‘কিছু কাজ না করলেও পারতাম’

মোশাররফ করিম
ছবি : সংগৃহীত

শৈশবেই অভিনয়ের প্রেমে পড়েছিলেন মোশাররফ করিম। কখনো আকাশ ছোঁয়া খ্যাতি পাবেন ভাবেননি। শুধু অভিনয়টা করতে চেয়েছেন। এই যাত্রাটা ৯০ দশকের শুরুতে। তখন যে শক্তি দিয়ে একটি চরিত্রে প্রবেশ করতেন, এখনো সেই একই শক্তি, স্পৃহা তাঁর মধ্যে রয়েছে। চিত্রনাট্য হাতে এলেই ভাবনায় ডুবে যান। তখন যেন অন্য এক মানুষ হয়ে যান মোশাররফ। নির্মাতা যখন লাইট–ক্যামেরা প্রস্তুত করে দাঁড়িয়ে আছেন, তখন মোশাররফ করিম গল্পে যোগ করেন ভিন্ন কোনো মাত্রা। আরও বেশি জীবন্ত হয়ে ওঠে চরিত্র। এ অভিনেতার আজ জন্মদিন।

লেখকের মৃত্যু নাটকে মোশাররফ করিম
ইনস্টাগ্রাম

এমনও হয়েছে, মাসের পর মাস বিরতি না দিয়ে টানা শুটিং করেছেন। একটা সময় বেশির ভাগ গিলতে হয়েছে অনুরোধে। তখন কিছু কাজে তাঁকে ছাড় দিতে হয়। এই জন্য অনেক গড়পড়তা চিত্রনাট্য নিজেই হাতে তুলে নিয়েছেন। সেটাকে নিজের মতো করে যতটা পারেন সংশোধন করেছেন। এখানেই তিনি অনন্য। তারপরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দিয়ে শুটিং করতে হয়েছে তাঁকে। শুটিং শেষে গভীর রাতে বাসায় ফেরা ছিল তাঁর নিত্য অভ্যাস। শুরু থেকেই কাজে ছাড় দেওয়ার কথা কখনোই ভাবেননি। মোশাররফ করিম বলেন, ‘পেছনে তাকালে মনে হয়, কিছু কাজ না করলেও পারতাম। কিছু তৃপ্তি দিয়েছে, কিছু দেয়নি। তবে কাজ করে শান্তি পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জোর করে সৃষ্টিশীল কাজ হয় না। আমি ভবিষ্যৎ কাজ নিয়েই ভাবতে চাই।’

অনেক সময় কাজের ব্যস্ততায় পরিবারকে সময় দিতে পারেননি। এই নিয়ে পরিবারের কারও কোনো অভিযোগ বা অনুযোগ নেই। এটি মোশাররফ করিমের স্ত্রী রোবেনা রেজার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখেই বোঝা যায়। রোবেনা লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন বটবৃক্ষ। আরও ডালপালা মেলে আরও ছায়া দিয়ে আমাদের আগলে রাখো।’

‘যমজ’ নাটকে মোশাররফ করিম
ছবি: সংগৃহীত

জন্মদিন নিয়ে কখনো কি কোনো পরিকল্পনা থাকে? ‘না জন্মদিন নিয়ে আমার তেমন কোনো আগ্রহ থাকে না,’ বলেন মোশাররফ করিম। তবে বিশেষ এই দিনটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে ভালো লাগে। এবার পরিবারের সঙ্গে কেমন সময় কাটছে জানতে চাইলে মোশাররফ করিম বলেন, ‘পরিবার নিয়ে সিলেটের দিকে ঘুরতে এসেছি। আমার স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ অনেকেই আছেন। এখানে দু–এক দিন থাকার পরিকল্পনা আছে। এরপরে আবার ঢাকা ফিরতে হবে। আবার শুটিং শুরু হবে।’

মোশাররফ করিম ও স্ত্রী রোবেনা রেজা জুঁই
ছবি: সংগৃহীত

তারিক আনাম খানের হাত ধরে অভিনয় শুরু করেছিলেন মোশাররফ করিম। এরপরে কেটে গেছে প্রায় তিন দশক। টানা ১২ বছর মঞ্চে অভিনয় করার পরে নাম লেখান বিজ্ঞাপন, নাটক ও চলচ্চিত্রে। টেলিভিশনের জনপ্রিয় এই অভিনেতা এখন ওটিটিসহ সব মাধ্যমে সমানতালে অভিনয় করছেন। এ অভিনেতার কাছে শেষ প্রশ্ন, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সেরা অর্জন কী? মোশাররফ বলেন, ‘দর্শকদের ভালোবাসা আমার জীবনের সেরা উপহার। এখনো কাজের জন্য দর্শক যেভাবে ভালোবাসেন, সেটা মাঝেমধ্যে আমাকে আবেগপ্রবণ করে। এই ভালোবাসার চেয়ে একজন অভিনেতা আর চাওয়ার কিছু নেই। এই ভালোবাসার মধ্য দিয়েই আমি বেঁচে থাকতে চাই।’