতেন?

শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে দেখলাম, নয়জনের নামে মামলা হয়েছে। সেই তালিকায় মিডিয়ার রয়েছি আমি, তাহসান ও শবনম ফারিয়া। বেশ কয়েকজন কাছের মানুষ ও সাংবাদিকের ফোন পেয়েছি। তাঁদের কাছ থেকেই বিস্তারিত জানলাম।

প্রশ্ন :

আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

খুবই কষ্ট পেয়েছি। আমি জীবনে অনেক কোম্পানির ব্র্যান্ড এনডোর্স করেছি। কখনো এমন ঘটনার মুখোমুখি হইনি। শিল্পী বা মডেলরা কোনো ব্র্যান্ড এনডোর্সের সময় কোম্পানির ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্ট দেখে না। কিন্তু এটি তো ঠিক যে ইভ্যালি একটি বড় ব্র্যান্ড হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সংস্থাকে বিভিন্ন জায়গায় প্রোমোট করেছে। আমাদের সঙ্গে চুক্তি করা হয় কতটি বিজ্ঞাপন, কতটি ফটোশুট করা হবে, সেসবের ওপর ভিত্তি করে। আমরা শিল্পী, আমাদের ওপর মানুষের আস্থা আছে, মানুষ ফলো করেন। ব্র্যান্ডের নাম ছড়ানোর জন্য আমাদের যুক্ত করা হয়। এর আগে অনেক বড় বড় ব্র্যান্ড এনডোর্স করেছি, এখনো ব্র্যান্ড এনডোর্স করে যাচ্ছি। এসব কোম্পানির যদি কোনো ফাইন্যান্সিয়াল ইস্যু থাকে বা কোম্পানির কোনো ফল্ট থাকে, সে জন্য তো আর্টিস্টকে দায়ী করা যায় না। এসব বলে বোঝানো কঠিন।

মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে মিথিলা
ফাইল ছবি

প্রশ্ন :

মামলার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

আমি মানুষের ফোন বা পত্রিকা মারফত জেনেছি যে আমার নামে মামলা হয়েছে। মামলা হলে তো লিগ্যাল নোটিশ পাঠাবে। সেই নোটিশ তো এখনো পাইনি। এ জন্য কীভাবে বিষয়টি দেখছি, এখন বলতে পারছি না।

বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যদূত হিসেবে যুক্ত ছিলেন মিথিলা
ইনস্টাগ্রাম থেকে

প্রশ্ন :

ইভ্যালির সঙ্গে কত দিনের এনডোর্সমেন্ট ছিল আপনার?

এক বছরের চুক্তি ছিল। কিন্তু ছিলাম এক মাস। চলতি বছরের মে মাসে চুক্তি হয়, জুন মাস থেকে কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কথা শুনতে পাচ্ছিলাম। তখন সরে এসেছি।

প্রশ্ন :

বাদীর বক্তব্য, আপনাদের কারণেও তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। আপনি কী বলেন?

মামলাটা কী বিষয়ে হয়েছে আমি এখনো পরিষ্কার জানি না। কারণ, এখনো লিগ্যাল নোটিশ পাইনি। আমি ইভ্যালিতে যুক্ত হয়ে মাত্র একটি ক্যাম্পেইন করেছি। যখন দেখলাম এসব কনট্রোভার্সি, তখন সরে এসেছি।

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা

প্রশ্ন :

কী পদক্ষেপ নেবেন?

নোটিশ দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারব যে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ, এর আগে জীবনেও এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হইনি। এবারই প্রথম। খুবই হতাশ আমি।

প্রশ্ন :

কী ধরনের শঙ্কা হচ্ছে? কী হতে পারে?

সকালে ঘুম থেকে উঠে বিষয়টি দেখে আমি অবাক হয়েছি। দুঃখ পেয়েছি। আমি বুঝতে পারছি না আমার ভয় পাওয়া বা শঙ্কিত হওয়া উচিত কি না। কারণ, আমি একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না।

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা কাজ করেন একটি উন্নয়ন সংস্থায়
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। এত দিনেও কানে আসেনি খবরটি?

না, আজই জানলাম। যতটুকু জানি, মামলা হলে লিগ্যাল নোটিশ আসে। এখনো নোটিশ আসেনি। এমনকি প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেল, কেউ বলেনি ঘটনাটা। তাহলে মানুষ জানবে কীভাবে যে তার নামে মামলা হয়েছে? আমি আসলে বুঝতে পারছি না কী বলব, কী করব।

প্রশ্ন :

ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রতারিত হয়ে মামলা করেছেন।

ভুক্তভোগী কিন্তু আমরাও। এই যে আমার প্রফেশনাল একটি ঝামেলা হলো, আমি তো একজন পাবলিক ফিগার। সবাই জানেন আমরা কেমন। এই মামলার কারণে আমার পেশা, আমার সম্মানের জায়গায় খুঁত তৈরি হলো। তবে শুধু এই মামলা নয়, ইভ্যালির পুরো ঘটনাটাই আমাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগতভাবে সম্মানহানি করেছে। এ কারণে আমি মনে করি, আমি নিজেও প্রতারিত হয়েছি।

‘মায়া’ ছবিতে এই রূপে দেখা যাবে মিথিলাকে
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

আপনার প্রতারিত হওয়ার ব্যাপারটা কেমন?

আমরা তো এখান থেকে কোনো বেনিফিট পাইনি। বরং আমাদের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছে। তারা মনে করছেন যে প্রতারিত হয়ে আমাদের দোষী করা যায়, কিন্তু সম্মানের দিক থেকে আমরাও প্রতারিত হলাম। ইভ্যালিতে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে, সেটা আমরাও জানতাম না। কোম্পানির সমস্যার কারণে মামলার আগেই আমাদের আগে ক্ষতি হয়েছে। কারণ, যে কদিনই হোক, আমরা তো প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ছিলাম। এ কারণে মামলার বাদীর মতো আমরাও পেশাগত দিক থেকে অসম্মানিত ও প্রতারিত হয়েছি।

প্রশ্ন :

আপনার পরিবারের লোকজন জেনেছেন?

হ্যাঁ, এখন তো পরিবারের সবাই জানছেন। কারণ, অনেক অনলাইনে খবরটি ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। এখন পরিবারের সবাই বলছেন, দেখ, কী হয় অপেক্ষা করো। কারণ, এমন ঘটনার জন্য আমি বা আমার পরিবার প্রস্তুত ছিলাম না।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন