চ্যানেলের হাতে নেই টিভি নাটক

সামনে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। খেলাপ্রেমী বেশির ভাগ টেলিভিশন দর্শকের নজর থাকবে সেদিকেই
সামনে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। খেলাপ্রেমী বেশির ভাগ টেলিভিশন দর্শকের নজর থাকবে সেদিকেই

টিভি চ্যানেল নয়, আসছে ঈদের বেশির ভাগ নাটক ও টেলিছবি নির্মিত হচ্ছে বিজ্ঞাপন এজেন্সির তত্ত্বাবধানে। এরই মধ্যে বেশির ভাগ টেলিভিশন চ্যানেলের চাংক কিনে নিয়েছে এজেন্সিগুলো। কদিন আগে বেশ কয়েকজন টেলিভিশন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য। সামনে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। খেলাপ্রেমী বেশির ভাগ টেলিভিশন দর্শকের নজর থাকবে সেদিকেই। এই সময়েই চলবে ঈদের অনুষ্ঠানমালাও। এ কারণে বেশির ভাগ টেলিভিশন চ্যানেল ব্যবসায়িক ঝুঁকির মধ্যে যেতে চাইছে না। ব্যবসায়িক দিক চিন্তা করে চ্যানেলগুলো এজেন্সির হাতেই দিচ্ছে ঈদের অনুষ্ঠানের বেশির ভাগ দায়িত্ব।

এই দিক থেকে এগিয়ে আছে প্রথম সারির বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি। চ্যানেলটির অনুষ্ঠানপ্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ বলেন, ‘আমাদের বাংলা ছবি এবং টেলিছবির চাংক ফাঁকা রয়েছে। বাকিগুলো এজেন্সির কাছে দিয়েছি।’

এনটিভির চাংক কিনে নিয়েছে বঙ্গ বিডি। তাদের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হবে এনটিভির ঈদ ধারাবাহিক ও একক নাটকগুলো। তবে মোস্তফা কামাল সৈয়দ বলেন, ‘এজেন্সি মূলত অর্থের অংশটুকু দেখভাল করবে। নাটকের গল্প, অভিনয়শিল্পী, পরিচালকসহ সবকিছুই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত করবে।’ এ সম্পর্কে বঙ্গ বিডির পরিচালক মুশফিক রহমান বলেন, ‘এবারই আমাদের প্রথম চাংক কেনার অভিজ্ঞতা। তাই পুরো ব্যাপারটি এখন পরিকল্পনাধীন। এক সপ্তাহের মধ্যেই সবকিছু চূড়ান্ত হবে। এ ছাড়া নাগরিক টিভির একটি চাংক লভ্যাংশ শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে নিয়েছি।’

এজেন্সি ও টেলিভিশন চ্যানেল মিলে নাটক-টেলিছবি নির্মাণের কথা থাকলেও বেশির ভাগ সময় উল্টোটাই ঘটে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক টেলিভিশন কর্মকর্তা এমনটাই বলেছেন। তিনি বলেন, অনেক সময় নিজেদের পছন্দমতো নাটক বানিয়ে একদম শেষ মুহূর্তে চ্যানেলের কাছে জমা দেন। এর ফলে প্রিভিউ বা সংশোধনের সুযোগ থাকে না। তাই এজেন্সি যে রকম দেয়, সেভাবেই প্রচার করতে হয়।

এ প্রসঙ্গে নাগরিক টিভির অনুষ্ঠানপ্রধান কামরুজ্জামান বাবু বলেন, ঈদ সামনে রেখে এজেন্সিগুলো তৎপর হয়ে ওঠে। এজেন্সিকে দায়িত্ব দিলে নিশ্চিত হওয়া যায়। তারা মূলত নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট চাংক কিনে নেয়। তারপর এজেন্সি একটা ব্র্যান্ডিং হিসেবে স্পনসর প্রতিষ্ঠান ও বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে নাটক প্রচার করে। এতে উভয় পক্ষই লাভবান হয়।

তবে অনেক চ্যানেল এজেন্সির সঙ্গে যুক্ত হলেও এটিএন বাংলা ঈদের অনুষ্ঠান প্রচার করছে ভিন্ন প্রক্রিয়ায়। তারা টেলিছবি ও নাটক প্রচার করবে ‘শেয়ারিং’ পদ্ধতিতে। এটিএন বাংলার উপদেষ্টা (অনুষ্ঠান) নওয়াজীশ আলী খান জানান, তাঁরা মূলত চুক্তি করছেন পরিচালকদের সঙ্গে। যাঁরা অনেক দিন ধরে এটিএন বাংলার সঙ্গে কাজ করেন, তাঁদের সঙ্গেই চূড়ান্ত করেছেন বেশির ভাগ নাটক। তিনি জানান, নাটকের ‘টাইটেল’ ও ‘পাওয়ারড বাই’ ক্যাটাগরি ছাড়া নাটকের ফাঁকে প্রচারিত বিজ্ঞাপনগুলো অর্ধেক-অর্ধেক শেয়ার করেন সংশ্লিষ্ট পরিচালক ও এটিএন বাংলা। এতে টেলিছবির ফাঁকে বিজ্ঞাপন প্রচারিত হবে ১৫-১৮ মিনিট এবং নাটকের মধ্যে ১০-১২ মিনিট। তাঁরা কোনো এজেন্সির সঙ্গে যুক্ত হবেন কি না—এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখনই চূড়ান্ত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। আলোচনা চলছে।

জানা গেছে, ঈদ সামনে রেখে অনেক টিভি ব্যবসায়িক ঝুঁকিতে যেতে চাইছে না। তবে চ্যানেলের কর্মকর্তারা চাইছেন এজেন্সি দায়িত্ব নিলেও দর্শকদের কথা মাথায় রেখে সেরা অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে। তবে সেটা কতটুকু কার্যকর হবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ঈদ অবধি।