দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে কার মিল খুঁজে পান ফারুক আহমেদ

ফারুক আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত

কিছু মানুষ দিনের পর দিন অবৈধ উপায়ে অর্থ আয় করছে। জনগণের অর্থ দিয়ে তারা ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় গড়ছে। সেই অর্থ দিয়ে কেউ কেউ বিদেশে বাড়ি–গাড়ি করছে। নির্লজ্জের মতো আনন্দে দিন কাটাচ্ছে। লজ্জা পাওয়া দূরের কথা, তারা সিনা টান টান করে দেশের মাটিতে হাঁটছে। দেশের নাগরিক হিসেবে ঘটনাগুলো ব্যথিত করে অভিনয়শিল্পী ফারুক আহমেদকে। তিনি মনে করেন, এই শ্রেণির লোকেরা ‘বেহায়া’।

সম্প্রতি এসব মানুষকে ধিক্কার জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন ফারুক আহমেদ। তিনি মনে করেন, আশির দশক থেকে এখন পর্যন্ত অনেক দুর্নীতিবাজ দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন পন্থায় চুরি করেছে, সেটা এখনো চলমান। তারা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। নিজেদের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য লজ্জা পাওয়া তো দূরের কথা, তারা বারবার একই কাজ করে যাচ্ছে। তাদের চোখেমুখে লজ্জার লেশমাত্র নেই। ফেসবুক পোস্টে ফারুক লিখেছেন, ‘দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা একটা অপরাধ। সেই কাজটা কিছু মানুষ দিনের পর দিন করে যাচ্ছে। এটা দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা। আমরা রাস্তার পকেটমারকে কাছে পেলে পেটাই, কিন্তু কোটি কোটি টাকা লোন নিয়ে অনেকেই পরিশোধ করছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও অনিয়ম হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে কথা বলতে পারি না।’

ফারুক আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত

ফারুক আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সত্তর দশকের কথা। আমাদের গ্রামে বাস করত এক চোর। সকলে তাকে ডাকত “কাইলা চোরা” নামে। কাইলা চোরা ছিল খুবই লাজুক প্রকৃতির। পেটের দায়ে সে চুরি করত। জরুরি কাজে বাড়ি থেকে বের হতো। কেউ যদি জিজ্ঞেস করত “কোথায় যাস”, সে লজ্জায় মাথা নিচু করে অত্যন্ত ক্ষীণ স্বরে বলত, “বাজারে, চাইল কিনতে।” সারা রাত চুরি করে কাইলা চোরা মহাজনের কাছে সেসব বিক্রি করে ১০ টাকা পেত। এই অর্থের বর্তমান বাজারমূল্য তিন হাজার টাকার বেশি না। অথচ আমার ধারণা, বর্তমান সময়ে একেকজন চোরের আয় দিনে দুই–তিন লাখ টাকা। রাঘববোয়াল সেসব চোরের আয় দিনে ৫০–৬০ লাখ টাকাও আছে।’

অভিনেতা ফারুক আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত

দেশে সব সময়ই দুর্নীতি হতো। কিন্তু বর্তমানে গণমাধ্যমে সেসব তথ্য বেশি প্রকাশ পাচ্ছে বলে মনে করেন ফারুক আহমেদ। তাঁর দাবি, কিছু মানুষের বিচার হলেও অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা উন্নয়নকে ব্যাহত করছে। দেশের মানুষের স্বার্থে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা দরকার। কালু চোরা এবং এই রাঘববোয়াল সবাই খারাপ। তিনি লিখেছেন, ‘শুনি এমন চোরও আছে, যারা বছরে ১০–১২ হাজার কোটি টাকাও অবৈধ উপায়ে উপার্জন করে। এককথায় যা চুরি। আবার এমন চোরও নাকি আছে, যারা হাজার হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। আনন্দ–ফুর্তিতে দিন কাটাচ্ছে। সত্তর দশকে কাইলা চোরা এক রাতে ১০ টাকা চুরি করে গ্রামের মানুষকে মুখ দেখাতে লজ্জা পেত। অথচ আশির দশক থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অনেক চোর হাজার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন পন্থায় চুরি করেছে এবং করছে। লজ্জা পাওয়া তো দূরের কথা, তারা সিনা টান টান করে হাঁটছে। তাদের চোখেমুখে লজ্জা নেই। তারা নির্লজ্জ চোর। তারা বেহায়া চোর।’

ফারুক আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত

এই অভিনেতা বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাওয়ার বড় বাধা অসৎ মানুষ। পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রায়ই দেখি ও শুনি, এদের কারণে অনেক সৎ মানুষ কথা বলতে পারে না। আমি মনে করি, আমাদের সমাজে অনেক ভালো মানুষ আছে। যারা দেশের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। সৎভাবে জীবনযাপন করছে। কিছু অসৎ মানুষের কারণে সৎ মানুষেরা কোণঠাসা। সবার উচিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। তাহলে আমার একটা ভালো সমাজ পাব।’

ঈদের তিন দিন পর থেকেই অভিনয়ে ফিরেছেন ফারুক আহমেদ। বর্তমান একাধিক ধারাবাহিক নাটক নিয়ে তাঁর ব্যস্ততা। আগামী মাস থেকে তিনি শুরু করবেন ঈদুল আজহার নাটকের শুটিং।

অভিনেতা ফারুক আহমেদ
সংগৃহীত