ওই হাসি দেখার পর আর রাগ থাকত না, পানি হয়ে যেত

৭৬তম জন্মদিনে মানুষ ও শিল্পী আসাদুজ্জামান নূরের মূল্যায়ন করলেন তাঁর অনেক দিনের সহশিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা।

নূর ভাইয়ের সঙ্গে টেলিভিশনজীবনের কথা মনে হলেই প্রথমেই একটা কথা মাথায় আসে, কোনোদিনই তিনি রিহার্সেলে সময়মতো আসতেন না। অনেক ব্যস্ততার মধ্যে অভিনয় করতেন। দেরির জন্য যতই বিরক্ত আর রাগ করতাম না কেন, তিনি অদ্ভুত একটা হাসি দিতেন। বলতেন, আর বলিসসসস না।

কোথাও কেউ নেই নাটকে আসাদুজ্জামান নূর ও সুবর্ণা

ওই হাসি দেখার পর আর রাগ থাকত না, পানি হয়ে যেত। এখনো তাই। আরেকটা মজার ঘটনা হচ্ছে, রেকর্ডিংয়ের আগের দিন বলে দিতেন, ‘কালকে আসার সময় বাসা থেকে সবচেয়ে পাতলা স্যান্ডেলটা পরে আসবি।’ কারণ, আমি লম্বা। হিল পরলে তাঁকে...

আসাদুজ্জামান নূর

নূর ভাইয়ের অভিনয়ে সহজাত একটা ব্যাপার আছে, খুব আপাতসহজ, যেটা মানুষ পছন্দ করে। তাঁর অভিনয়ের এই সহজাত ধারাটা সবাই পছন্দ করতেন। হ‌ুমায়ূন আহমেদ তো সেই ‘এইসব দিনরাত্রি’ থেকে ‘অয়োময়’ পর্যন্ত চরিত্রগুলো নূর ভাইয়ের জন্যই তৈরি করেছেন। ‘কোথাও কেউ নেই’-এর বাকের একটা চ্যালেঞ্জিং চরিত্র। একই সময়ে ‘অয়োময়’র মির্জা আউট অব দ্য ওয়ে একটা চরিত্র।

সুবর্ণা মুস্তাফা
ফাইল ছবি

মঞ্চে আবার নূর ভাইকে অন্যভাবে দেখি আমরা। ‘গ্যালিলিও’তে তিনি অন্যভাবে এসেছেন। চরিত্রকে তিনি নিজের মধ্যে ধারণ করে তাঁর নিজের মতো করে ইন্টারপ্রিটেশন করতেন, যেটা বেশির ভাগ মানুষ পছন্দ করে। মঞ্চে অবশ্য আমি ও নূর ভাই কখনোই একসঙ্গে কাজ করিনি।
মানুষ আসাদুজ্জামান নূর বরাবরই সদালাপী। দায়িত্বের মধ্যে যা যা পড়ে সবই করেন। ভীষণ বন্ধুবৎসল। পরিবার ও বন্ধুদের ব্যাপারে তিনি খুব যত্নশীল।

আসাদুজ্জামান নূর
প্রথম আলো

নূর ভাইয়ের লেখার হাত খুব ভালো। অ্যাডাপ্টেশন (রূপান্তর) খুব ভালো করেন। নাট্যরূপও খুব ভালো দেন। এই কাজগুলো আরও বেশি করা দরকার বলে আমি মনে করি। এই কাজটা তিনি এক্সপ্লোর করতে পারেন। খুবই ভালো অনুবাদ করতে পারেন—এ দিকটায় তিনি যেন আরও বেশি মনোযোগী হোন, এটাই আশাবাদ রইল। আমার প্রত্যাশা, নূর ভাই অনেক দিন সুস্থভাবে থাকুন। দীর্ঘায়ু কামনা করি।