নওগাঁয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তীর মায়ের দাফন

ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী ও তাঁর মা মাহমুদা সুলতানা
ফেসবুক

তিন বছর ধরে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা। মাস দেড়েক ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এ মাসের শুরুতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দুদিন আগে বাসায় নিয়ে আসা হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে আর বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হলো না। গতকাল সোমবার রাতে বগুড়ার বাসায় মারা যান একসময়ের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনয়শিল্পী ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তীর মা মাহমুদা সুলতানা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন শ্রাবন্তীর বোনের স্বামী ও পরিচালক সাইফুল ইসলাম মাননু।
সাইফুল ইসলাম জানান, নওগাঁর তিলকপুরে পারিবারিক কবরস্থানে শ্রাবন্তীর বাবার পাশেই সমাহিত করা হবে তাঁকে। মৃত্যুকালে মাহমুদা সুলতানা রেখে গেছে তিন মেয়ে ও দুই ছেলে এবং নাতি-নাতনিদের। বড় ছেলে বাহরাইন, ছোট ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। করোনার কারণে তাঁদের বাংলাদেশে আসা সম্ভব না। দেশে শ্রাবন্তী ও তাঁর বড় বোন এবং আত্মীয়স্বজন আছেন।

ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী।
প্রথম আলো

জানা গেছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শ্রাবন্তীর মাকে দুদিন আগে বগুড়ার বাসায় নিয়ে আসা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর শুনে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শ্রাবন্তী তাঁর বড় বোন আর সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসেন।
সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাস করছেন একসময়ের তারকা মডেল ও অভিনয়শিল্পী শ্রাবন্তী। অসুস্থ মায়ের পাশে থেকে তাঁর সেবা করবেন, এটাই তাঁর ইচ্ছা। মায়ের অসুস্থতার সময় পাশে থাকতে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় পৌঁছেই ছুটে যান বগুড়ায়। তখন প্রথম আলোকে শ্রাবন্তী বলেন, ‘বগুড়ার একটি হাসপাতালে আম্মার চিকিৎসা চলছে। তাঁর অবস্থা খুব একটা ভালো না। অনেক আগে থেকেই আম্মা ডায়াবেটিস ও লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন। এখন শরীরটা আরও বেশি খারাপ হয়ে গেছে। মায়ের এমন অবস্থা শুনে আর থাকতে পারিনি। মায়ের পাশে আছি, সেবা করছি—এটাই স্বস্তি।’

ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী।
প্রথম আলো।

প্রায় পাঁচ বছর হলো যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন শ্রাবন্তী। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কিছুদিন পরে শ্রাবন্তী কাজ নিয়েছিলেন ওয়ালমার্টে। এক বছর পর সেটা ছেড়ে দেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, আমেরিকায় কোনো কাজই ছোট না, তারপরও ওয়ালমার্টে কাজ করতে তাঁর ভালো লাগত না। সে কারণেই সেটা ছেড়ে মেডিকেল সহকারীর স্বল্পমেয়াদি একটি কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন। এই কাজের লাইসেন্স থাকলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া তাঁর জন্য সহজ হবে, এই ছিল তাঁর আশা। ইতিমধ্যে কোর্সটি সম্পন্ন করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে একসময় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন শ্রাবন্তী। অভিনয় দিয়ে জয় করেছিলেন দর্শকহৃদয়। আলোচনায় এসেছিলেন ‘জোছনার ফুল’ ধারাবাহিক নাটক দিয়ে। এ ছাড়াও ‘রং নাম্বার’ ও ‘ব্যাচেলর’ সিনেমায় অভিনয় করে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। গত পাঁচ বছরে দুবার বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। তাঁর বড় মেয়ে রাবিয়া আলম থার্ড গ্রেডে, ছোট মেয়ে আরিশা আলম কিন্ডারগার্টেনে পড়ে। দুই মেয়ের বাবা বাংলাদেশে থাকেন।

ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী।
প্রথম আলো