জামিন পেয়ে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না আসিফ

স্ত্রী শামীমা আক্তারের সঙ্গে আপসের শর্তে ‘ঘাসফুল’ ছবির নায়ক আসিফকে ২০ মে পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬-এর বিচারক শহীদুল ইসলাম। এই সময়ের মধ্যে আসিফকে স্ত্রীর সঙ্গে আপসের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে আসিফের জন্য স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী।
শামীমা আক্তারকে তালাক দেওয়ার বিষয়টি আদালতকে জানানো হয়। এ সময় আদালত বলেন, ‘এটা তালাকের নোটিশ মাত্র। তা প্রত্যাহারও করা যাবে।’
এরপর প্রথম আলোকে শামীমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের সংসারে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। সন্তানের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আসিফের সঙ্গে সংসার করতে চাই। কিন্তু আসিফ কিংবা তার পরিবার আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছে না। আমি নিজে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাইনি। তার ফোন বন্ধ। ফেসবুকও ডিঅ্যাক্টিভেট করে রেখেছে। মাঝেমধ্যে ইনস্টাগ্রামে যায়। তবে সব সময় থাকে না।’
শামীমা আক্তার আরও বলেন, ‘আমার মেয়ের টিকা বাকি। আসিফ বুঝতে পারছে, আমি বেশি দিন এখানে থাকতে পারব না। শিগগিরই আমাকে কানাডায় ফিরতে হবে। তাই সে সুযোগের অপেক্ষায় আছে।’
সম্প্রতি স্ত্রী শামীমা আক্তারকে তালাকের নোটিশ দিয়েছেন আসিফ। শামীমা আক্তার জানান, নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে আসিফ গত ২ এপ্রিল স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। আর তা পোস্ট করা হয়েছে ২৩ এপ্রিল। ওই দিন রাত ১২টা নাগাদ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে আসিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। মালয়েশিয়া থেকে নাটকের শুটিং শেষে দেশে ফিরছিলেন তিনি। পরদিন সকালে আদালত দুই পক্ষের শুনানি শেষে আসিফকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ২৫ এপ্রিল স্ত্রীকে আর নির্যাতন করবেন না এবং সন্তানের ভরণপোষণ করবেন—এই শর্তে তাঁকে জামিন দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক শফিউল আজম। তিনি আরও আদেশ দেন, যদি আসিফ আগের মতো স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে অন্যায় করেন, তবে আবারও তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানার জন্য আসিফের ফোন নম্বরে কয়েকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সম্প্রতি মডেল ও অভিনয়শিল্পী কাজী আসিফ রহমানের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী শামীমা আক্তার নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন। শামীমা আক্তার তখন বলেন, ‘আমি কানাডাপ্রবাসী। ১৭ বছর যাবৎ কানাডার টরন্টোতে আছি। ২০১৪ সালে ফেসবুকে আসিফের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। এরপর যখন আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই, তখন পরিবারকে জানাই। পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছে। ২০১৫ সালে ৭ আগস্ট আমাদের বিয়ে হয়।’
বিয়ের পর কানাডায় ফিরে যান শামীমা আক্তার। তিনি দাবি করেন, বিয়ের পর বিভিন্ন সময় আসিফ তাঁর কাছে টাকা দাবি করেন। মাঝেমধ্যেই স্বামীর দাবি পূরণ করেছেন তিনি। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ওই সময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। তখন টাকা দাবি করে আসিফ তাঁকে মারধর করেছেন। পরের বছর ৯ জানুয়ারি তিনি আবার কানাডায় ফিরে যান। সেখানে আট মাস আগে তাঁদের প্রথম সন্তান আজওয়া রহমানের জন্ম হয়। এবার গত ৩ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে দেশে এসেছেন শামীমা আক্তার। তখন বড় অঙ্কের টাকা চাওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তিক্ততা বাড়তে থাকে। দুই পরিবারের মুরব্বিদের ব্যাপারটি জানানো হয়। এ সময় স্ত্রীকে আবারও মারধর করেন আসিফ। একপর্যায়ে বাসা ছেড়ে চলে যান। শেষে গত ৬ মার্চ স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন শামীমা আক্তার। তিনি আসিফের বিরুদ্ধে অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখারও অভিযোগ করেন।
আসিফ এরই মধ্যে কয়েকটি বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। নিয়মিত ছোট পর্দায় কাজ করছেন। ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ‘ঘাসফুল’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হন তিনি।