কাদা-ছোড়াছুড়ি রুখতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও ফেসবুক পেজ বন্ধ

আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়
ছবি:সংগৃহীত

নিজেদের মধ্যে কাদা-ছোড়াছুড়ি বন্ধ করতে নির্বাচনের ৪০ দিন আগে বন্ধ করা হলো ডিরেক্টরস গিল্ডের ফেসবুক পেজ ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। গতকাল তফসিল ঘোষণার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই গ্রুপে বিভিন্ন সময় নির্মাতাদের পোস্ট ও মন্তব্যকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য হতো। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে।

গতকাল ১৭ জানুয়ারি সংগঠনটির তফসিল ঘোষণার সময় নির্বাচন কমিশন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও ফেসবুক পেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রায়ই সংগঠনের এই পেজে পোস্ট কিংবা মতামতকে কেন্দ্র করে নির্মাতাদের মধ্যে শুরু হয় একে অন্যকে খাটো করার প্রবণতা। এতে নিজেদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির ব্যাপার তৈরি হয়। নির্মাতাদের নিজেদের মধ্যে নির্বাচনকেন্দ্রিক পরিবেশ তৈরি করতে এই সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস এম মহসীন। তিনি বলেন, ‘পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেক সময়েই দেখা যায় এখানে একে অন্যকে বিদ্রূপ করে কথা বলেন। কেউ কেউ পরিবেশ জটিল করার চেষ্টা করেন। একটি সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু এবং সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক। ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন, যেগুলো সুরাহা করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা ডিরেক্টরস গিল্ডের কার্যনির্বাহী সদস্যদের। অনেক সময় তাঁদের কাছ থেকে অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণ পেলে নির্মাতারা নানা ধরনের পোস্ট দিয়ে থাকেন, যা সংগঠনের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক জানান, অনেক সময় গ্রুপে নির্মাতারা নিজেদের মতামত দেন। এগুলো বেশির ভাগ গঠনমূলক হলেও মাঝেমধ্যেই মতের অমিল হয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের এই সময়ে কোনো সদস্য চাইলে কোনো প্রার্থীর পক্ষে ফেসবুকে কিছু লিখতে পারেন কিন্তু বিপক্ষে কিছু লেখা যাবে না। কেউ হেয় হয়, এমন কোনো পোস্ট দেওয়া যাবে না। আমরা চাই এই কাদা-ছোড়াছুড়ি সাধারণ মানুষ না জানুক। আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে শাস্তির পদক্ষেপ আছে।’

ডিরেক্টরস গিল্ডের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা
ছবি:সংগৃহীত

তফসিলে বলা হয়েছে, কোনো সদস্যের চার বছর সদস্যপদ স্থায়ী হলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। নির্বাচনের আগে প্রতিটি সদস্যের বকেয়া ফি পরিশোধ করতে হবে। ২১ জন প্রার্থীর বিপরীতে গতকাল মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। গত নির্বাচনে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন ফরম ফি ১০ হাজার টাকা ছিল। এবার আরও ১০ হাজার টাকা বেড়ে ২০ হাজার টাকা হয়েছে। এ ছাড়া সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ৯টি পদে ৭ হাজার টাকার মনোনয়ন ফরম ফি ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। সদস্যপদের জন্য গুনতে হবে ১০ হাজার টাকা। এটিও আগের চেয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে।
৯ জানুয়ারি ডিরেক্টরস গিল্ডের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় একটি নির্বাচন কমিশন ও আপিল বিভাগ গঠন করা হয়েছে। ২০২১-২৩ নির্বাচনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে থাকবেন অভিনেতা এবং নাট্যব্যক্তিত্ব এস এম মহসীন। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে অনন্ত হিরা ও ঝুনা চৌধুরীর দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও তাঁরা ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাঁদের জায়গায় দায়িত্ব পালন করবেন নরেশ ভূঁইয়া ও মাসুম রেজা। আপিল বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন সৈয়দ হাসান ইমাম, আবুল হায়াত ও মামুনুর রশীদ।